এই গল্প (mythological) সবাই জানে। আপনি, আমি, আমাদের গুরুজনরা সবাই। তবু মহালয়া এলে এই গল্প যেন আবার শুনতে ইচ্ছে হয়। তখন আমরা ছোট্টটি হয়ে যাই। ফিরে যাই আবার সেই শৈশবের দিনগুলোতে। তাই আজ আমরা আবার নিয়ে এসেছি দেবী দুর্গার (durga) জন্ম এবং তাঁর অসুরদলনী বা মহিষাসুরমর্দিনী (mahishasurmardini) হয়ে ওঠার সেই সনাতন এবং অবশ্যই চিরন্তন গল্প। কীভাবে জন্ম নিলেন দুর্গা, দেবতাদের তেজ থেকে মহামায়া কীভাবে হলেন এক যোদ্ধা, কী তাঁর ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা, হাতে এক কাপ চা নিয়ে সবাই মিলে জমিয়ে বসে পড়ুন তাহলে!
মার্কণ্ডেয় পুরাণ বলছে, এক মহা শক্তিশালী অসুরের কথা। যিনি বর পেয়েছিলেন যে কোনও পুরুষ তাঁকে হত্যা করতে পারবে না। তাঁর অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে উঠল দেবলোক। উপায় না দেখে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর এক সভা ডাকলেন। সেখানে বাকি দেবতাদের নিয়ে স্থির করা হল এই যে সব দেবতাদের সম্মিলিত তেজ দিয়ে তৈরি করা হবে এক নারীযোদ্ধাকে। যে কিনা বধ করবে এই অসুরকে।
এভাবে ব্রহ্মার তেজ থেকে পা, মহাদেবের তেজ থেকে মুখ, বিষ্ণুর তেজ থেকে বাহু ইত্যাদি। তিনি হলেন দশভুজা। আর এই দশটা হাত হল উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম, ঈশান, বায়ু, নৈঋত, অগ্নি, ঊর্ধ্ব ও অধ এই দশটি দিক সামলে রাখার জন্য। দেবীর সৃষ্টির পর তাঁর অনিন্দ্যসুন্দর রূপ দেখে বিস্মিত হলেন দেবতারা। তখন একে একে সবাই দেবীকে বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করে প্রস্তুত করলেন লড়াই করার জন্য। মহিষাসুরও কী আর যে সে অসুর! সে বিভিন্ন রূপ পাল্টে-পাল্টে আসতে লাগল দেবীর সামনে। শেষে মহিষের রূপ ধারণ করে এলে দেবী তাঁকে বধ করলেন। দেবলোকে আবার শান্তি ফিরে এল, বিনাশ হল অশুভ শক্তির।
তবে এসব নেহাতই পৌরাণিক ব্যাখ্যা। দেবী দুর্গার জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে ঐতিহাসিক আর প্রত্নতত্ত্ববিদদের মধ্যে নানা মতভেদ আছে। মধ্য প্রাচ্য ও ভূমধ্যসাগর অঞ্চলে এক সিংহবাহিনী দেবীর আরাধনা চালু ছিল। আশ্চর্যের বিষয় হল এই দেবীর আরাধনা করা হত বৃষ বা মহিষের রক্ত দিয়ে। আমাদের দেশে দুর্গা শব্দটি প্রথম পাওয়া যায় বৌধায়ন ও সাংখ্যায়নের সূত্রে। তবে একজন দশহাতের দেবী যিনি একা অসুরের বিরুদ্ধে লড়ছেন এরকম উল্লেখ খুব একটা পাওয়া যায়না। মহাভারতের ভীষ্ম পর্বে দেখা যায় সাফল্য পেতে অর্জুন দুর্গার স্তব করছেন। তবে দেবী দুর্গার মাহাত্ম্য অনেক বেশি বৃদ্ধি পায় যখন মার্কণ্ডেয় পুরাণ সেখানে মহিষাসুর বধের উল্লেখ করে।
যদিও মার্কণ্ডেয় পুরাণ বর্ণিত দেবী মাহাত্ম্যের অনেক আগেই পাওয়া গেছে দেবীর মূর্তি। যার মধ্যে সর্বাধিক প্রাচীন হল রাজস্থানের নাগর অঞ্চল থেকে পাওয়া চতুর্ভুজা দুর্গা। তবে সেই মূর্তির সঙ্গে অসুর, দেবীর বাহন ও সিংহ সবই বিদ্যমান। ঐতিহাসিকরা মনে করছেন পশ্চিমবঙ্গে দুর্গা পুজার রীতি গড়ে উঠেছে এখানে কৃষির সঙ্গে তাল মিলিয়ে। আশ্বিন ও কার্তিক মাসে আউশ ধানের চাষ হত। কৃষিজমি থেকে মহিষ তাড়িয়ে সেই জমি দখল করা হত। পঞ্চদশ শতকে কৃত্তিবাসের রামায়ণ, একজন যোদ্ধা রমণী, রামচন্দ্রের অকালবোধন এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নানা লোকগাথা সব একসঙ্গে মিশিয়ে জন্ম নিলেন আজকের দেবী দুর্গা।
Featured Images: durgapuja, durga_puja_porikroma,
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এসে গেল #POPxoEverydayBeauty – POPxo Shop-এর স্কিন, বাথ, বডি এবং হেয়ার প্রোডাক্টস নিয়ে, যা ব্যবহার করা ১০০% সহজ, ব্যবহার করতে মজাও লাগবে আবার উপকারও পাবেন! এই নতুন লঞ্চ সেলিব্রেট করতে প্রি অর্ডারের উপর এখন পাবেন ২৫% ছাড়ও। সুতরাং দেরি না করে শিগগিরই ক্লিক করুন POPxo.com/beautyshop-এ এবার আপনার রোজকার বিউটি রুটিন POP আপ করুন এক ধাক্কায়…