পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম বা PCOS – খুব পরিচিত একটি শব্দ। আজকাল আমাদের, অর্থাৎ মহিলাদের জীবনে এই শব্দটা একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাবারে অতিরিক্ত রাসায়নিকের প্রয়োগ, অনিয়মিত জীবনশৈলী, স্ট্রেস এবং নানা কারণে আমাদের ওভারি বা জরায়ুতে ফ্যাট জমে সিস্টের আকার ধারণ করে এবং আমাদের নানা শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। নিয়মিত ওষুধের পাশাপাশি যদি আমরা নিজেদের খাওয়াদাওয়ার (diet) অভ্যাসে একটু পরিবর্তন আনতে পারি, তাহলে কিন্তু এই সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমে কীরকম ডায়েট মেনে চলা উচিত
১। আপনার যদি PCOS থাকে সেক্ষেত্রে সবার আগে যেটা জরুরি, তা হল সঠিক খাওয়াদাওয়া (diet) করা। ফ্যাট জাতীয় খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। আজকাল ব্যস্ততার কারণে আমরা অনেকেই রেডি টু ইট খাবার খাই। এই খাবারগুলোতে এমন কিছু প্রিজারভেটিভ দেওয়া থাকে যা আমাদের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। সসেজ, চিজ, ভাজাভুজি, হ্যাম বা প্যাকেজড খাবার এক্কেবারে খাওয়া চলবে না।
২। যতটা সম্ভব মিষ্টি খাওয়া বন্ধ করুন। বিশেষ করে চিনি কিন্তু একদমই খাবেন না। চিনির বদলে পারলে মধু বা গুড় খান। অনেকের চা খাওয়ার অভ্যাস থাকে এবং তা চিনি দিয়ে। চায়ের বদলে গ্রিন টি খেতে পারেন। যদি একান্তই মিষ্টি দিতে হয় চায়ে, তাহলে মধু দিয়ে গ্রিন টি বা হারবাল টি খান। আইসক্রিম, কোল্ডড্রিঙ্ক, মিল্ক চকলেট, পেস্ট্রি বা ক্রিম দেওয়া কেক যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন (natural ways)।
৩। পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম থাকলে লো-কার্বোহাইড্রেট খাবার খান। শরীরে কার্বোহাইড্রেটের প্রয়োজন আছে, কাজেই একবারে কার্বোহাইড্রেট খাওয়া বন্ধ করবেন না। ভাত, আলু, ময়দা, কর্ণফ্লেক্স ইত্যাদির বদলে মাল্টিগ্রেন ব্রেড, ওটমিল, লো ফ্যাট দই, মুসলি, আমন্ড, কিনুয়া, চিয়া সিড ইত্যাদি খেতে পারেন। আসলে যেসব খাবারে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকে, সেগুলো আমাদের রক্তে ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ইনসুলিনের পরিমাণ বাড়লে ওজন বাড়তে বাধ্য, এবং ওজন বাড়লে PCOS কমানো মুশকিল।
৪। দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার না খাওয়াই ভাল PCOS থাকলে। গরুর দুধের বদলে যদি আমন্ড মিল্ক বা নারকেলের দুধ অথবা সোয়াবিনের দুধ খান তাহলে ভাল।
PCOS থেকে মুক্তি পেতে সঠিক খাওয়াদাওয়া করাটাও জরুরি (ছবি সৌজন্য – শাটারস্টক)
৫। প্রতিদিন সকালে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস উষ্ণ জলে দারচিনিগুঁড়ো মিশিয়ে খান, এতে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি পাবেন। এছাড়া পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের ফলে অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যাও কমবে দারচিনি খেলে। সম্ভব হলে খাবারেও দারচিনি মিশিয়ে খেতে পারেন। চা অথবা স্যালাড খেলে তাতে দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে খেতেও ভাল লাগবে।
৬। দুই টেবিল চামচ (৩০ গ্রাম মতো) তিসি হামানদিস্তায় পিষে নিয়ে সকালে খালি পেটে জলে গুলে খেয়ে নিন, যতদিন না পর্যন্ত আপনি সুফল পাচ্ছেন। তিসি মোটেও সুস্বাদু নয়। জলে গুলে খাওয়া সম্ভব না হলে ফলের রসের সঙ্গে তিসির গুঁড়ো মিশিয়েও খেতে পারেন। ততদিন খেতে হবে, যতদিন না পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের সমস্যা দূর হচ্ছে।
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!