ভারতীয় ব্যাডমিন্টন তারকা পি ভি সিন্ধু (P V Sindhu) আর দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট টিমের মধ্যে মিল কোথায় বলতে পারেন? স্পোর্টস পরিভাষায় এঁদের বলা হয় চোকার্স! মানে, যাঁরা কোনও টুর্নামেন্টে আগাপাশতলা রীতিমতো দাপটের সঙ্গে ভাল খেলেও, শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেই সন্তুষ্ট থাকেন! দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট টিম যেমন ঠিক ফাইনালে উঠে ল্যাজে গোবরে হবে, সিন্ধুও ঠিক ফাইনালে গিয়ে কোনও না-কোনও কারণে ভুল শট মেরে ওই রুপো পেয়েই খুশি থাকবেন! সেই অলিম্পিক থেকে শুরু! ক্যারোলিনা মারিনের কাছে ভাল খেলিয়াও পরাজিত হওয়ার পর থেকে সিন্ধু কিছুতেই ব্যাটে-বলে করতে পারছিলেন না! সারা টুর্নামেন্টে ভাল খেলছেন, ছোট-ছোট জয়ও আসছে, কিন্তু যেমন একটা জিতের পর সারা দেশ তাঁকে নিয়ে আবার নাচানাচি শুরু করবে, তেমনটা কিছুতেই হচ্ছিল না! এমনিতেই আমরা ক্রিকেট ছাড়া অন্য কোনও খেলাকে বিশেষ মর্যাদা-টর্যাদা দিই না! তার উপর যদি প্রতি ফাইনালে সিন্ধু নিরাশ করতে থাকেন, তা হলে সিরিয়াল-নেটফ্লিক্স ফেলে ভারতবাসী কেন স্পোর্টস চ্যানেলে ব্যাডমিন্টন দেখবে বলুন তো?
অবশেষে সিন্ধুর সেই সোনার-খরা কেটেছে। আজ সুইজারল্যান্ডের বাসেলে WTF World Badminton Championship-এর ফাইনালে জাপানের নোজোমি ওকুহারাকে স্ট্রেট গেমে হারিয়ে সোনা জিতে নিয়েছেন বিশ্বের বর্তমান পাঁচ নম্বর তারকা সিন্ধু। এই সোনা জেতার সঙ্গে-সঙ্গে আরও বেশ কয়েকটি রেকর্ড করলেন সিন্ধু। প্রথম ভারতীয় (Indian) হিসেবে সোনা পকেটস্থ করলেন তিনি। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে এই নিয়ে ছ বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেন তিনি। তার মধ্যে পাঁচবারই কোনও না-কোনও মেডেল পেলেন! ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে তাঁর ঝুলিতে জমা পড়েছিল রুপো আর এবার সটান সোনা! তিনি ছাড়া মাত্র আরও একজন সিঙ্গলস প্লেয়ারের ঝুলিতে এই চ্যাম্পিয়নশিপে এতগুলি মেডেল জেতার সম্মান আছে। এই জিতের ফলে আগামী টোকিও অলিম্পিকসে যখন খেলতে নামবেন সিন্ধু, তখন তিনি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই নামবেন! ফলে অন্য প্রতিযোগীদের তুলনায় মানসিক ভাবে অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন তিনি, আর তাঁর সঙ্গে মেডেল দৌড়ে অ্যাডভান্টেজ ভারতও হবে!
আর সত্যি কথা বলতে গেলে, প্রতিপক্ষকে পুরো দুরমুশ করে দিয়েছেন তিনি আজ। ২১-৭, ২১-৭ ফল হয়েছে দুটি গেমের! আশা করি বুঝতে পারছেন, ওকুহারা দাঁড়াতেই পারেননি সিন্ধুর স্ম্যাশের কাছে! গত বছর ফাইনালেও এই ওকুহারাই সিন্ধুর বিপক্ষে খেলেছিলেন। সেবার ১১০ মিনিট ধরে চলেছিল তাঁদের দ্বৈরথ! বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে দীর্ঘতম ব্যাটল! শেষ পর্যন্ত সিন্ধু হার মেনেছিলেন। রুপো জিতেই খুশি থাকতে হয়েছিল তাঁকে। এবারও ওকুহারা ছিলেন তিন নম্বর বাছাই আর সিন্ধু পাঁচ! কিন্তু প্রতিপক্ষকে এবার একটুও কামড় বসানোর সুযোগ দেননি সিন্ধু। মধুর প্রতিশোধ তুলে মাত্র ৩৮ মিনিটেই খেলা শেষ করে দেন তিনি! কমেন্টেটররা পর্যন্ত বিস্ময়ে বলে উঠেছেন, এত একপেশে ফাইনাল এর আগে কোনওদিন দেখেননি তাঁরা!
আর আমরা অপেক্ষায় থাকলাম আরও একটি একপেশে ফাইনালের। ২০২০ সালে, টোকিওতে, অলিম্পিক ফাইনালের। সেদিনও যেন এভাবেই ব্রেকিং নিউজ করা যায় সিন্ধুর অলিম্পিক সোনা জয়ের খবরটি!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!