সময়ের সাথে সাথে পেশা পাল্টায়। আবার পুরনো অনেক পেশাও নতুন রূপে দেখা যায়। এই যেমন ধরুন মা দিদিমারা যখন শিল নোড়ায় মশলা বাটতেন তখন “শিল কাটাও’’ ডাক দিয়ে হেঁকে যেত একজন। আজকাল সে আর আসে না। কিন্তু মিক্সার গ্রাইন্ডার খারাপ হলে আবার লোক ডাকতেই হয়। এভাবেই অফিসের ধরণ ধারণও অনেক পাল্টেছে। আমার বাবা কাকারা তো ভাবতেই পারেন না বাড়িতে বসেই সারা পৃথিবীর কাজ করা যায়। বাড়িতে বসেই পাঞ্চ করা যায় আপনার কার্ড। কর্মস্থলে (office) এসেছে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ কনসেপ্ট। আবার এই কর্মস্থলে (office) ম্যাটারনিটি লিভের সঙ্গে সঙ্গে নতুন বাবারাও পাচ্ছেন প্যাটারনিটি লিভ। মনিষীদের জন্মদিন বা স্বাধীনতা দিবস নয় মেয়েরা এখন নিজেদের কর্মস্থলে (office) ছুটি পাচ্ছে ঋতুস্রাবের দিনগুলোতেও।এইসব ঘটনা দশ পনেরো বছর আগে কেউ ভাবতেই পারত না। এখন পারছে।২০১৯-এ (2019) অনেক নতুন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। কারণ সময় এখন পাল্টে গেছে। আর তাই ২০১৯-এ (2019) কর্মস্থলে (office) সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হল পটারনিটি বেনিফিট (Pawternity Benefits) বা পোষ্যকে দেখার ছুটি (Pawternity Benefits)। সদ্যজাত সন্তানকে দেখার মতো পটারনিটি বেনিফিট (Pawternity Benefits) পাচ্ছেন তারা যাদের বাড়িতে এসেছে নতুন পোষ্য।
কেন প্রয়োজন এই ছুটি?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি ছোট শিশু জন্মালে তার যতটা দেখাশোনা বা পরিচর্যার প্রয়োজন আছে, ঠিক তেমনই বাড়িতে নতুন পোষ্য এলেও আছে। কারণ তার নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে সময় লাগে। তার সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব গড়ে উঠতে এবং তার খাওয়া দাওয়া টয়লেট ট্রেনিং ইত্যাদির জন্য সময় লাগে।
কতটা প্রয়োজন?
যাদের বাড়িতে ইতিমধ্যে পোষ্য আছে, তারা এই ছুটির অর্থ বিলক্ষণ বুঝবেন। পাখি, কুকুর, বেড়াল ছোট্ট অবস্থায় যাই আসুক না কেন, তাকে অন্য কারও হাতে ছেড়ে যেতে একটুও ভালো লাগে না। এর প্রভাব পড়ে কাজের উপর। তখন অফিসেও মন বসে না। আবার চট করে হাতের কাজ ফেলে রেখে বাড়িও যায় না।অনেকেই এই নিয়ে মানসিক উদ্বেগ করতে থাকেন এবং কাজে ভুল করেন।
কারা শুরু করলেন এই অভিনব ছুটি?
একটি নরডিক সংস্থা যারা পোষ্যদের খাদ্য বা পেটফুড তৈরি করে এই অভিনব পদক্ষেপ নিয়েছে। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, বিশেষ করে নিউ ইয়র্ক শহরে ‘পাপি প্যারেন্টাল লিভ’ চালু করা হয়েছিল। এই পেট ফুড নির্মাণ সংস্থা লক্ষ্য করেছিল যেসব কর্মচারী নতুন পোষ্য দত্তক নেয় তারা কর্মস্থলে খুব দোনামোনায় ভোগেন। তাই মাসের প্রথম দিনে ছুটির অধিকার পাচ্ছেন সেইসব কর্মচারীরা যাদের বাড়িতে নতুন পোষ্য আছে। পোষ্য যতক্ষণ না ঠিকঠাক মানিয়ে নিচ্ছে এই ছুটি থাকবে।
পাপি টাইম মানেই হ্যাপি টাইম
সময়ের থেকে অনেক এগিয়ে যে সব সংস্থা তাদের কর্মচারীদের কথা ভাবেন, তাদের সাধুবাদ না জানিয়ে উপায় নেই।দিল্লির ‘কলারফোক’ বলে একটি স্টার্টআপ সংস্থা কর্মীদের দশ দিন ছুটি দেয় যদি তারা বাড়িতে নতুন পোষ্য আনেন।মুম্বাইয়ের ডিজিটাল মার্কেটিং সংস্থা গোজুপ সেইসব কর্মী, যাদের বাড়িতে পোষ্য আছে, তাদের দু হাজার টাকা করে অতিরিক্ত দিয়ে থাকে। যাতে তারা পোষ্যদের ডাক্তার দেখাতে পারে। আবার ‘চায়স’ এর মতো চায়ের রিটেল সংস্থা পটারনিটি লিভ না দিলেও পোষ্য অসুস্থ থাকলে ওয়ার্ক ফ্রম হোম করার স্বাধীনতা দেয়।তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে হারপার কলিন্স ইন্ডিয়ার মতো খ্যাতনামা পাবলিশিং গোষ্ঠী। হারপার কলিন্স ইতিমধ্যেই পটারনিটি লিভ চালু করে দিয়েছে। পাঁচটি ওয়ার্কিং ডেতে পেইড লিভ পাবেন সেই কর্মচারী যার নতুন পোষ্য আছে। শুধু তাই নয় যাদের বাড়িতে পোষ্যকে কেউ দেখার নেই, তাদের হারপার কলিন্সের নয়ডা অফিসে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি আছে। শিশুদের ক্রেশের মতো সেখানেও পোষ্য রাখার আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
Image Source: Instagram
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!