ঋতুস্রাব হয় বলে এই দেশে অনেক জায়গাতেই মহিলারা এখনও ব্রাত্য! প্রবেশ নিষেধ রয়েছে মন্দিরে, ছোঁয়া যায়না বাড়ির ঠাকুর, দেওয়া যায়না অঞ্জলি। অথচ এই ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড নারী শরীরের একটি অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার।মূলত পিরিয়ড সংক্রান্ত নানা ধ্যান ধারণা নিয়েই তৈরি হয়েছিল শর্ট ডকুমেন্টারি (Documentary) #Period.End Of Sentence। অনেক ছবিকে পিছনে ফেলে সেই ছবি নির্বাচিত হয়েছিল অস্কার (Oscar) মনোনয়নের জন্য। এবার আরও খুশির খবর। তালিকায় পাঁচটি বাঘা ছবিকে পিছনে ফেলে ৯১তম অ্যাকাডেমি পুরষ্কার (Academy Awards) বা অস্কার (Oscar) জিতে নিল সেরা ডকুমেন্টারি (Documentary) শর্ট সাবজেক্ট বিভাগে। Oscar প্রাপ্ত এই ডকুমেন্টারিটি (Documentary) পরিচালনা করেছেন বিখ্যাত ইরানিয়ান পরিচালক রায়কা জেহতাবচি(Rayka Zehtabchi)। গুনিত মোঙ্গার (Guneet Monga) ‘শিক্ষা এন্টারটেনমেন্ট’ এই অস্কার (Oscar) প্রাপ্ত শর্ট ডকুমেন্টারির (Documentary) প্রযোজনা করেছে।
লস এঞ্জেলেসের ওকউড স্কুলের (Oakwood School) শিক্ষিকা মেলিসা বার্টনের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রছাত্রী একটি প্রজেক্ট শুরু করেছিল যার নাম ছিল ‘দা প্যাড প্রজেক্ট’। এখান থেকেই ডকুমেন্টারির ভাবনা দানা বাঁধে রায়কার মাথায়। অস্কার হাতে নিয়ে কেঁদে ফেলেন রায়কা।তিনি বলেন, তিনি এই কারণে কাঁদছেন না কারণ তার পিরিয়ড বা অন্য কিছু হয়েছে। তিনি কাঁদছেন কারণ তিনি কোনওদিন ভাবতেই পারেননি ঋতুস্রাবের উপর একটি ছবি একদিন অস্কার পাবে।তিনি ধন্যবাদ জানান তার প্রযোজক গুনিত মোঙ্গাকেও।
রায়কা বলেন গুনিতের এই পদক্ষেপ সারা বিশ্বের মেয়েদের সাহস জোগাবে। সারা পৃথিবীতে মেয়েরা যেভাবে ঋতুস্রাব জনিত নানা সমস্যার সঙ্গে লড়ছেন এই ছবির পুরষ্কার আসলে তাদেরই জয় বলে জানালেন এই ডকুমেন্টারির সঙ্গে জড়িত সদস্যরা।
শিক্ষিকা মেলিসা বার্টন এই অস্কার নিবেদিত করলেন তার স্কুলকে। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন লস এঞ্জেলেসে তার ছাত্রছাত্রীরা এবং এই দেশের মানুষ যদি মানবাধিকার নিয়ে এই পদক্ষেপ না নিতেন তাহলে এই প্রজেক্ট সম্ভব হত না। মেলিসা এও বলেন, তিনি এই সম্মান ফেমিনিস্ট মেজরিটি ফাউন্ডেশান, ছবির সমস্ত কলাকুশলী ও সহকারী, বিশ্বের সমস্ত শিখক/শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান।পিরিয়ড এই কথার পরে বাক্য শেষ হোক কিন্তু একটি মেয়ের পড়াশোনা নয়, এটাই চান মেলিসা।
এই ডকু ফিচারের পটভূমিকা হল দিল্লির কাছে একটি গ্রাম, যার নাম হাপুর। এখানকার মেয়েরা স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতে পারত না। ফলে তাদের নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছিল এবং মেয়েরা আস্তে আস্তে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিচ্ছিল। অবশেষে এখানে একটি প্যাড ভেনডিং মেশিন লাগানো হয়। মেয়েরা বিদ্রোহ শুরু করে এবং তারা নিজেরাই প্যাড তৈরি করে তার মার্কেটিং শুরু করে। তাদের এই ব্র্যান্ডের নাম হল ফ্লাই। এখানে বাস্তবের প্যাডম্যান অরুনাচলম মুরুগানানথমের কথাও বলা হয়েছে। অরুনাচলম নানা বাধা বিপত্তি পেরিয়ে ভারতের বিভিন্ন গ্রামের মহিলাদের জন্য কম পয়সায় প্যাড নির্মাণ শুরু করেন। অক্ষয়কুমার অভিনীত ‘প্যাডম্যান’ ছবিটি তারই বায়োপিক।
#Period.End Of Sentence এর পুরষ্কার প্রাপ্তিতে উচ্ছ্বসিত বলিউড। টুইট করেছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও অক্ষয় কুমার। প্রিয়াঙ্কা অভিনন্দন জানিয়েছেন সবাইকে। বলেছেন গুনিত একজন সাহসী মানুষ। অক্ষয়কুমারও অভিনন্দন জানিয়ে লেখেন এই পুরষ্কার এই ছবির প্রাপ্য ছিল। অভিনন্দন জানান মডেল অভিনেত্রী পদ্মালক্ষ্মীও।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!