পকেট মানি বাঁচিয়ে শখ মেটাতে এক বার চুলে কালার (hair color) করেছিল নীরা। ওর এমনিতে হেয়ার কালারের শখ নেই। কিন্তু কিছু ট্রেন্ডি হেয়ার কালার (hair color) দেখে মনে মনে ইচ্ছে জেগেছিল। আর যে-ই ভাবনা, সেই কাজ! চুলে পার্পল হাইলাইট করেও ফেলেছিল। বেশ খরচও হয়েছিল। ব্যস! বাড়িতে ঢুকেই তো মায়ের বকুনি! যদিও বাবা কিছুই বলেনি। কিন্তু এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই পার্পল কালারটা কেমন যেন একটা হয়ে চুলটা (hair) আরও রাফ (dry-rough) হয়ে গিয়েছিল। অত টাকা পুরো গচ্ছা গেল! দু’গোছা চুল পার্পল কালার করতে গিয়ে যে হ্যাপা পোহাতে হয়েছিল, তার জন্য চুল রং (hair color) করার শখ একেবারে মিটে গিয়েছে। আসলে সালোঁ থেকে চুলের যত্ন (hair care) নেওয়ার কথা বললেও সেটা ঠিক ভাবে মানেনি নীরা। তার জন্যই ওর এই সমস্যা হয়েছিল।
আর আজকাল তো হেয়ার কালার অথবা হেলার হাইলাইট বা লোলাইট বেশ ট্রেন্ডি। আর হেয়ার কালার বলতে ব্রাউন, বার্গেন্ডি বা রেড নয়। হালফ্যাশনে চলছে সবুজ, হলুদ, গোলাপি, পার্পল, গ্রে-র মতো কালারও। আসলে হেয়ার কালার (hair color) করার পর যেটা দরকার, সেটা হল ঠিকঠাক ভাবে চুলের যত্ন (hair care) নেওয়া। কারণ চুলের রঙে রয়েছে কেমিক্যালস, যা আপনার চুলের ক্ষতি করে। মানে চুলকে রুক্ষ-শুষ্ক বানিয়ে দেয়। তাই চুলে রং করাতে তো সালোঁতে গিয়ে প্রচুর টাকা খরচ করলেন, কিন্তু পোস্ট কালার হেয়ার কেয়ার (hair care) সে ভাবে করলেনই না। তাতে হিতে বিপরীত হয়। চুল আরও নষ্ট হয়ে যাবে। আর গাঁটের কড়ি খরচ করে করানো রং তো টিকবেই না!
চুলের যত্নে
হেয়ার কালার করানোর কথা ভাবছেন? তা হলে কিন্তু আগে থেকেই শুরু হয়ে যাবে হেয়ার কেয়ারের (hair care) পর্বটা। কারণ চুল কালার করানোর জন্য চুল ময়েশ্চারাইজড রাখতে হবে। অন্ততপক্ষে ৩-৪ সপ্তাহ আগে চুলে কোনও রকম কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করানো যাবে না। চুলকে ডিপ কন্ডিশন ও ময়েশ্চারাইজ করতে সমপরিমাণ ডিম, দই, কলা মিশিয়ে একটা প্যাক বানিয়ে ফেলুন। এ বার সেটা চুলে লাগিয়ে ঘণ্টাখানেক রাখুন। এতে চুল পরিপুষ্ট হবে। নরম আর ময়েশ্চারাইজড থাকবে।
কালার প্রোটেকশন
কালার করার ৭২ ঘণ্টা পরে চুল ধুতে পারবেন। তার আগে ধুয়ে ফেললে কিন্তু চুলের রং ফিকে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। কালার করে ফেলার পরে কালার প্রোটেক্ট শ্যাম্পু আর কালার প্রোটেক্ট কন্ডিশনারই ব্যবহার করতে হবে। তবে হ্যাঁ, লক্ষ্য রাখবেন, আপনার শ্যাম্পুটা যেন সালফেট ফ্রি হয়।
কালার করা চুলের যত্ন ঘরোয়া উপাদান
শ্যাম্পু, কন্ডিশনার তো নয় হল। কিন্তু কালার করা চুল যাতে রুক্ষ-শুষ্ক (dry and rough) না হয়ে যায়, তার জন্য রয়েছে ঘরোয়া কিছু উপাদান। যেগুলো আপনার কালার করা চুলতে পুষ্ট ও সতেজ রাখবে।
কলা
একটা বড় কাচের বাটি নিন। তাতে একটা পাকা কলা আর ১চা-চামচ মধু দিয়ে একটা মসৃণ পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এ বার ওই প্যাকটা চুলে লাগিয়ে মিনিট কুড়ি মতো রেখে চুলটা (hair) ধুয়ে নিন। এটা আপনার চুলকে ময়েশ্চারাইজড আর মসৃণ রাখবে।
মেয়োনিজ
কালার করলে চুলের ন্যাচারাল শাইন (shine) চলে যায় কেমিক্যালসের জন্য। তবে কালার করা চুলে (hair color) জৌলুস (shine) ধরে রাখতে খুব ইম্পর্ট্যান্ট হল- মেয়োনিজ। জাস্ট মেয়োনিজ নিয়ে চুলের ডগা থেকে আগা মাসাজ করুন। এ বার ইষদুষ্ণ জলে চোবানো একটা তোয়ালে মাথায় জড়িয়ে রেখে দিন। ৩০-৪০ মিনিট রাখার পরে ভাল করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আর ঠান্ডা জলে কিন্তু চুলটা ধুতে হবে। সপ্তাহে ২-৩ বার করলে আপনার চুলের রং অনেক দিন থাকবেও।
অলিভ অয়েল
কালার করা চুলের জন্য অলিভ অয়েলও দারুণ। একটি বাটিতে অলিভ অয়েল গরম করে নিয়ে স্ক্যাল্পে মাসাজ করুন ১০-১৫ মিনিট ধরে। অলিভ অয়েল চুলকে কন্ডিশন করে। আর ন্য়াচারাল শাইন (shine) ধরে রাখে। পাশাপাশি, স্ক্যাল্পকেও নারিশ করে। চুলের রং যাতে ফিকে না হয়ে যায়, তার জন্য রোজ অলিভ অয়েল মাসাজ করতেই পারেন।
ডিম
ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে নিশ্চয়ই জানেন। আর এটা যে চুল আর স্কিনের জন্যও দারুণ, সেটাও নিশ্চয়ই জানেন। আসলে ডিম হল নারিশিং অয়েলস আর প্রোটিনের উত্স। ফলে যদি ডিম চুলে লাগিয়ে রাখেন, তা হলে সেটা চুলের ময়েশ্চার ধরে রাখে। আর ড্যামেজও রিপেয়ার করে।
ছবি সৌজন্য: ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি এবং বাংলাতেও!