বাংলায় একটা কথা আছে না, যাকে দেখতে নারি, তার চলন বাঁকা! ভারত-পাকিস্তানের অনেকটা সেরকম ব্যাপার হয়েছে! আমরা এই দুই দেশ প্রতিবেশী হলেও, পরস্পর-পরস্পরকে এতটাই বাঁকা চোখে দেখি যে, বিদেশের মাটিতেও ভারতীয়-পাকিস্তানি মুখোমুখি হলে, কোথায় এককাট্টা হয়ে সায়েবদের দমিয়ে দেব, তা নয়, সেই নিজেদের মধ্যেই ঝগড়া করে মরি! এরকমটাই হয়েছে প্রিয়ঙ্কা চোপড়া জোনাসের (Priyanka Chopra) সঙ্গে, তা-ও সুদূর আমেরিকার মাটিতে, লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে বসে!
একটু খুলেই বলা যাক ব্যাপারটা। প্রিয়ঙ্কা তো ইদানীং দেশি কম, বিদেশি বেশি! তিনি আমেরিকাতেই থাকেন প্রায়, সেখানেই ফ্যাশন-ট্যাশন করেন, বরের কনসার্টে লাফান-ঝাঁপান আর গুচ্ছখানেক অ্যাপিয়ারেন্স দেন! এই অ্যাপিয়ারেন্স ব্যাপারটাই বড্ড গোলমেলে। যেমন ধরুন, আপনি গিয়েছেন বিউটি ইভেন্টে ফিতে কাটতে, সেখানে হয়তো প্রেস কনফারেন্সে মিডিয়া আপনাকে জিজ্ঞেস করল এই যে ভরা শ্রাবণে চন্দ্রযান উৎক্ষেপণ হল, সেই বিষয়ে আপনি কী মনে করেন! কিংবা স্টেজে আপনার স্বামী গান গাইছেন, আপনি অডিয়েন্সে ধিতিং-ধিতিং করে নেচেকুঁদে সেটা উপভোগ করছেন আপ পাঁচজন পতিব্রতা স্ত্রীয়ের মতো, তার মাঝে মিডিয়া আপনার দিকে বুম বাগিয়ে বলল, আচ্ছা, বলুন তো, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা তুলে মোদী সরকার ভাল করল, না খারাপ! ব্যস, আপনার মুডের দফারফা! কিন্তু আপনি হলেন গিয়ে সেলেব! আপনাদের রাগতে নেই, সব বাউন্সার হাসিমুখে সামলে জনতার সামনে উদাহরণ স্থাপন করতে হবে! তাই আপনি জীবনের সেরা অভিনয়টি করে বুকে রাগের আগুন জ্বলা সত্ত্বেও ঠোঁটে তেরচা হাসিটি নিয়ে এই সব বিটকেল প্রশ্নের ততোধিক গোলানো উত্তর দেবেন! আসলে মিডিয়াকেও দোষ দেওয়া যায় না, তারাও ছা-পোষা মধ্যবিত্ত, খবর বেচে সংসার চালায়! সেলেব্রিটিকে সামনে পেয়েও যদি সঠিক ব্রেকিং নিউজমার্কা উত্তর নিয়ে অফিসে জমা দিতে না পারে, তা হলে তাঁদেরই বা সংসার চলবে কেমন করে!
মিডিয়ায় বায়নাক্কা প্রিয়ঙ্কা বরাবরই ভাল করে সামলে এসেছেন! তাঁকে নিয়ে কোনওদিন ব্রেকিং নিউজের অভাব হয়নি। তা সে নিক জোনাসের সঙ্গে ইন্টুমিন্টুর সময়ই হোক কিংবা আমেরিকায় জোনাস বউমা হয়ে সংসার টানার সময়! নিত্যদিন পোষ্য ডায়নাকে সঙ্গে নিয়ে তিনি রাস্তা ভ্রমণে বেরোন আর মিডিয়া মজাসে গুচ্ছ ছবি তুলে তাদের সোশ্যাল ওয়াল ভর্তি করে। কিন্তু সমস্যা হয় এই ভক্তদের প্রশ্নের অত্যাচারে। এই যেমন বিউটিকন এলএ (Beautycon LA), এটি একটি বিউটি সংক্রান্ত শো এবং এগজিবিশন। এখানে বিতর্কিত প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার কোনও সুযোগই ছিল না, তার মধ্যেও বেয়াড়া মশার মতো সেই একজন পাকিস্তানি মহিলা (Pakistani girl) আয়েশা মালিক, যিনি আবার স্বঘোষিত প্রিয়ঙ্কা ফ্যানও বটে, একটা কুটকুটে মার্কা প্রশ্ন শুধিয়েই ফেললেন দেসি গার্লকে! নীচে দেখুন সেই ভিডিয়ো…
Priyanka Chopra tweeted during a time when we were this 👌🏽 close to sending nukes to one another. Instead of advocating for peace she tweeted in support of the Indian army pic.twitter.com/LhbMkOW59v
— Ayesha Malik (@Spishaa) August 11, 2019
লাও ঠেলা, এসেছেন বিউটি কনফারেন্সে, সেলেব্রিটিকে সামনে পেয়েই কিনা যা-তা প্রশ্ন! তা-ও আবার তাঁকে ‘হিপোক্রিট’ সম্বোধন করে, তিনি কী করে রাষ্ট্রসঙ্ঘের গুডউইল অ্যাম্বাসাডর হয়ে আণবিক যুদ্ধে টুইট করে মদত দিচ্ছেন, সেসব বলে…উফ, এঁরা পারেনও। তবে প্রিয়ঙ্কা কিন্তু ভারী ভাল করে ডজ করেছেন প্রশ্নটা। কী বললেন তিনি, নীচে দেখে নিন…
টুইটাটা নিয়ে একটু সাধারণ জ্ঞান বিতরণ করে দেওয়া যাক। এই টুইটটা প্রিয়ঙ্কা করেছিলেন গত মার্চ মাসে, যখন ফুলওয়ামায় টেরর অ্যাটাকের পর ভারত পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটির উপর বোমাবর্ষণ করে এবং ভারতবাসী যখন দেশপ্রেমের জোয়ারে টগবগ করে ফুটছে, তখন! বেচারি তেমন কিছু লেখেনওনি, শুধু বলেছিলেন…
Jai Hind #IndianArmedForces 🇮🇳 🙏🏽
— PRIYANKA (@priyankachopra) February 26, 2019
তবে হ্যাঁ, সকলে একবাক্যে এটা স্বীকার করেছেন যে, ‘আর ইউ ডান ভেন্টিং…’ বলাটা প্রিয়ঙ্কার মোটেও উচিত হয়নি। তিনি আরও ঠান্ডা মাথায় আয়েশার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সকলের মনে জয় করে নিতেই পারতেন! তবে ওই সব সময় তো আর মাথা ঠিক রাখাটা সম্ভব হয় না, তাই আর কী…
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!