হাঁটা যে শরীরের পক্ষে ভাল, তা আমরা সকলেই জানি। হাঁটলে ওজন কমে (proper walk to reduce weight) তা-ও জানি। সকালে উঠে হাঁটা দরকার তা-ও জানি। কিন্তু এটা কি জানতেন যে, খালি ইয়া-ইয়া করে মাইলে পর মাইল হেঁটে চললেই আপনার ওজন কমবে না? ময়দানে যান, রবীন্দ্র সরোবর লেকে যান, বা আপনার পাড়াতেই দেখুন, দেখবেন একদল লোক সারা বছর হেঁটেই চলেছে! কিন্তু বছর ঘুরলেও তাঁদের একফোঁটাও ওজন কমেনি!
হ্যাঁ, শরীর হয়তো ঝরঝরে হয়েছে, ভিতরের ইমিউনিটি বেড়েছে, সকালে ওঠার অভ্যেস হয়েছে, কিন্তু ওজনের কাঁটা যেখানে ছিল, সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে। হয়তো দু-পাঁচশো গ্রাম এদিক-ওদিক হয়েছে, কিন্তু তাতে আর কী যায় আসে!
আসলে হাঁটাটাও একটা শিল্প! তাই সেটাও নিয়ম মেনে করতে হয়, নইলে লাভের-লাভ কিচ্ছুটি হয় না। ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের মতে, হাঁটারও একটা নিয়ম আছে। তাই কীভাবে হাঁটবেন, কদিন হাঁটবেন, সবকিছুই একটা রুটিন মেনে হওয়া উচিত। এখানে আমরা হাঁটা নিয়েই কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরছি।
কত ধরনের হাঁটা হয়
স্ট্রোল. ব্রিস্ক ওয়াক, পাওয়ার ওয়াক – এই তিনরকমের হাঁটা হয়। প্রতিটা রকমই আপনার ওয়াক রুটিনে নিয়মিত থাকতে হবে। কীভাবে, দেখে নিন এখানে…
স্ট্রোল মানেটা বাংলায় দাঁড়াবে পাড়া বেড়ানো হাঁটা! মানে, আপনি ফুটপাথে কেনাকাটা করার সময় কিংবা শপিং মলে উইন্ডো শপিং করার সময় যেভাবে ধীরে-সুস্থে হাঁটেন, সেটাই হল স্ট্রোলিং। প্রতিদিন সকালে যখন হাঁটতে শুরু করবেন, তখন অন্তত মিনিটপনেরো আগে স্ট্রোল করুন। এটি আপনার ঝিমিয়ে থাকা শরীরকে জাগাতে সাহায্য করবে। এভাবে হাঁটলে প্রতি ঘণ্টায় মোটামুটি ২৪০ ক্যালরি বার্ন করতে পারেন আপনি।
ব্রিস্ক ওয়াক (proper walk to reduce weight) মানে হল না হাঁপিয়ে হাঁটা! মানে, এভাবে হাঁটতে-হাঁটতে আপনি পাশের সঙ্গীটির সঙ্গে অনায়াসে বাংলা সিরিয়ালের মা-বউমা, রাজনীতির কচকচি কিংবা আলু-পটলের দাম নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে পারেন! অর্থাৎ, আপনি হাঁটবেন, স্ট্রোলের চেয়ে একটু জোরেই হাঁটবেন। কিন্তু হাঁপিয়ে যাবেন না। এভাবে হাঁটলে ঘণ্টায় মোটামুটি ৩৫০ ক্যালরি মতো পুড়বে।
পাওয়ার ওয়াক, নামটা শুনেই বুঝতে পারছেন, এটি হল সবচেয়ে জোরে হাঁটা। এই হাঁটার সময় আপনার ঘাম হবে বেশি, হাঁপাবেন তাড়াতাড়ি এবং বেশিক্ষণ এটা টানতেও পারবেন না। অনেকটা দৌড়েরই মতো, কিন্তু দৌড়নো নয়। লম্বা-লম্বা পা ফেলে, জোরে-জোরে শ্বাস নিয়ে এভাবে হাঁটতে হবে। তা হলে ঘণ্টায় মোটামুটি ৫৫০ ক্যালরি বার্ন করতে পারবেন।
হাঁটার রুটিন তৈরি করুন
যদিও ফিটনেস সংক্রান্ত যে-কোনও ব্যাপারে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চলাটাই উচিত, কিন্তু ওয়াক রুটিন আপনি প্রথমদিকে নিজেও তৈরি করে নিতে পারেন অনায়াসে। মোটামুটি একটা রুটিন আমরা এখানে দিয়ে দিচ্ছি, বাকিটা নিজেদের সুবিধেমতো করে নেবেন।
- হাঁটা শুরু হবে ১৫ মিনিটের স্ট্রোল দিয়ে।
- তারপর অন্তত আধঘণ্টা ব্রিস্ক ওয়াকিং চলুক।
- এবার আবার পাঁচ মিনিট স্ট্রোল।
- তারপর মিনিটদশেক পাওয়ার ওয়াক।
শেষে আবার পাঁচ মিনিটের স্ট্রোল। এভাবে অন্তত দিনপনেরো হাঁটুন। তারপর আস্তে-আস্তে পাওয়ার ওয়াকের সময় বাড়িয়ে নিন। দেখুন, কতটা নিতে পারছেন, সেই অনুযায়ী ধীরে-ধীরে বাড়াবেন।
মাথায় রাখুন কিছু জরুরি টিপস
সঠিক জুতো পরে হাঁটতে বেরবেন। ওয়াকিং শু আলাদা হয়, তা সাধারণ স্নিকার্স, কনভার্স কিংবা বাঙালির ভীষণ প্রিয় কিটো শু-এর মতো নয়। ঠিকঠাক জুতো না পরে হাওয়াই চটি পরে হাঁটতে বেরলে লাভ হবে না, লোকসান হবে।
সমান রাস্তায় হাঁটার চেয়ে, স্ট্রোলিংয়ের সময় একটু উঁচু-নিচু রাস্তা বেছে নিন। এতে ডিফিকাল্টি লেভেল বেড়ে যায় বলে ক্যালরি বেশি বার্ন হয়।
সব সময় লম্বা-লম্বা পা ফেলে হাঁটবেন। (proper walk to reduce weight)
যে-কোনও ধরনের হাঁটার সময়ই জোরে-জোরে শ্বাস নেবেন এবং দুই হাত সমানে শরীরে দুই পাশে দোলাবেন অনেকটা মার্চ পাস্টের মতো করে।
সঙ্গে একটা জলের বোতল ও ছোট মুখ মোছার তোয়ালে অতি অবশ্যই রাখবেন।
খালি পেটে হাঁটতে বেরবেন না। অন্তত কয়েকটা কাঠবাদাম কিংবা দুটো বিস্কুট খেয়ে বেরোন।
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!