ADVERTISEMENT
home / Diet
পুজো স্পেশ্যাল: ৩০ দিনের ডায়েট প্ল্যান, মেদ ঝরানোর পাশাপাশি, ত্বককেও করে তুলবে উজ্জ্বল!

পুজো স্পেশ্যাল: ৩০ দিনের ডায়েট প্ল্যান, মেদ ঝরানোর পাশাপাশি, ত্বককেও করে তুলবে উজ্জ্বল!

দুগ্গা মা তো আর বারে-বারে আসেন না, আসেন বছরে একবারই। তাই এই সময় একটু মাঞ্জা না দিলে চলে বলুন! কিন্তু সমস্যা একটাই। সারা বছর কব্জি ডুবিয়ে খেয়ে ওজন যে ঊর্ধ্বগামী! তাই লেটেস্ট ফ্যাশনের কুর্তি-সালোয়ার ফিট হবে কীভাবে? এই চিন্তায় যাঁদের রাতের ঘুম উড়েছে, তাঁদের জন্য সুখবর! একটু ইচ্ছে, আর অনেকটা মনের জোর থাকলে এক মাসের মধ্যেই চর্বি ঝরিয়ে ওজন কমিয়ে ফেলা সম্ভব। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক এবং ঝলমলে চুল হচ্ছে বাড়তি পাওনা। সেই শর্টকার্টেরই হদিশ দিলেন কেপিসি মেডিকেল কলেজের ক্লিনিকাল ডায়াটেটিক্স অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের প্রধান ডাঃ রঞ্জিনী দত্ত। আমাদের পাঠকদের জন্য ৩০ দিনের পুজো স্পেশ্যাল ডায়েট প্ল্যান (diet plan) বাতলে দিলেন তিনি!

এক মাসের মধ্যে কি সত্যিই ওজন কমিয়ে ফেলা সম্ভব?

অবশ্যই সম্ভব! তবে স্বাস্থ্যকর উপায়ে দুই থেকে সাড়ে তিন কিলো পর্যন্ত ওজন কমানো যেতে পারে। তার চেয়ে বেশি না কমানোই উচিত। কেন? ডাঃ দত্তের মতে, খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দিয়ে দ্রুত ওজন কমানোর চেষ্টায় লেগে পড়াটা অস্বাস্থ্যকর। কারণ, এমনটা করলে মেদ তো ঝরবেই না, উল্টে ‘মাসল ব্রেকডাউন’ হয়ে সেই জায়গায় আরও বেশি করে চর্বি জমতে শুরু করবে। ফলে ওজন কমা তো দূর, বরং ওজন বাড়ার আশঙ্কা আছে! সেই সঙ্গে কিডনি-লিভারেরও ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই শরীর বাঁচিয়ে ওজন কমাতে চাইলে এক মাসে তিন কিলোর বেশি ওজন না কমানোই বুদ্ধিমানের কাজ।

যতটা ক্যালরি খাচ্ছেন, তার চেয়ে বেশি ঝরাতে হবে

ওজন কমানোর সহজ একটা ফর্মুলা রয়েছে। সারা দিন যত ক্যালরির প্রবেশ ঘটছে শরীরে, তার চেয়ে আরও ৫০০ ক্যালরি বেশি খরচ করলেই ওজন কমতে শুরু করবে। সহজ কথায় বললে, সারা দিনে যদি ১,০০০ ক্যালরি খান, তা হলে দিনে মোট ১,৫০০ ক্যালরি ঝরাতে হবে। কীভাবে এমনটা সম্ভব? ডঃ দত্তের মতে ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ এবং ডিনার, এই তিনটে মিলের জায়গায় সারা দিনে ছ’বার খাবার খেতে হবে। তাতে ‘পি পি’ সুগার ঠিক থাকবে, যে কারণে মেটাবলিক রেট এতটাই বাড়বে যে, শরীরের ইতি-উতি জমে থাকা মেদ ঝরে যেতে সময় লাগবে না। তাই কাল থেকেই ব্রেকফাস্টের পর থেকে আড়াই ঘণ্টা অন্তর-অন্তর অল্প-অল্প করে খাবার খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন, উপকার পাবেই পাবেন!

ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার পর্যন্ত ডায়েট চার্ট

ADVERTISEMENT

পিক্সাবে

চটজলদি ওজন কমানোর ইচ্ছে থাকলে সকালে সাড়ে সাতটার মধ্যে ব্রেকফাস্ট সেরে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন ডাঃ রঞ্জিনী দত্ত।

প্রাতরাশ: এই সময়ে খেতে পারেন ওটস, দালিয়া অথবা মাল্টি গ্রেন সিরিয়ালের মতো কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার। সঙ্গে দু’-তিন রকমের ফল আর ২৫০ এম এল দুধ খাওয়া মাস্ট! যাঁদের দুধ না-পসন্দ, তাঁরা দুটো ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন। সক্কাল-সক্কাল শরীরে ফ্যাটের চাহিদা মেটানোটাও জরুরি। তাই অল্প করে মাখন খেতে ভুলবেন না! তবে সাত থেকে দশ গ্রামের বেশি ফ্যাটের প্রবেশ না ঘটাই বাঞ্ছনীয়। ব্রেকফাস্টের ঘণ্টাতিনেক পরে অল্প করে ছোলা সেদ্ধ, এক বাটি ছানা, নয়তো ডাবের জল খেতে হবে।

লাঞ্চ: দুপুরের খাবারের মেনুতে থাকুক দু’-তিন বাটি তরকারি, সঙ্গে এক পিস মাছ। তবে ভুলেও মাছের মাথা খাওয়া চলবে না। এমনকী, মৌরলা মাছের মাথাও এড়িয়ে চলতে হবে। মাছ-তরকারির পাশাপাশি এক বাটি ঘন ডাল আর শেষ পাতে খাওয়ার জন্য দই বা রায়তাও রাখতে পারেন। লাঞ্চের তিন ঘণ্টা পরে অল্প পরিমাণে ছোলা সেদ্ধ, নয়তো মুগ সেদ্ধ খেতে হবে। ইচ্ছে হলে ভুট্টাও খেতে পারেন। এর পর এক কাপ গ্রিন টি। তবে এক্ষেত্রে একটা বিষয় মাথা রাখা জরুরি। তা হলে এক কাপ গ্রিন টি খাওয়ার পরে মনে করে অন্তত তিন কাপ জল খান! না হলে কিন্তু কিডনিতে স্টোন হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে।

ADVERTISEMENT

ডিনার: সন্ধে সাড়ে ছ’টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন ডাঃ দত্ত। কারণ, সূর্যাস্তের পর থেকে ধীরে-ধীরে আমাদের মেটাবলিজম রেট কমতে থাকে। তাই দেরি করে রাতের খাবার খেলে ওজন (Weight) বাড়ার আশঙ্কা বাড়ে। রাতে কী খেতে হবে? ডিনারে এক বাটি মাছ বা মাংসের সুপ খেলে মন্দ হয় না। তবে রাতের খাবার খাওয়ার আড়াই ঘণ্টা পরে ছোট বাটির এক বাটি ছানা বা আইসক্রিম খাওয়া চলতে পারে।

এই নিয়মগুলি মেনে খাবার খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত অল্পবিস্তর হাঁটাহাঁটি, জগিং অথবা স্কিপিং করলে এক মাসে তিন থেকে সাড়ে তিন কিলো ওজন কমবেই কমবে। আর যদি বিকেলের দিকে এক্সারসাইজ করতে পারেন, তা হলে তো কথাই নেই!

পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাওয়া জরুরি

চটজলদি ওজন কমাতে গেলে দিনে তিন-চার লিটার জল এবং ৫০০ এম এল ডাবের জল খেতেই হবে। 

কখন খাবার খাচ্ছেন সেটাও খুব জরুরি

ডঃ দত্তের মতে, কী খাচ্ছেন সেটা যেমন জরুরি, তেমনই কখন খাবার খাচ্ছেন, তার উপরও কিন্তু ওজন কমবে না বাড়বে, তা অনেকাংশে নির্ভর করে থাকে। তাই ওজন কমাতে যদি চান, তাহলে সকাল সাড়ে সাতটার মধ্যে ব্রেকফাস্টে, সাড়ে দশটায় ‘মিড মর্নিং’ স্ন্যাক্স, দুপুর একটায় লাঞ্চ, বিকেল তিনটে-সাড়ে তিনটে নাগাদ অল্প করে স্ন্যাক্স, সঙ্গে এক কাপ গ্রিন টি। আর রাতের খাবার সন্ধ্যা সাড়ে ছটা থেকে সাতটার মধ্যে সেরে ফেলতে হবে।

ADVERTISEMENT

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে নাকি ওজন কমে?

pexels

আলবাত কমে! তবে শরীরের প্রতি কিলো ওজন পিছু ১.২ গ্রাম থেকে ১.৩ গ্রাম প্রোটিন খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন ডাঃ দত্ত। কারণ, এর চেয়ে বেশি পরিমাণে প্রোটিন খেলে শরীরের কোনও উপকারই হয় না, বরং নানা ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, যে ধরনের ডায়েট প্ল্যানই অনুসরণ করুন না কেন, দিনে কম করে ১০০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খেতেই হবে। না হলে কিন্তু শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হবে। আর কার্বোহাইড্রেট শুধু ভাতে আর রুটিতেই রয়েছে, এমন নয়। অনেক ফল এবং সবজিতেও এই উপাদানটি মজুত রয়েছে।

ওজন কমাতে গ্রিন টি পান জরুরি

গ্রি টিতে Epigallocatechin নামে একটি উপাদান রয়েছে, যা মেটাবলিজম রেট এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে দ্রুত ফ্যাট বার্ন হতে শুরু করে। ফলে ওজন কমতে সময় লাগে না। তবে দিনে দু’ কাপের বেশি গ্রিন টি পান করা উচিত নয়। আর প্রতি কাপ পিছু তিন কাপ জল খাওয়া মাস্ট!

ADVERTISEMENT

বোনাস টিপস

১. রাত ১১ টার মধ্যে শুয়ে পড়তে হবে। বেশি রাত পর্যন্ত জেগে থাকলে কিন্তু ওজন কমবে না।

২. কোল্ড ড্রিঙ্ক, চিনি এবং মধু খাওয়া চলবে না। ঘি ভাতের সঙ্গে আলু সেদ্ধও এড়িয়ে চলতে হবে।

৩. অনেকক্ষণ পেট খালি থাকলে বিপদ! তাই ওজন কমাতে চাইলে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা অন্তর অন্তর মুখ চালাতেই হবে।

৪. নিয়মিত অল্পবিস্তর এক্সারসাইজ মাস্ট!

ADVERTISEMENT

৫. অ্যালকোহল পান করা চলবে না। খুব ইচ্ছে হলে দিনে এক গ্লাস করে ওয়াইন খেতে পারেন।

ডাঃ (ডক্টরেট) রঞ্জিনী দত্ত
কেপিসি মেডিকেল কলেজের ডায়াটেটিক্স অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের প্রধান
ফোন নং- ৯৪৩২০৬৯৩৬৮

POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!

আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!

ADVERTISEMENT
30 Aug 2019

Read More

read more articles like this
good points

Read More

read more articles like this
ADVERTISEMENT