এক রকম বাড়ির অমতেই পিতৃমাতৃহীন মৌপিয়াকে বিয়ে করেছিল আকাশ। কিন্তু পরে আকাশের বাড়ির সকলে মৌপিয়াকে মেনে নিয়েছিল ঠিকই! তবে আকাশের মায়ের দিক থেকে একটা সমস্যা ছিল। উনি ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে মৌপিয়াকে মেনে নিলেও ওকে এড়িয়েই চলতেন। ছোটবেলায় মা-হারা মেয়েটা এ বাড়িতে এসে ভেবেছিল, মায়ের স্নেহ পাবে। কিন্তু সে দিক থেকে হতাশ হয়েছিল ও। তবে হাল ছাড়েনি। ধীরে ধীরে মিষ্টি স্বভাব, সুন্দর ব্যবহারে শাশুড়ির (mother-in-law) মন জিতে নিয়েছিল সে। এখন তো ওর শাশুড়ি মৌপিয়া বলতে অজ্ঞান। এ তো নয় গেল মৌপিয়ার গল্প! অনেকেই বলবে, ও খুবই ভাগ্যবতী। সবার তো আর এমন হয় না!
আসলে শাশুড়ি মায়ের (mother-in-law) কথা শুনলেই বহু মহিলাই এড়িয়ে যান। অনেকের মতে তো শাশুড়ি-বৌমার সম্পর্ক মানেই আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক! শাশুড়ি মায়ের সম্বন্ধে অনেককেই বলতে শোনা যায়, যা-ই বলুন, শাশুড়ি মায়ের (mother-in-law) সঙ্গে সম্পর্কটা নিজের মায়ের মতো হয় না। সেটা তো ঠিকই। কারণ নিজের মায়ের জায়গা কাউকেই দেওয়া যায় না। তবে মায়ের মতোই বন্ধুত্বপূর্ণ (friendly) সম্পর্ক (relation) তৈরি করা যেতেই পারে। মা-কে যেমন সবটা বলেন, তেমনই শাশুড়ি মায়ের সঙ্গে সবটা শেয়ার করুন। দেখবেন, সম্পর্কের (relation) সমীকরণ অনেকটাই বদলে যাবে! আর শুরুটা করতে হবে বিয়ের আগে থেকেই। তবে হ্যাঁ, আর একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, শাশুড়ি মা-কেও (mother-in-law) কিন্তু এগিয়ে আসতে হবে। বৌমাকে (daughter-in-law) নিজের মেয়ের মতোই ভাবতে হবে। না হলে কিন্তু মুশকিল! আসলে উভয়পক্ষকে সমান ভাবে এগিয়ে আসতে হবে। কী ভাবে শাশুড়ি (mother-in-law)-বৌমার (daughter-in-law) ভাল সম্পর্ক (relation) গড়ে উঠবে-তা নিয়েই আমাদের কয়েকটা টিপস!
একটা কল
ধরুন, বিয়ে ঠিক হয়েছে আপনার। হবু বরের সঙ্গে ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গল্প করছেন। তারই মাঝে সময় বার করে শাশুড়ি মা-কেও একটা কল করুন। আসলে সম্পর্কটা (relation) বন্ধুর (friendly) মতো সহজ করে নেওয়া আর কি! পরিবারের সকলের খোঁজখবর নিন। আর হ্যাঁ, অবশ্যই কোনও মুখরোচক গসিপ শেয়ার করতে ভুলবেন না যেন! এ রকম মাঝেমাঝে কল করলে বন্ডিং মজবুত হবে। আর বিয়ের পরেও তা-ই। ধরুন, অফিসে আছেন। সেখান থেকেও কল করে একটু খোঁজখবর নেবেন। এই ছোট্ট পদক্ষেপই আপনার জন্য শাশুড়ির মনে অনেকটা জায়গা তৈরি করে দেবে।শাশুড়ি মা-ও মাঝে মাঝে ফোন করবেন, হবু বৌমা বা বৌমা-কে। ছেলেকে যেমন ফোন করে খোঁজ নেন তেমন আর কী! কী রে, কী করছিস? খেয়েছিস তো! ব্যস এ টুকুই কাফি!
লাঞ্চ-শপিং-স্পা
এমনিতে তো হবু বরের সঙ্গে ডিনার-ডেট বা লাঞ্চ-ডেটে যাচ্ছেন। এমনকি বিয়ের পরেও বরের সঙ্গে এ-দিক সে-দিক বা শপিংয়ে যাচ্ছেন। তো মাঝেমধ্যে শাশুড়ি মায়ের সঙ্গেও লাঞ্চ-ডেট, স্পা-ডেট ফিক্স করে ফেলুন। ওনাকেও জানার সুযোগ পাবেন আর উনিও স্পেশ্যাল ফিল করবেন। বিয়ের পরেও তা-ই। বিয়ের পরেও শপিংয়ে মা এবং শাশুড়ি মা দু’জনকেই বগলদাবা করে বেরিয়ে পড়ুন শপিংয়ে। মাঝে মাঝে শাশুড়ি মা-ও সারপ্রাইজ দিতেই পারেন হবু বৌমা বা বৌমা-কে। বৌমার পছন্দের মুভির টিকিট কেটে নিন। শাশুড়ি-বৌমা মুভি ডেটও একেবারে জমে যাবে!
বরকে নিয়ে চর্চা
শাশুড়ি মায়ের (mother-in-law) সঙ্গে গল্প আড্ডার দারুণ টপিক আপনার বর বা হবু বর। আর আপনাকে এটা মেনে নিতেই হবে যে, আপনার শাশুড়ি মা আপনার থেকে আপনার হবু বরটিকে ভাল মতো চেনেন। তো তার ছোটবেলার গল্প, স্কুলে কী কী দুষ্টুমি করত, সেই গল্প জানতে চান শাশুড়ি মায়ের কাছে। আর শাশুড়ি মা-ও আরামসে ছেলেকে নিয়ে চর্চা করতেই পারেন হবু বৌমা বা বৌমার (daughter-in-law) সঙ্গে।
রান্নায় সাহায্য
আপনি চাকরি করছেন বলে হয়তো রান্নাঘরে সময় দিতে পারেন না অথবা রান্নার ‘র’-ও জানেন না। তো আপনাকে রান্নাঘরে ঢুকে যে খুন্তি নাড়াতেই হবে, সেটা কে বলল! তাই শাশুড়ি মা যখন রান্না করবেন, তখন শুধুমাত্র একটু পাশে থাকুন। এটা-ওটা এগিয়ে দিন। আর রান্না জানলে ছুটির দিনে শাশুড়ি মায়ের সঙ্গে রান্নায় নেমে পড়ুন। ব্যস! এটুকুতেই সম্পর্ক দারুণ হবে। আর শাশুড়ি মা-দেরও বলব, বৌমা চাকরি করে, তাই যতটা পারবেন, সে দিকটা বুঝেই বৌমাকে হেল্প করুন। যাতে সে সব দিকটা সামলাতে পারে। এটুকু করতেই পারেন। মনে রাখবেন, কিঁউকি সাস ভি কভি বহু থি!!
খোলাখুলি কথা বলুন
ধরুন, শাশুড়ি মায়ের কোনও কিছু খারাপ লাগল, সেটা সোজা গিয়ে তাঁর কাছেই বলুন। মাঝখানে আপনার বরকে টানলে চলবে না। তাতে ভুল বোঝাবুঝি বাড়বে। সম্পর্কের (relation) জাঁতাকলে আটকে পড়বে আপনার বরই। এতে সম্পর্কেরই (relation) ক্ষতি! আর হ্যাঁ, শাশুড়ি মায়েদেরও (mother-in-law) এ দিকটা মেনে চলতে হবে। মানে বৌমার কিছু অপছন্দ হলে তাঁকে গিয়েই বলুন। ছেলের কাছে নালিশ নয়! আর শাশুড়ি-বৌমা দু’জনেই খুলে বলুন মনের কথা। এতে আপনাদের সম্পর্ক থাকবে সুন্দর আর মজবুত।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি এবং বাংলাতেও!