কয়েক মাস আগেই বলিউড হোক বা টলিউড, এমনকি হলিউডেও আছড়ে পড়েছিল #মিটু ঝড়। নিজের ওপর হওয়া যৌন নির্যাতনের কথা প্রকাশ্যে বলতে শুরু করেছিলেন বহু তারকা। আর তাতেই পর্দা ফাঁস হয় বহু সত্যের। বহু তথাকথিত ভাল মানুষের মুখোশ খুলে যায়। এবার সেই তালিকায় যোগ হল নতুন নাম। পরিচালক অরিন্দম (Arindam) শীলের বিরুদ্ধ এ হেন অভিযোগ করলেন অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা (rupanjana) মিত্র।
রূপাঞ্জনা জানিয়েছেন, অরিন্দম পরিচালিত ‘ভূমিকন্যা’ ধারাবাহিকের জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর চ্যানেলের তরফে তাঁকে অরিন্দমের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বলা হয়। তিনি পুজোর আগে চিত্রনাট্য শুনতে অরিন্দমের অফিসে গিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ অফিসে মাত্র একজন কর্মী ছিলেন। তিনি যাওয়ার পর সেই কর্মীকেও নাকি অরিন্দম কায়দা করে সরিয়ে দেন। তারপরই তাঁর চোখের ভাষা নাকি বদলে যায়। অভিনেত্রীর পিঠেও হাত দেন পরিচালক। রূপাঞ্জনা শেষ মুহূর্তে প্রতিবাদ করেন। জোর গলায় স্ক্রিপ্ট শোনার কথা বলেন। তখন নাকি সরে যান অরিন্দম। তাঁর অফিস থেকে বেরিয়ে কেঁদে ফেলেন অভিনেত্রী। ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার সুবাদে অরিন্দমের সেদিনের অভিপ্রায় বুঝতে অসুবিধে হয়নি বলে দাবি করেছেন রূপাঞ্জনা।
রূপাঞ্জনার দাবি, ঘটনার দিন কিছুক্ষণ পরে নাকি অরিন্দমের অফিসে তাঁর স্ত্রী শুক্লা এসে উপস্থিত হন। তিনি তাঁকে এবং অরিন্দমকে দেখে নাকি অপ্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলেন। যদিও সঙ্গে সঙ্গে অরিন্দম নিজেকে পাল্টে নিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন রূপাঞ্জনা।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট লিখেছেন রূপাঞ্জনা। “মানুষ রোজকার জীবনে লড়াই করতে করতে নানা রকমের মানুষের সম্মুখীন হয়। তাদের মধ্যে কিছু লোক ভাল। কিন্তু কিছু লোক মন্দ। এই রোজকার লড়াই করতে করতে ক্লান্ত হয়ে মানুষের ভিতর থেকে একটা নির্ভীক হওয়ার সত্তা জেগে ওঠে। তখন সে আর ভয় পায় না সত্যিটা তুলে ধরতে, সেই সময়টা কোনও অ্যালার্ম দিয়ে বা পঞ্জিকা দেখে হয় না, অন্তর থেকেই একটা ডাক আসে। সেই ডাককে অগ্রাহ্য না করেই আজ আমার আমার তিক্ততম অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরলাম। একটি জনপ্রিয় মানুষের মুখোশের আড়ালের মানুষটিকে আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম যাতে ভবিষ্যতে এরকম অপরাধ আর না হয়। অনেকেই এর মধ্যে নানা রকমের বিভাজন খোঁজার চেষ্টা করছেন। আপনারা ভুল নন। আপনারা ঠিক। কিন্তু যেই মাপকাঠিতে বিভাজন করেছেন সেটা ভুল। ভুলটা শুধরে দিই, এটা টিএমসি, বিজেপি, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান বা ঘটি-বাঙালের বিভাজন নয়। এটা অনেক বৃহত্তর স্টোরি। মনুষ্যত্বের… ভাল মানুষ, খারাপ মানুষের বিভাজন। যারা এই বিভাজন করে চলেছেন, তাদের বলি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা যদি অন্যায় মনে করেন আপনারা তাহলে মানুষের মনুষ্যত্ব থেকে আগামীদিন বিশ্বাস উঠে যাবে” লিখেছেন রূপাঞ্জনা।
এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরই রূপাঞ্জনার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ঘটনার এতদিন পরে তিনি কেন মুখ খুললেন? সে সময়ই অভিযোগ করেননি কেন? অভিনেত্রীর যুক্তি, সে সব সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের সঙ্গে তিনি চুক্তিবদ্ধ ছিলেন। ওই ধারাবাহিকের ভাবমূর্তি নষ্ট করার মতো কোনও কাজ তিনি করতে পারতেন না। পাশাপাশি ছেলেকে মানুষ করার জন্য অর্থের প্রয়োজন ছিল তাঁর। ফলে কাজের বিনিময়ে যে পারিশ্রমিক পেতেন, সেটাও হারাতে চাননি।
যদিও রূপাঞ্জনার সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিয়েছেন অরিন্দম। ওই প্রজেক্টে স্ক্রিপ্ট রিডিংয়ের পর রূপাঞ্জনা ওয়ার্কশপ করার আগ্রহ প্রকাশ করে নাকি টেক্সট করেছিলেন অরিন্দমকে। সে সব তিনি দেখাতে পারেন বলে দাবি করেছেন। পরে তাঁর ছবি দেখার জন্যও তিনি রূপাঞ্জনাকে আমন্ত্রণ করেছেন বলে জানিয়েছেন। সব শেষে এই অভিযোগ রূপাঞ্জনার পলিটিক্যাল স্টান্ট হতে পারে, সেদিকেও ইঙ্গিত করেছেন অরিন্দম।
সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ জানানোর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় রূপাঞ্জনা দাবি করেছেন, টলিউড ইন্ডাস্ট্রি হিপোক্রিট। কোনও মহিলার সম্মান রক্ষার্থে কোনও মহিলা এগিয়ে আসে না। তবে যাঁরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন রূপাঞ্জনা।
#মিটু যেমন অনেক নগ্ন সত্য সামনে আনে। আবার তেমনই #মিটু-কে ঢাল করে অনেক ভুয়ো অভিযোগও জমা হয়। এক্ষেত্রে কোনটা সত্যি, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
২০২০ সালটা শুরু করুন আমাদের দারুণ সব প্ল্যানার এবং স্টেটমেন্ট মেকিং সোয়েটশার্ট দিয়ে, যেগুলো দারুণ ঝকঝকে তো বটেই, আর একেবারে আপনার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। হুমম…আরও একটা এক্সাইটিং ব্যাপার হল, এখন আপনি পাবেন ২০% বাড়তি ছাড়ও। দেরি কীসের, এখনই POPxo.com/shop-এ যান আর আপনার এই বছরটা POPup করে ফেলুন