প্রকৃতির ভান্ডারে মজুত রয়েছে কত রকমের বিউটি প্রডাক্ট। কিন্তু বেশিরভাগ মহিলাই সেই সব প্রাকৃতিক উপাদানগুলি ব্যবহার না করে ভরসা রাখে বাজার চলতি হরেক রকমের কসমেটিক্সের উপরে। তাতে যে একেবারেই ফল মেলে না এমন নয়! কিন্তু কেমিকাল ভর্তি এই সব কসমেটিক্স দিনের পর দিন ব্যবহার করার কারণে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের বারোটা বেজে যেতে সময় লাগে না। তাই তো বলি, অনেক হল পকেট খসিয়ে কসমেটিক্সের ব্যবহার। এবার না হয় ত্বকের যত্নে কাজে লাগানো যাক নানা প্রাকৃতিক উপাদানকে। তাতে ত্বকের সৌন্দর্য তো বাড়বেই, সেই সঙ্গে স্কিনের কোনও ধরনের ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও আর থাকবে না। সেই সঙ্গে নানাবিধ ত্বকের সমস্যাও দেখবে আর ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না।
প্রাকৃতিক উপাদানের কথা যখন হচ্ছে, তখন নুনকে ( sea salt) বাদ দেওয়া যায় কীভাবে! আসলে একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ত্বকের পরিচর্যায় সৈন্ধব লবণ অথবা হিমালয়ান পিঙ্ক সল্টকে (sea salt for your skin problem) কাজে লাগালে ত্বকের সৌন্দর্য তো বাড়েই, সেই সঙ্গে আরও অনেক উপকার পাওয়া যায়। কারণ এই সব নুনে রয়েছে একাধিক উপকারি উপাদান, যেমন ধরো- সালফার,ক্যালসিয়াম,সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সিলিকন,পটাশিয়াম এবং ব্রোমাইন, যা ত্বকের ভিতরে প্রবেশ করে এমন খেল দেখায় যে নানাবিধ সুফল মিলতে সময় লাগে না (Surprising Beauty Benefits of Salt)। যেমন…
এক কাপ গরম জল নিয়ে তাতে এক টেবিল চামচ সি-সল্ট যোগ করে কিছু সময় রেখে দেওয়ার পর একটা তুলোর সাহায্যে সেই জল সারা মুখে লাগিয়ে কিছু সময় মাসাজ করতে হবে। এইভাবে দিন দুয়েক ত্বকের পরিচর্যা করলেই দেখবে ব্রণর প্রকোপ কমতে সময়ই লাগবে না। শুধু তাই নয়, এই বিশেষ লবণটি ত্বকের সংস্পর্শে আসা মাত্র লোমকূপগুলি খুলতে শুরু করে। ফলে ময়লা জমার আশঙ্কা আর থাকে না। সেই সঙ্গে ত্বকের জেল্লাও বাড়ে চোখে পড়ার মতো।
এনসিবিআই (NCBI)-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি স্টাডি অনুসারে সপ্তাহে ২-৩ দিন স্নানের জলে সৈন্ধব লবণ অথবা হিমালয়ান পিঙ্ক সল্ট মিশিয়ে স্নান করলে (advantages of salt water bath) ত্বকের উপরি অংশে থাকা সুরক্ষা কবজ আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে, সেই সঙ্গে ক্ষতিকর জীবাণুরাও সব মারা পরে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের সংক্রমণের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, নুন জলে স্নান করা শুরু করলে আরও অনেক উপকার মেলে। যেমন ধরো- ত্বকের উপরে জমতে থাকা মৃত কোষের স্তর সরে যায়। ফলে ত্বকের জেল্লা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে স্কিনের ভিতরে প্রদাহের মাত্রাও কমে।
স্নানের জলে সি-সল্ট মেশানোর পাশাপাশি যদি কয়েক ড্রপ ল্যাভেন্ডার তেল যোগ করে স্নান করা যায়, তাহলে নাকি আরও বেশি মাত্রায় উপকার মেলে।
চিকিৎসকেদের মতে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস গরম জলে পরিমাণ মতো সৈন্ধব লবণ মিশিয়ে পান করলে একদিকে যেমন ত্বক ভিতর থেকে সুন্দর হয়ে ওঠে, তেমনি শরীরের ভিতরে জলের ঘাটতি দূর হয়, হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে, শরীরে প্রদাহের মাত্রা কমে, অনিদ্রার সমস্যা দূর হয়, হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে এবং শরীরের ভিতরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগ পায় না। তাই তো বলি, দীর্ঘ দিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে চাইলে নিয়মিত এক গ্লাস করে নুন জল খেতে ভুলো না যেন!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!