HIV বা হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস ইনফেশান (Human Immunodeficiency Virus Infection) এবং AIDS বা অ্যাকোয়ার্ড ইমিউন ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রম (Acquired Immune Deficiency Syndrome) নিয়ে আমাদের মধ্যে এখনও অনেকটা ভয় ও ভ্রান্ত ধারণা কাজ করে। বেশ কিছুদিন আগেও মানুষের মনে এই ধারণা ছিল যে এইডস একটি ছোঁয়াচে রোগ। এই ধারণা একদমই ভুল। বহু অফিসে অনেক কর্মচারীকে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়েছে কারণ তারা এইচআইভি পজিটিভ বা এইডস (AIDS) আক্রান্ত। এই ধরণের পেশাদারি সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সমাজের চোখে এইডস রোগীরা ব্রাত্য। এর একটা কারণ হল এইডস অনেক সময় অসুরক্ষিত যৌন সঙ্গম থেকে হয়ে থাকে। তবে এইডস হওয়ার এটাই একমাত্র কারণ নয়। অন্যের ব্যবহৃত সূচ যদি আপনাকে ইঞ্জেকশান দিতে ব্যবহার করা হয় তাহলেও আপনার এই রোগ হতে পারে। ছোট্ট শিশু এইচআইভি পজিটিভ নিয়ে জন্মায় কারণ তার বাবা বা মা কেউ একজন এই ভাইরাসের ধারক। তাই বিয়ের আগে রক্তপরীক্ষা করা আবশ্যক বলে মনে করছেন ডাক্তাররা।
Table of Contents
- এইডস কী? (What Is Aids)
- এইডস এর প্রধান লক্ষণ (Symptoms of AIDS)
- এইচ আই ভি কী? (What Is HIV)
- এইচ আই ভির লক্ষণ কি কি (Symptoms of HIV)
- কীভাবে এইচ আই ভি/এইডস সংক্রমণ হয়ে থাকে? (How Is HIV Transmitted?)
- এইচ আই ভি/এইডস সংক্রমণের তিনটি ধাপ (Stages of HIV Infection)
- এইচ আই ভি/এইডস টেস্ট (Testing) – H2
- এইচ আই ভি/এইডস এর প্রতিকার(Treatment/Preventions)
অন্যান্য রোগের মতো সঠিক সময়ে ধরা পড়লে এইডস-এর সঠিক চিকিৎসা সম্ভব। কিন্তু তার আগে এটা জানা প্রয়োজন এই এইডস এর প্রধান লক্ষণ গুলো (HIV AIDS Symptoms) ঠিক কীরকম। কারণ দেখা গেছে অনেক সময় আমরা এই লক্ষণ গুলোকেই মামুলি বলে উড়িয়ে দিয়েছি। যা পরে অনেক বড় বিপদ ডেকে এনেছে। তাই আগে থেকে জেনে নেওয়া প্রয়োজন এইডস-এর লক্ষণগুলো কী কী।
এইডস কী? (What Is Aids)
যাদের রক্তে এইচ আই ভি পজিটিভ ভাইরাস আছে তাদের এইডস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। আসলে এইচভির পরিণত ষ্টেজই হল এইডস (HIV AIDS Symptoms)। তবে তার মানে এই নয় যে যারাই এইচ আই ভি পজিটিভ (এইডস এর লক্ষণ) তারা প্রত্যেকেই এইডস-এ আক্রান্ত হবে। যাদের এইচ আই ভি পজিটিভ নয়, তারাও অনেক সময় এইডসে আক্রান্ত হন। কারণ বিরল প্রজাতির কিছু ক্যানসার থেকেও এইডস হতে পারে।
এইডস এর প্রধান লক্ষণ (Symptoms of AIDS)
কোনও রোগী এইডসে আক্রান্ত কী না, তা জানার উপায় রয়েছে। এইডসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে নানারকমের লক্ষণ দেখা দেয়, একটু ভাল করে লক্ষ্য করলে তা বুঝতে পারবেন –
- শুকনো কাশি
- নিমোনিয়া
- কোনও কাজ না করেও ক্লান্তি
- এক সপ্তাহেরও বেশি যদি ডায়েরিয়ার সমস্যা হয়
- অবসাদ
- নার্ভের সমস্যা
- অস্বাভাবিক দ্রুত ওজন হ্রাস
- বারবার জ্বর আসা
- ঘাড়ে বা বগলের কাছে ফোলাভাব
- গলা খুশখুশ
- স্মৃতি হারিয়ে ফেলা
এইচ আই ভি কী? (What Is HIV)
এইচআইভি এক ধরণের ভাইরাস যা আপনার ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধকারী (এইচ আই ভি লক্ষন) ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয়। সেই ইমিউন সিস্টেম যা এতদিন বিভিন্ন রোগ ব্যাধির হাত থেকে আপনার শরীরকে রক্ষা করে এসেছে।
এইচ আই ভির লক্ষণ কি কি (Symptoms of HIV)
যদিও কিছু কিছু লক্ষণ দেখে এটা ধারণা করা যায় যে হয়ত মানুষটি এইচ আই ভি-তে আক্রান্ত, কিন্তু আমরা সবসময়ে পরামর্শ দিয়ে থাকি যে সত্যতা যাচাই করার জন্য চিকিৎসকের কাছে গিয়ে অবশ্যই নিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। তবে কিছু কিছু লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা করবেন না –
- জ্বর এবং অত্যধিক শীত লাগা
- রাতে খুব বেশি ঘাম হওয়া
- মাংসপেশিতে টান এবং সারা শরীরে যন্ত্রণা
- শরীরে র্যাশ বেরনো
- গলায় ব্যথা
- ক্লান্তি
- গলা ফুলে যাওয়া
- মাউথ আলসার
কীভাবে এইচ আই ভি/এইডস সংক্রমণ হয়ে থাকে? (How Is HIV Transmitted?)
সাধারণত বিভিন্ন বডি ফ্লুইড বা শারীরিক তরলের মাধ্যমে এক জন থেকে আরেক জনের শরীরে এই ভাইরাস (Aids Symptoms In Bengali) ছড়িয়ে পড়ে। রক্ত, সিমেন, ভ্যাজাইনাল ও রেকটাল ফ্লুইড এবং মাতৃদুগ্ধের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা অনেক বেশি মাত্রায় থাকে (এইচ আই ভির লক্ষণ)। এছাড়াও যেভাবে এই ভাইরাস অন্যের শরীরে প্রবেশ করতে পারে সেগুলি হলো –
১। এইচআইভি সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে ভ্যাজাইনাল বা অ্যানাল সেক্সের মাধ্যমে। সমকামী পুরুষ যারা কোনও সুরক্ষা ছাড়া অন্য পুরুষের সঙ্গে যৌন সংসর্গ করেন তাদের মধ্যে এই আশঙ্কা বেশি থাকে।
২। অসুরক্ষিত বা অন্যের ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, সূচ ব্যবহার করলে।
৩। ট্যাটু করলে বা নাক/কান পিয়ারসিং করলে। যদি এই যন্ত্রগুলো স্টেরিলাইজ না করা হয় তাহলে এই আশঙ্কা থাকে।
৪। কোনও সম্ভাব্য মা যদি এইচ আই ভি পজিটিভ হয় তাহলে জন্মের পর তার সন্তানের রক্তেও এই ভাইরাস থাকতে পারে।
৫। স্তন্যপানের সময়।
৬। বাচ্চার খাবার তাকে দেওয়ার আগে নিজে চিবিয়ে দেওয়ার জন্য
৭। এইচ আই ভি পজিটিভ আছে এমন কেউ যদি আপনাকে রক্ত দেয় তাহলেও এই ভাইরাস (এইডস এর প্রধান লক্ষণ) আপনার শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
এইচআইভি সংক্রামক কখন হয়? (When is HIV contagious?)
যদিও এইচ আই ভি বা এইডস সংক্রামক নয়, তবে বাড়াবাড়ি হলে তা সংক্রমণের পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে। এইচ আই ভি সংক্রমণের প্রথম পর্যায়ে রক্ত এবং বীর্যে জীবাণুর মাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে। এই সময়ে মানবদেহে খুব সহজেই এই আই ভি-র জীবাণু প্রবেশ করতে পারে। যদিও প্রাথমিক পর্যায়ে বাইরে থেকে বোঝা যায় না, তবে এই সময়েও কিন্তু আই আই ভি-তে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে এই জীবাণু প্রবেশ করতে পারে। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি কারও শরীরে এইডসের লক্ষণ চোখে পড়ে কিন্তু কোনও জীবাণু ধরা না পড়ে, সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র স্পর্শ থেকে এই জীবাণুসংক্রমণ সম্ভব নয়।
এইচ আই ভি/এইডস কখন সংক্রমিত হয় না (Myths About HIV and AIDS)
১। কোনও এইডস রোগীকে আপনি ছুঁলে।
২। কোনও এইডস রোগীর সঙ্গে করমর্দন করলে বা তাকে জড়িয়ে ধরলে।
৩। এইচ আই ভি পজিটিভ আছে বা এইডসে আক্রান্ত এমন কারও সঙ্গে এক টেবিলে বা এক থালায় খেলে বা তার গ্লাসে কোনও পানীয় পান করলেও এইডস হয় না।
৪। এইডস রোগীর তোয়ালে, বিছানা বা বালিশ ব্যবহার করলে।
৫। কোনও এইডস রোগী যে টয়লেট ব্যবহার করছেন, সেই একই টয়লেট ব্যবহার করলে।
৬। এইডস রোগীকে কোনও পোকা বা মশা কামড়ালে সেই পোকা বা মশা যদি আপনাকে কামড়ায় তাহলেও এই রোগ সংক্রমিত হয় না।
এইচ আই ভি/এইডস সংক্রমণের তিনটি ধাপ (Stages of HIV Infection)
এইচ আই ভি সংক্রমণ (HIV Symptoms In Bengali) তিনটি স্তরে হয়ে থাকে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে এটি আপনার ইমিউন ব্যবস্থাকে পুরো নষ্ট করে দিতে পারে। এই স্তর গুলি হলো –
প্রথম স্টেজ – অ্যাকিউট এইচ আই ভি ইনফেকশান (Acute HIV Infection)
প্রথম প্রথম এইচ আই ভি দ্বারা আক্রান্ত (এইডস রোগের লক্ষণ) হলে তার বিশেষ কোনও প্রভাব শরীরে পড়ে না। তবে আস্তে আস্তে তার প্রভাব দেখা যায়। দেখা যায় প্রতি ২ থেকে ৬ সপ্তাহর মধ্যে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এই শারীরিক অবস্থাকে বলা হয় রেট্রোভাইরাল সিনড্রম বা প্রাথমিক এইচ আই ভি সংক্রমণ। এইডসের এই প্রথম স্টেজে ফ্লুর মতো জ্বর হয় আবার এক দু সপ্তাহ পরে সেরেও যায়।এছাড়াও এই স্তরে দেখা এইডস -এর যে লক্ষণগুলো (HIV Symptoms In Bengali) দেখা যায় সেগুলো হল মাথাব্যথা (Headache), পেটখারাপ (Diarrhea) , মাথাঘোরা (Nausea) ও বমি (Vomiting), ক্লান্তি (Fatigue), পেশীর ব্যথা (Muscle Pain), গলা ব্যথা (Throat Pain), গাঁট ফুলে যাওয়া (Swollen Lymph Nodes), শরীরের ঊর্ধ্বাংশ বা টরসোতে লাল লাল গোটা গোটা দাগ (Red Rashes), তীব্র জ্বর (High Fever) ইত্যাদি। অসুরক্ষিত যৌন সঙ্গম (Unprotected Sex) বা অন্যান্য কারণে এইচ আই ভির ভাইরাস আপনার শরীরে প্রবেশ করতে পারে। আপনি এই ভাইরাস প্রতিরোধ করার জন্য অ্যাণ্টি এইচ আই ভি ওষুধ খেতে পারেন। তবে তার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন কারণ এই ওষুধ বা যার ডাক্তারি নাম পিইপি, তার অনেক ক্ষতিকর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে।
দ্বিতীয় স্টেজ – ক্রনিক এইচআইভি ইনফেকশান (Chronic HIV Infection)
প্রথম স্টেজের ফ্লুর লক্ষণ চলে যাওয়ার পর যে সময় আসে ডাক্তারি পরিভাষায় তাকে অ্যাসিম্পটোম্যাটিক (Asymptomatic) বা ক্লিনিক্যালি লেটেন্ট পিরিয়ড (Clinically Latent Period) বলে অর্থাৎ এই সময় এইচ আই ভি সংক্রমণ বা এইডস এর লক্ষন (HIV Symptoms In Bengali) বোঝা যায় না। আর সেই কারণেই এই দ্বিতীয় ষ্টেজ খুবই ভয়ঙ্কর। আপনি বুঝতেই পারবেন না আপনার শরীরে কতটা শক্তিশালী ভাইরাস বাসা বেঁধে আছে। আর নিজের অজান্তেই এইচ আইভি এর ভাইরাস অন্যের শরীরে স্থানান্তরিত হয়ে যাবে। ক্রনিক এইচ আই ভি ইনফেকশানের এই দ্বিতীয় ষ্টেজ দশ বছর পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
দ্বিতীয় ষ্টেজ চলাকালীন যদি আপনি সেটা বুঝতে না পারেন এবং চিকিৎসা না করান, তাহলে এইচ আই ভি ভাইরাস আপনার ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধকারী ক্ষমতা একদম নষ্ট করে দেবে। তাছাড়া এটি নষ্ট করে দেবে রক্তের সি-ডি-ফোর-টি কোষ। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে বোঝা যাবে আপনার রক্তে এই কোষ কত পরিমাণে আছে। যখন ইমিউন সিস্টেম ভেঙে পড়ার কারণে আপনার রক্তে এই কোষের সংখ্যা কমে যাবে আপনি আরও দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়বেন। তবে আস্বস্ত হওয়ার মতো খবর হল, সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সঠিক ওষুধ খেলে এবং ঠিকঠাক খাওয়া দাওয়া করলে এই ষ্টেজ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
তৃতীয় বা অ্যাডভান্স ষ্টেজ – এইডস (Acquired Immunodeficiency Syndrome – AIDS)
আগেই বলেছি এইচ আই ভি এবং এইডস এই দুটো শব্দ নিয়ে আমাদের মধ্যে প্রচুর ভুল ধারণা আছে। এইচ আই ভি পজিটিভ মানেই কিন্তু এইডস রোগী নয়। এইচ আই ভি পজিটিভের শেষ দশা বা তৃতীয় ষ্টেজ হল এইডস (AIDS)। তৃতীয় বা অ্যাডভান্সড ষ্টেজ তখনই দেখা যায় যখন কারও রক্তে প্রতি মাইক্রো লিটারে সি-ডি-ফোর-টি কোষ ২০০র নীচে নেমে যায়। এছাড়াও কিছু রোগ আছে যেগুলি এইডস এর সাথে জড়িত। যেমন কাপোসি’স সারকোমা (Kaposi’s Sarcoma) যা হলো এক ধরণের চর্মরোগ বা ত্বকের ক্যানসার এবং নিউমোসাইটিস নিউমোনিয়া (Pneumocystis Pneumonia), ফুসফুসের এক ধরণের রোগ যদি কারও হয়ে থাকে তবে তাদের এইডস হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। এইচ আই ভি সংক্রমনের এই তৃতীয় বা ষ্টেজ স্তরে যে লক্ষণগুলো (HIV এর লক্ষণ) দেখা যায় সেগুলো হল – সব সময় ক্লান্ত থাকা, ফোলা লিম্ফ নোড যা মূলত দেখা যায় গলা ও পেট ও থাইয়ের মাঝবরাবর অংশে, জ্বর যা দশ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে, রাত্রে ঘাম হওয়া, হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া, ত্বকের উপর বেগুনি রঙের দাগ যেগুলো কিছুতেই দূর হয় না, হাঁপানি, অনেক দিন ধরে ডায়রিয়া হওয়া, মুখ, গলা ও ভ্যাজাইনাতে ছত্রাক সংক্রমণ, হঠাৎ করে রক্তক্ষরণ বা চোট পাওয়া ইত্যাদি।
যদিও এখনও পর্যন্ত এই রোগের একদম সঠিক কোনও চিকিৎসা পদ্ধতি বা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি, তবে যারা সঠিক সময়ে এইডস এর লক্ষণ (HIV এর লক্ষণ) বুঝতে পেরে ডাক্তারের কাছে গিয়ে চিকিৎসা করান, তারা অনেক বেশি দিন বাঁচেন। কিন্তু যারা সমাজ ও লোকলজ্জার ভয়ে সিম্পটম জানা সত্ত্বেও চিকিৎসা করান না, তারা ৩ বছরের বেশি বাঁচেন না।
এইচ আই ভি/এইডস টেস্ট (Testing) – H2
এইচ আই ভি বা এইডসের কোনওরকম লক্ষণও যদি শরীরে দেখা যায়, সেক্ষেত্রে দেরি না করে সত্বর চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। যাতে অন্য কারও মধ্যে এই জিনবানু সংক্রমণ না হয়, সেজন্য প্রাথমিক স্তরেই পরীক্ষা প্রয়োজন। ইদানিং চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির ফলে ‘ফোরথ জেনারেশন এইচ আই ভি টেস্ট’ করানো সম্ভব। আগে শুধুমাত্র এইচ আই ভি-র অ্যান্টিবডি শরীরে রয়েছে কিনা তা জানা যেত পরীক্ষার মাধ্যমে; তবে এখন এইছ আই ভি অ্যান্টিবডির সঙ্গে p24 antigens-ও ধরা যায় যার ফলে অনেক আগেই চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব।
এইচ আই ভি/এইডস এর প্রতিকার(Treatment/Preventions)
এইচ আই ভি-র চিকিৎসা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে রোগীর শারীরিক অবস্থার উপরে। সাধারণত যদি দেখা যায় যে এইছ আইভি-তে আক্রান্ত রোগীর শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব একটা কম নয়, সেক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। নানা ধরনের অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধ প্রয়োগ করা হয় রোগীর উপরে। যতক্ষণ না পর্যন্ত রোগীর রক্তে এইচ আই ভি-র জীবাণুর আর কোনও অংশবিশেষও না থাকে, ততক্ষন পর্যন্ত এই ওষুধের প্রয়োগ করা হয়।
তবে আইচ আই ভি বা এইডসের লক্ষণ ধরা পড়তে যদি বেশ অনেকটা সময় লেগে যায় সেক্ষেত্রে অন্য ধরনের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। যেহেতু এইচ আই ভি রোগীর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দিন দিন হ্রাস পেতে থাকে, কাজেই অন্য ধরনের জীবাণু সংক্রমণ যেমন হেপাটাইটিস বা যক্ষ্মার মতো মারাত্মক অসুখও শরীরে দানা বাঁধতে পারে। এছাড়া নার্ভের সমস্যা, হার্টের সমস্যা বা ক্যান্সারের মতো কঠিন সমস্যাও দেখা দিতে পারে অনেকসময়ে। সেক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে চিকিৎসকের উপরে নির্ভর করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।
আরও পড়ুন –