চুলের সমস্যায় ভোগেন না এমন মেয়ে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। চুল পড়ছে, খুস্কি হচ্ছে, চুলের ভলিউম কমে যাচ্ছে ইত্যাদি হাজার সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন আমাদের কত কথাই না শুনতে হয়।তা চুলের সমস্যা যখন একগাদা হেয়ার প্যাক মেখে নাও চুলে বা পার্লারে পড়িমরি করে দৌড়াও। সবচেয়ে সোজা সমাধান তো হাতের কাছে রয়েইছে। ঘচাং করে লম্বা চুল কেটে নাও। আরে বাপু যে কোনও সমস্যা বুঝতে হলে প্রথমেই তার গোড়ায় পৌঁছতে হয়। আর চুলের গোড়া মানে হল স্ক্যাল্প। এখান থেকেই তো চুল গজায় নাকি। সুতরাং ত্বকের যেমন ডিটক্সিফিকেশান প্রয়োজন সেরকম স্ক্যাল্পকেও টক্সিন মুক্ত করার দরকার আছে। চারদিকে এত দূষণ, ধুলো ধোঁয়া ইত্যাদি নানা কারণে স্ক্যাল্পের ছিদ্রও বন্ধ হয়ে যায়।স্ক্যাল্প পরিষ্কার থাকলে চুলের বৃদ্ধিও অনেক তাড়াতাড়ি হয়। চুলের জন্য তো অনেক ছোটাছুটি করলেন এবার স্ক্যাল্প ডিটক্স করে দেখুন আর নিজের স্ক্যাল্পকেও (scalp) যত্নে (take care) রাখুন ।
কী ধরণের সমস্যা হতে পারে
তৈলাক্ত স্ক্যাল্প (oily scalp)
তৈলাক্ত স্ক্যাল্প মানে সিবাম গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত তেল বের হওয়া। ফলে চুল চিটচিটে হয়, বিশ্রী গন্ধ হয়। যারা খুব বেশি চিন্তা করে বা নানা রকম তেল মাখে তাদের এই ধরণের স্ক্যাল্পের সমস্যা হতে পারে। কারো যদি বেশি ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা থাকে তাহলেও এই সমস্যা হয়।
অনুভূতি প্রবণ স্ক্যাল্প (sensitive scalp)
সেনসিটিভ স্ক্যাল্প মানেই হল সিবামের অভাব। যে কারণে স্ক্যাল্প ড্রাই বা শুষ্ক হয়ে পড়ে। মাথা তখন অসম্ভব চুলকোয়।সেনসিটিভ স্ক্যাল্প বেশিরভাগ সময়েই জেনেটিক হয়। তবে দীর্ঘক্ষণ এসিতে থাকলে, চুলে রঙ করলে বা রোদ্দুরে ঘুরলেও স্ক্যাল্প সেনসিটিভ হয়ে পড়ে। তবে সবচেয়ে বেশি ড্রাই স্ক্যাল্প দেখা দেয় ভুল শ্যাম্পু ব্যবহার করলে। সঠিক শ্যাম্পু বুঝতে না পারলে কোনও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
খুশকি ও চুল পড়া (dandruff and hairfall)
এই দুটো সমস্যা যাকে বলে চিরকালীন। আমাদের নতুন কোষ তৈরি হতে তিরিশ দিন মতো সময় লাগে। দূষণ, হরমোন ইমব্যালেন্স, রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে বা ভিটামিনের অভাবে নতুন কোষ তৈরি হতে দেরি হয়। তখন এই মৃত কোষ মাথায় জমতে থাকে একেই বলে খুশকি। যার জন্ম হয় কালের নিয়মে তার মৃত্যুও হয়। সুতরাং নতুন চুল যদি জন্মায় তাহলে চুল পড়েও যায় অর্থাৎ তার মৃত্যুও হয়। প্রতিদিন একশটা চুল পড়া চিন্তার নয়। কিন্তু তার বেশি হলে এবং তার সঙ্গে চুল না বাড়লে চিন্তার কারণ আছে।
কেন করাব ডিটক্স (detox)
আমরা চুলে যে রঙ করি বা হেয়ার স্প্রে বা সিরাম, জেল ইত্যাদি লাগাই সেগুলো স্ক্যাল্পে আটকে থাকে। সেগুলো সব পরিষ্কার করার জন্যই এই ট্রিটমেন্ট করা দরকার। এতে স্ক্যাল্পের পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক থাকে। আমাদের স্ক্যাল্পে পিএইচ ব্যালেন্স থাকে ৪.৫ থেকে ৫.৫। যখন সেটা ৭ পার হয়ে যায় তখনই সমস্যা দেখা দেয়। এই ট্রিটমেন্টে প্রথমে ভিটামিনের একটি জেল মাখানো হয়। জেল গরম হয়ে স্ক্যাল্পের বন্ধ মুখ খুলে দেয়। এর পর স্ক্যাল্পের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করা হয়। লাগানো হয় ডিটক্সিফাই মাস্ক। সব শেষে স্ক্যাল্পের সমস্যা অনুযায়ী সিরাম লাগানো হয়। মনে রাখবেন এটি একটি প্রফেশানাল ট্রিটমেন্ট। তাই নিজে নিজে কিছু করার চেষ্টা করবেন না।
পোস্ট ট্রিটমেন্ট কেয়ার (post treatment care)
প্রতিদিনের ডায়েটে ভিটামিন ই, ভিটামিন বি৫ ও বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন গাজর, শিম, ব্রকলি, ধনেপাতা, ক্যাপ্সিকাম, পার্সলে পাতা এগুলো রাখুন।
টিনফুড, চিনি, কৃত্রিম খাবার এড়িয়ে চলুন।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন। বিছানার চাদর, বালিশের ঢাকা প্রতি ১৫ দিন অন্তর পাল্টান।
ছবি সৌজন্য ঃ পেক্সেল ডট কম
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!