সকাল নটা থেকে সন্ধ্যা ছটা পর্যন্ত বসের তাক-ধুমাধুম সামলে শরীর-মনের হাল, বেহাল হতে তো সময় লাগে না। উপরন্তু বাড়ি পৌঁছেও হাজার ঝক্কি সামলাতে হয়। কখনও বরের ঘ্যানঘ্যান, তো কখনও শাশুড়ির ঠেঁস, সঙ্গে লেজুড় হয় ইএমআই, হোম লোনের চিন্তাও। সব মিলিয়ে চিন্তায় চিন্তায় এমন দশা যে নিজের নাম বদলে ‘চিন্তামনি’ রাখার ইচ্ছা যে কখনও সখনও সবার মাথাতেই আসে, সেই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তাই তো বলি বন্ধু, সময় থাকতে থাকতে হালটা ধরুন, না হলে কিন্তু স্ট্রেস-অ্যাংজাইটি চক্করে হাজার খানেক রোগ ঘাড়ে চেপে বসবে, সেই সঙ্গে ব্রেনটাও একদিন ফ্রাই হয়ে যাবে, তখন কিন্তু আরও বিপদ! তাই সাবধান! কিন্তু প্রশ্ন হল, আজকাল যা পরিস্থিতি তাতে কাজের চাপ তো কমবেই না, উল্টে বাড়বে। ফলে স্ট্রেসও বাড়বে। আর ঘর-সংসারের চিন্তা তো রোজের সঙ্গী, তাহলে এমন অবস্থায় সুস্থ থাকার আদৌ কি কোনও উপায় আছে? আছে বই কী! কী উপায়? যোগ গুরুদের মতে নিয়মিত মিনিটকুড়ি অনুলোম-বিলোম প্রাণায়ম করলে স্ট্রেস-অ্যাংজাইটি তো দূরে পালাবেই, সঙ্গে শরীর বাবাজিও যেমন চাঙ্গা থাকবে, তেমনই ব্রেনের ক্ষমতাও বাড়বে। তবে এখানেই শেষ নয়, নিয়মিত এই যোগাসনটি করলে ছোট-বড় একাধিক শারীরিক ( Health) সমস্যাও দূরে থাকতে বাধ্য হবে।
১. ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে
এক্কেবারে ঠিক শুনেছেন! এই আসনটি করার সময় রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যে কারণে মেটাবলিজম রেটের এতটাই উন্নতি ঘটে যে শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমার আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে রক্তে উপস্থিত টক্সিক উপাদানগুলি বেরিয়ে যাওয়ার কারণেও ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। যোগ গুরুদের মতে অনুলোম-বিলোমের সঙ্গে যদি নিয়ম করে Ashtanga Yoga করা যায়, তাহলে তো অল্প সময়েই শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরে যায়। সেই সঙ্গে রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল লেভেলও নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
২. হার্টের ক্ষমতা বাড়ে
টানা ১২০ দিন এই আসনটি করলে হার্টের ক্ষমতা তো বাড়েই, সঙ্গে আর্টারিতে ব্লকেজ হওয়ার আশঙ্কাও আর থাকে না। শুধু তাই নয়, এই যোগাসনটির গুণে সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়, যে কারণে করনারি ডিজিজ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। এমনকী, angina-এর মতো রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কাও কমে।
৩. মেন্টাল হেলথের জন্য উপকারী
”Breathing is a protein-diet for your brain’। এই কথাটা নিশ্চয় শুনেছেন? তাই তো বলি, অল্প সময়েই যদি ব্রেনের ক্ষমতাকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে তুলতে চান, তাহলে সপ্তাহে দিন চারেক অনুলোম-বিলোম প্রাণায়ম করতে ভুলবেন না! কারণ, আসনটি করার সময় যে ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া হয়, তাতে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন ব্রেনে গিয়ে পৌঁছায়, যে কারণে ব্রেন সেলের ক্ষমতা এতটাই বেড়ে যায় যে স্মৃতিশক্তির উন্নতি তো ঘটেই, সঙ্গে মনোযোগ ক্ষমতাও বাড়ে। তবে এখানেই শেষ নয়, এই আসনটি নিয়মিত করলে স্ট্রেস লেভেল কমতে যেমন সময় লাগে না, তেমনই দুশ্চিন্তা, মানসিক অবসাদ এবং অ্যাংজাইটি মতো সমস্যাও দূরে পালায়। তাই বুঝতেই পারছেন, মেন্টাল হেলথকে ঠিক রাখতে এই আসনটি করার প্রয়োজন কতটা!
৪. শরীর রোগমুক্ত হয়
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে বায়ু, পিত্ত এবং কফ, এই তিনটি উপাদানের মধ্যে ভারসাম্য বিগড়ে গেলেই ছোট-বড় নানা শারীরিক সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তাই কোনও ভাবে যদি এই তিনটি উপাদানের মধ্যে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা যায়, তাহলেই শরীর নিয়ে আর কোনও চিন্তা থাকবে না। কিন্তু প্রশ্ন হল, এমনটা সম্ভব হবে কীভাবে? এক্ষেত্রে অনুলোম-বিলোম আসনটির উপর ভরসা রাখতে হবে। কারণ, বায়ু, পিত্ত এবং কফের মধ্যে ভারসাম্য বজার রাখতে এই আসনটির জুড়ি মেলা ভার।
৫. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে
অনুলোম-বিলোম আসনটি করার সময় রক্তে মিশে থাকা নানা বিষাক্ত উপাদান শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, যার প্রভাবে ত্বক ভিতর থেকে সুন্দর হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে ব্রণ এবং pigmentation-এর মতো সমস্যাও ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
আসনটি করার পদ্ধতি
পদ্মাসন বা সুখাসনে বসুন। খেয়াল রাখবেন মেরুদণ্ড যেন সোজা থাকে। এবার চোখ বন্ধ করে বুড়ো আঙুল, বাঁ নাকের ছিদ্রের উপর রেখে শুধুমাত্র ডান চিদ্র দিয়ে জোড়ে শ্বাস টেনে কেয়েক সেকেন্ড ধরে রেখে ডান ছিদ্র বন্ধ করে বাঁ নাকের ছিদ্র দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এই ভাবে মিনিটদশেক করার পরে ডান ছিদ্র বন্ধ রেখে বাঁ নাকের ছিদ্র দিয়ে শ্বাস টেনে ডান নাকের ছিদ্র দিয়ে ছাড়ুন। এই নিয়ম মেনে আসনটা করলে ব্রেনের দু’দিকেই সমানভাবে অক্সিজেন পৌঁছে যাবে, যে কারণে আরও দ্রুত উপকার মিলবে।
picture courtesy: youTube
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!