প্রথমেই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শুভেচ্ছা রইল। বলা ভাল আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারীদিবসের শুভেচ্ছা। সকাল থেকে একাধিক শুভেচ্ছা বার্তা আসছে, একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট সামনে আসছে। আজ দিনটি বিশেষভাবে কীভাবে উদযাপন করা যায়? কিন্তু এই বিশেষ দিনের বিশেষত্ব কী? কেন বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে একটি দিনকে বেছে নেওয়া হল আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করার জন্য, এই প্রশ্ন কি কখনও আমাদের মাথায় এসেছে? আসলে আমরা যেমন আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শুভেচ্ছা পাঠাই। এই দিনের সঙ্গে অতঃপ্রতভাবে জড়িয়ে রয়েছে শ্রম, অর্থ ও উপার্জন। তার জন্য এক সুদূরপ্রসারী লড়াই ও আন্দোলন। সাম্য়তার দাবিতে আন্দোলন (history of International womens day)।
একটি কথা প্রচলিত রয়েছে, প্রতি নারীই শ্রমজীবী শুধু কয়েকজন পারিশ্রমিক পান। এই কথা কতটা সত্যি ভেবে দেখেছেন। বিশ্বের সেই সব প্রত্যেক নারীর কথাই ভাবুন, যাঁরা হোম মেকার। গৃহস্থালির কাজে যে শ্রম দেওয়া হয়, সেই শ্রমের কি কোনও হিসেব রাখা হয়? নাকি সেইসব শুধুই লেবর অফ লভ? একাধিক গবেষণায় এই তথ্যই প্রকাশ্যে এসেছে যে, গৃহস্থালির শ্রমের পরিমাণ অনেক বেশি যার পরিবর্তে কোনও পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না, অর্থাৎ এই শ্রমের ভিত্তিতে কোনও উপার্জন নেই। এখনও যদি আপনি কোনও কারখানা বা কোনও কনস্ট্রাকশন সাইটে যান, দেখবেন অনেক মহিলাই সেখানে কর্মরত কিন্তু তাঁর শ্রমের পরিবর্তে তিনি যথার্থ পারিশ্রমিক পান কি?
সবাই কি কাজের সঠিক পারিশ্রমিক পান?
অথচ, নারীর কাজের অধিকার, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং কাজের বৈষম্যের অবসানের জন্যই গড়ে উঠেছিল আন্দোলন। শুরু হয়েছিল নারী দিবস পালন। একশো বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও সেই লক্ষ্যে এখনও পৌঁছাতে পারেনি বিশ্ব (history of International womens day)। শুধু একটি দিন হিসেবেই হয়তো রয়ে গিয়েছে।
এইখানে বলে রাখা ভাল, নারী দিবস মানে নারীত্ব উদযাপন নয়। নারী দিবস মানে নিজের অধিকার উদযাপন। নিজের অধিকার, নিজের শ্রম ও নিজের ন্যায্য পারিশ্রমিক বুঝে নেওয়া। নারী দিবসের ইতিহাস (history of International womens day)সবার আরও একবার মনে করা প্রয়োজন। আসুন সেইসব ইতিহাসের দিনে ফিরে যাই আবার…
ঘরের সব বিষয় মাথায় রাখতে হয়, শ্রম নয়?
নারী দিবস প্রথম পালিত হয় ১৯০৯ সালে
আন্তর্জাতিক নারী দিবস প্রথম পালিত হয় ১৯০৯ সালে। সেই বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি আমেরিকায় প্রথম নারী দিবস পালিত হয়। ১৯০৮ সালে সোশ্যালিস্ট পার্টি অফ আমেরিকা নিউ ইয়র্কে বস্ত্রশ্রমিকরা তাঁদের কাজেল সম্মান আদায়ের লক্ষ্যে ধর্মঘট শুরু করেন। নির্দিষ্ট সময়সীমায় কাজ এবং সমান পরিমাণ বেতনের দাবিতে চলে আন্দোলন।
রুটি ও শান্তির দাবিতে লড়াই
সাল ১৯১০। কোপেনহেগনের উদ্যোগে ১৯ মার্চ অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি ও সুইৎজারল্য়ান্ডে প্রথমবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন হয়। প্রত্যেক মহিলার কাজের অধিকার, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও কাজের সাম্যতার দাবিতে প্রচুর মানুষ প্রতিবাদে নামেন। এই সময়েই রাশিয়ায় মহিলারা ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রেড ও পিস অর্থাৎ রুটি ও শান্তির দাবিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করেন (history of International womens day), একইসঙ্গে বিরোধিতা করেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধেরও। ৮ মার্চ ইউরোপে মহিলারা বিশাল মিছিল করেন।
৮ মার্চের ঘোষণা
এরপর আরও অনেক বছর কেটে গিয়েছে। এরপর সাল ১৯৭৫। সেই সময় রাষ্ট্রসংঘের তরফে ৮ মার্চ-কে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ সদস্য রাষ্ট্রদের নারী অধিকার ও বিশ্ব শান্তি রক্ষার জন্য রাষ্ট্রসংঘ দিবস হিসেবে ৮ মার্চকে ঘোষণা করার আহ্বান জানায়।
নারী দিবস মানে নিজের অধিকার উদযাপন
বিশ্বজুড়ে সমান পারিশ্রমিক, কাজের ক্ষেত্রে লিঙ্গের সাম্যতার জন্য় আজও লড়াই চলছে। কখনও কোনও পরিবারে, কখনও কর্পোরেট হাউজে কখনও বা অন্য কোনও ক্ষেত্রে। যে কারণকে লক্ষ্য করে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেই লক্ষ্যে এখনও পৌঁছায়নি বিশ্ব। কাজের ক্ষেত্রে বা নিজের উপার্জনের অধিকার বুঝে নিতে হবে নিজেদেরই। আসুন, আজ আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবসে সেই সব আন্দোলন-বিপ্লবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা প্রতিজ্ঞা করি, কাজের ক্ষেত্রে সমস্ত অসাম্যের বিরুদ্ধে আমরা রুখে দাঁড়াব। সব শেষে, বিশ্বের প্রত্যেক মহিলাকে আবারও আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানালাম।
POPxo এখন চারটে ভাষায়!ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন
#POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন
নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!