বিয়ের কার্ড, কথাটা শুনতে ছোট হলেও, আসলে একটু খতিয়ে দেখতে গেলে এরই মধ্যে লুকিয়ে আছে আপনার পুরো বিয়েটা! ভেবে দেখুন তো, পাত্র-পাত্রীর ঠিকুজিকুলুজি, কোথায় বিয়ে, কবে বিয়ে, রিসেপশন কবে, সবকিছুই কিন্তু জানা যাবে আপনার বিয়ের কার্ডটি (wedding invite) দেখে। বাড়িতে কেউ বিয়ের নিমন্ত্রণ করতে এলে, তাঁরা চলে যাওয়ার পর আমরা কার্ড খুলে আবার ভাল করে দেখতে বসি কিনা? সেখানে দেওয়া পরিচয় দেখে বাঁকা মন্তব্য, এ মা, বাড়ির ম্যাপটাই তো ঠিক দেয়নি, ইশ, দ্যাখ, কত্তগুলো বানান ভুল গোছের মন্তব্যও তো করে থাকি, তাই না? সুতরাং, বিয়ের কার্ড সত্যিই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর এই কার্ডের দিকেই আমরা সবচেয়ে কম খেয়াল রাখি এমন প্রায় যেমন-তেমন করে কার্ড কিনি এবং ছাপতে দিই। অথচ বিয়ের শপিং, ভেনু-মেনুর মতো কার্ড বেছে নেওয়ার জন্যও বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা দরকার। এখানে বিয়ের কার্ড কীভাবে বাছবেন এবং কী-কী বিষয় তখন মাথায় রাখবেন (things to remember), সেই সম্পর্কেই কিছু টিপস (tips) দেওয়া হল…
১. কার্ডের সংখ্যা
প্রথমেই আসবে কার্ডের সংখ্যা! আগে নিমন্ত্রণের লিস্ট নিয়ে বসুন। দেখুন, মোট কতগুলো কার্ড লাগছে। এখন আবার অনেককেই ই-ইনভাইট পাঠানো হয়। মানে, আপনার রাঙাপিসি কিংবা বিল্টুমামা যদি বিদেশে থাকেন, তা হলে তো আর তাঁদের বিদেশে কুরিয়ার করে কার্ড পাঠাবেন না! তাঁদের পাঠাতে হবে ই-নিমন্ত্রণপত্র, অর্থাৎ, ই-মেলে বিয়ের কার্ডের সফট কপি। তাই লিস্টের দুটো ভাগ করবেন। একটা সফট কপি, একটা হার্ড কপি, মানে হাতে গিয়ে কার্ড। দরকারের চেয়ে কয়েকটা বেশিই ছাপিয়ে রাখবেন। অনেক সময় কোনও কার্ড খারাপ বেরোয় কিংবা কারও নাম ভুলে গিয়েছেন বলে মনে পড়ে, তাই!
২. কার্ডের বাজেট
সংখ্যাটা মোটামুটি ফাইনাল হলে এবার আসবে বাজেটের প্রশ্ন। আপনি যদি কার্ডের দোকান থেকে রেডিমেড কার্ড কিনে তাতে স্রেফ নিজের বক্তব্যটুকু ছাপাতে চান, তা হলে আলাদা খরচ। আর যদি ফরমায়েশি আর্টওয়র্ক নিয়ে পুরো কার্ডটাই কাস্টমাইজড করতে চান, তা হলে আলাদা খরচ! দ্বিতীয় ক্ষেত্রে খরচ একটু বেশি, কিন্তু কার্ডটিও হবে এক্সক্লুসিভ। ই-ইনভাইট তৈরির চার্জ আলাদা পড়বে। অনেক অনলাইন সাইট আছে, যাতে আপনি নিজেই ডিজাইন করে নিতে পারবেন, আবার অনেক আর্টিস্টও এই কাজটি করে দিতে পারেন নির্দিষ্ট দক্ষিণার বিনিময়ে। কার্ডের দোকানেই এই ধরনের লোকের সন্ধান থাকে। অনলাইনেও খোঁজ করতে পারেন ওয়েডিং কার্ড ডিজাইনার বলে।
৩. কার্ডের ডিজাইন
আমরা এখনও অন্ধের মতো দোকানে গিয়ে কার্ডের ডিজাইন খুঁজি! তার চেয়ে আগে থেকে একটু হোমওয়র্ক করে গেলে মন্দ হয় না। বেনারসির রং তো দোকানে যাওয়ার আগেই ঠিক করে ফেলেন! বন্ধুর বিয়ের মেকআপ আর্টিস্টকেও আগে থেকেই বুক করে রেখে দেন। তা হলে কার্ডের বেলায় অযত্ন কেন? আগে থেকে ভেবে রাখুন আপনি কী ধরনের কার্ড চান, ছিমছাম, নাকি জাঁকজমকওয়ালা! বাঙালি ধরনের নাকি বলিউডি স্টাইলের! সেই অনুযায়ী দোকানে গিয়ে নমুনা দেখাতে বলুন।
৪. নিমন্ত্রণের খুঁটিনাটি লেখা
কার্ডে কী লেখা হবে, আগে থেকে তার একটা খসড়া করে রাখুন এবং শুদ্ধ বাংলায়, সঠিক বানানে সেই লেখাটা পরিষ্কার করে লিখে নিয়ে যান। কার্ডের দোকানে গিয়ে লেখার নমুনা দেখে নিজের বিয়ের কার্ডটি তৈরি করতে দেবেন না প্লিজ! এ ছাড়াও খেয়াল রাখবেন, নিমন্ত্রিতদের মধ্যে অবাঙালি আছেন কিনা, তা হলে তাঁদের জন্য ইংরেজিতে ওই একই লেখা অনুবাদ করে নিয়ে যান। বাংলা কার্ডের সঙ্গে-সঙ্গে কয়েকটা ইংরেজি কার্ডও করিয়ে রাখবেন। তবে কোনও প্রয়োজন না হলে শুধু-শুধু নিজেকে ভারী মর্ডান দেখানোর জন্য ইংরেজিতে কার্ড ছাপাবেন না!
এরপরে আসবে কার্ডের উপরে নাম লেখার প্রশ্ন। পুরো পরিবারকে নিমন্ত্রণ করতে চাইলে তা কার্ডের খামে পরিষ্কার করে উল্লেখ করবেন। আর ব্যক্তিবিশেষকে নিমন্ত্রণ করতে চাইলে তার পুরো নামটা লিখে দিন। বাংলা অথবা ইংরেজি, কোন ভাষায় লিখবেন, সেটা নির্ভর করবে কাকে নিমন্ত্রণ করছেন, তাঁর উপর।
৫. বিয়ে বাড়ির রুট ম্যাপ
কার্ডের সঙ্গে অবশ্যই এটা দেওয়া প্রয়োজন। কীভাবে আপনার বিয়ের ভেনুতে সকলে পৌঁছবেন, তা বুঝিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। রুট ম্যাপ দেওয়া সম্ভব না হলে, কাছাকাছি বাস স্টপেজ, ল্যান্ডমার্ক ইত্যাদি দিতে ভুলবেন না। সঙ্গে RSVP মানে, দরকারে কাকে ফোন করা যাবে, এমন দুটো নম্বরও দিন। কেউ সেদিন ভেনু খুঁজে না পেলে, সেখানে ফোন করে জিজ্ঞেস করে নেবেন।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!