শুধু কি ফেলুদার, আপনারও তো আছে মগজাস্ত্র? তা হলে সেটাকে অমন শোপিসের মতো সাজিয়ে রেখেছেন কেন? একটু কাজে লাগান! তাতে বুদ্ধির ধার একটু বাড়বে বই কী! ভাবছেন, কাজে লাগাবেন কীভাবে? না, না কোনও গোয়েন্দাগিরি করতে হবে না। বরং এখানে বাংলা-হিন্দি মিশিয়ে কয়েকটা জমাটি থ্রিলারের (Thriller Movies) লিস্ট দিয়ে দিলাম আমরা। এই উইক এন্ডে ঝটপট সেগুলো দেখে ফেলুন। আর সিনেমা শেষ হওয়ার আগেই বুঝে ফেলার চেষ্টা করুন, কী হতে চলেছে। কাছাকাছি একটা এন্ডিং আন্দাজ করতে পারলেই বুঝবেন, বুদ্ধিতে এখনও জং পড়েনি! প্রসঙ্গত, ফেলুদা এবং ব্যোমকেশ সিরিজকে আমরা এই তালিকার বাইরে রাখলাম! কারণ, ওগুলি ইতিমধ্যেই সর্বকালের সেরা থ্রিলারের তালিকায় ঢুকে রয়েছে!
এই বাংলা সিনেমাগুলি রহস্য-রোমাঞ্চে ভরা!
২২ শে শ্রাবণ
থ্রিলারের লিস্টে এই ছবিটিকে না রাখলেই নয়। সৃজিত মুখার্জির পরিচলনা মনে রাখার মতো। সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করেছেন প্রসেনজিৎ, পরমব্রত এবং গৌতম ঘোষের মতো অভিনেতারা। গল্পটাও বেশ টানটান। কলকাতা শহরে একের পর এক খুন হচ্ছে। এদিকে পুলিসের শত চেষ্টার পরেও অধরা সিরিয়াল কিলার। শেষে কিছুটা বাধ্য হয়ে প্রাক্তন পুলিশ কর্তা প্রবীর রায়চৌধুরীর (প্রসেনজিৎ) হাতে এই কেসের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়। এর পরই গল্প বাঁক নেয় অন্য দিকে। ধীরে-ধীরে ঘটনার জালে জড়িয়ে পরে বাকি চরিত্ররাও। এভাবেই গল্প এগিয়ে চলে তার অন্তিম লগ্নের দিকে। এই ছবির শেষটাই কিন্তু সবচেয়ে চমকপ্রদ।
গুপ্তধনের সন্ধানে
হঠাৎ মারা যান হরি নারায়ণ সিংহরায়। অনেকেরই সন্দেহ তাঁর মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। এমন জল্পনার মাঝেই মণিকান্তপুরের সিংহ য় বাড়িতে এসে পৌঁছন হরি নারায়ণের ভাগ্নে আবির (অর্জুন চক্রবর্তী)। সঙ্গে তাঁর কাকা, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের প্রোফেসর সুবর্ণ সেন (আবির)। সেখানে থাকাকালীনই তাঁরা হঠাৎ জানতে পারেন সিংহ রায় বাড়িতে রয়েছে গুপ্তধন। কিন্তু সেটা পেতে হলে সমাধন করতে হবে একাধিক ধাঁধার! তারপর গল্পে আসে নানা মোচড়! প্রসঙ্গত, এই ছবির দ্বিতীয় ইনস্টলমেন্ট ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’ সদ্য মুক্তি পেয়েছে।
শবর সিরিজ
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের কলমে জন্ম নেওয়া ডিটেকটিভ শবর এখন সিনেমার পর্দাতেও সমান জনপ্রিয়। কলকাতা পুলিশের এই জাঁদরেল অফিসার যেমন বুদ্ধিমান, তেমনই চৌখস। তাঁর নজর এড়িয়ে কারও পক্ষেই বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। আর সেকথাই বারে-বারে ধরা পরেছে ‘ঈগলের চোখ’, ‘গোয়েন্দা শবর’ এবং ‘আসছে আবার শবর’-এর মতো সিনেমায়। তবে এই সিরিজে সবচেয়ে সেরা বোধ হয় ‘আসছে আবার শহর’। গল্পটির কেন্দ্রে আছেন তিন মহিলা, যাঁরা নানা কারণে খুন হন। নানা প্রসঙ্গে উঠে আসে বেশ কিছু ডেটিং সাইটের নামও। কলকাতা পুলিশ যখন কিছুই করে উঠতে পারছেন না, তখন কেস যায় ডিটেকটিভ শবরের হাতে। শুরু হয় নতুন করে তদন্ত। সন্দেহ দানা বাঁধে বিজয় সেন (ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত) নামে একজন ব্যক্তিকে ঘিরে। তিনিই কি সবক’টা খুন করেছেন? নাকি দায়ী অন্য কেউ? টানটান গল্পের শেষটা মন্দ নয়। অভিনয়ে শাশ্বত চ্যাটার্জির কাজ সত্যিই মনে রাখার মতো। অরিন্দম শীলের পরিচালনাও খারাপ নয়।
শুভ মহরত
এটা একটু অন্য স্বাদের থ্রিলার ছবি। তাই একবার না দেখলেই নয়। ছবির গল্প বুনোট বাঁধে একটা খুনকে কেন্দ্র করে। সিনেমার শুটিং ফ্লোরে খুন হন অভিনেত্রী কাকলি। কে খুন করেছে তাঁকে? তাঁর স্বামী নয়তো? গল্প এগতে থাকে। জড়িয়ে পরে আরও অনেক চরিত্রে। সামনে আসতে থাকে একের পর এক ঘটনা। শেষ পর্যন্ত বুঝে ওঠা যায় না খুনি কে। তাই তো টানটান হয়ে বসে থাকতে হয় ছবির শেষ পর্যন্ত। পরিচালক হিসেবে ঋতুপর্ণ ঘোষের কাজ মন্দ নয়। নানা চরিত্রে অভিনয় করেছেন শর্মিলা ঠাকুর, রাখি এবং নন্দিতা দাসের মতো পাকা অভিনেত্রীরা। তাই গল্প, অভিনয় এবং পরিচালনার গুণে এই ছবি সত্যিই অনন্য।
আরও পড়ুন: Konkona Sen অভিনীত ৫টি অসামান্য সিনেমা!
ডার্ক চকোলেট
শিনা বোরা হত্যা মামলাকে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে এই ছবির চিত্রনাট্য। পরিচালনা করেছেন অগ্নিদেব চ্যাটার্জি। নামী ব্যবসায়ী ইন্দ্রাণী মুখার্জি এবং পিটার মুখার্জির মেয়ে শিনা বোরাকে হত্যা করল কে? এই প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা হয়েছে সারা ছবি জুড়ে। বাস্তবের ঘটনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই যেহেতু ছবিটি তৈরি করা হয়েছে তাই এর গল্প বেজায় টানটান। পরিচালনাও মন্দ নয়।
পাঁচটি বলিউডি থ্রিলার
দৃশ্যম
গোয়ার ইন্সপেক্টর জেনারেল মীরা দেশমুখের একমাত্র ছেলে নিখোঁজ। সে খুন হয়েছে, নাকি অন্য কিছু, তা নিয়েই গল্প এগোতে থাকে। ঘটনার নাম জড়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ী বিজয় সালগাঁওকর আর তাঁর পরিবারের। ছবির গল্প এতটাই টান-টান যে, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত না দেখে উঠতে পারবেন না। শেষটাও একেবারে অন্য রকমের। পরিচালক নিশিকান্ত কামথের পরিচালনা যেমন মনে রাখার মতো, তেমনই সকলের অভিনয়ও বেজায় নজরকাড়া।
তিন
৭০ বছর বয়সি জন বিশ্বাস তাঁর স্ত্রী এবং নাতনিকে নিয়ে কলকাতায় থাকেন। সব ঠিকই চলছিল। হঠাৎ একদিন তাঁর নাতনি নিখোঁজ হল। শত চেষ্টাও খোঁজ মিলল না তাঁর। এদিকে এই কেস নিয়ে পুলিশের আগ্রহ কমছে। কিন্তু জন চেষ্টা থামাতে নারাজ। তিনি একাই শুরু করেন তদন্ত। সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেন প্রাক্তন পুলিশ অফিসার মার্টিন দাস (নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি)। গল্প এগতে থাকে। শেষে কী হয় সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: সর্বকালের সেরা পাঁচটি রোম্যান্টিক সিনেমা
ওয়াজির
গল্পটা দু’জন মানুষকে ঘিরে। একজন হলেন এটিএস অফিসার দানিশ আলি (ফরহান আখতার)। অন্যজন দাবার শিক্ষক পণ্ডিত ওমকার নাথ ধর। সমান্তরাল লাইনে চলতে থাকা দু’জন মানুষের জীবন একদিন হঠাৎ করেই মিশে যায়। গল্প বাঁক নেয় এক অন্য দিকে। রহস্যের জালও আরও ঘনীভূত হতে থাকে। আরও টানটান হয় গল্পের বাঁধন। সঙ্গে বিজয় নাম্বিয়ারের পরিচালনা এবং অমিতাভ-ফারহানের অভিনয় এক অন্য় মাত্রায় নিয়ে যায় এই ছবিকে। থ্রিলার, মনের সূক্ষ অনুভূতি এবং প্রতিহিংসার মিশেলে এই সিনেমার গল্প সত্যি অন্যরকম।
অন্ধাধুন
অন্ধ পিয়ানোবাদক আকাশ (আয়ুষ্মান খুরানা) ঘটনাটক্রে সাক্ষী হয়ে যায় এক প্রাক্তন ফিল্মস্টারের মার্ডারের! ফিল্মস্টারের স্ত্রী সিমি, আকাশের প্রেমিকা সোফি, ইন্সপেক্টর মনোহর, হাতুড়ে ডাক্তার স্বামী, সকলের মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে ছবির গল্প! যে-কোনও উৎকৃষ্ট থ্রিলারের মতো এই ছবিটিরও পরতে-পরতে আছে বিস্ময়!
রাজি
৭১-এর ইন্দো-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লেখা হয়েছে এই ছবির চিত্রনাট্য। ছবির গল্প এক সাধারণ কাশ্মীরি মেয়ে, সেহমত খানের (আলিয়া ভট্ট)। যাঁর বিয়ে হয় এক পাকিস্তানি আর্মি অফিসার (ভিকি কৌশল) সঙ্গে। এখান থেকেই গল্প বাঁক নেয় এক অন্যদিকে। দেশের স্বার্থে পাকিস্তানে থাকাকালীন গপ্তচরের কাজ শুরু করেন সেহমত। তাঁর পাচার করা তথ্যের উপর ভিত্তি করে সাফল্য পায় ভারত। যুদ্ধে অনেকটাই পিছিয়ে যায় পাকিস্তান। কিন্তু সেহমতের কী হবে? ও কি পারবে বেঁচে ফিরতে? গল্পের পরতে পরতে রয়েছে টানটান উত্তেজনা। মেঘনা গুলজারের পরিচালনাও নজরকাড়া। তিনি বেশ যত্ন নিয়েই তৈরি করেছেন এই ছবি। গল্প, অভিনয় এবং পরিচালনা, তাই সব মিলিয়ে এই সিনেমা সেরা থ্রিলার ছবির লিস্টে জায়গা পাওয়ার যোগ্য।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!