করোনা (coronavirus) আতঙ্কে কাঁপছে গোটা বিশ্ব। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত শুধুমাত্র মানব দেহেই করোনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা গিয়েছে। বহু মানুষ আক্রান্ত, মত। আবার সুস্থ হয়ে উঠছেন বড় সংখ্যক মানুষ। কিন্তু প্রথমবার কোনও পশুর দেহে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ পাওয়া গেল। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, নিউ ইয়র্কে একটি বাঘের দেহে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ পাওয়া গিয়েছে।
সূত্রের খবর, আক্রান্ত এই বাঘটি (Tiger) আমেরিকার নিউইয়র্কের ব্রংক্স চিড়িয়াখানায় থাকে। মালায়ান নামে এই স্ত্রী এই বাঘটির বয়স চার বছর। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ওই চিড়িয়াখানায় পশুদের দেখভাল করা কর্মীদের থেকেই বাঘটির শরীরে এই ভাইরাস প্রবেশ করেছে। গত ১৬ মার্চ থেকে বন্ধই রয়েছে চিড়িয়াখানাটি।
মালায়ান ছাড়াও ওই চিড়িয়াখানারই আরও পাঁচটি বাঘ ও সিংহের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, আক্রান্ত মালায়ানের সঙ্গেই থাকত তার বোন আজুল। আজুল ছাড়াও আরও দুটি বাঘ ও তিনটি আফ্রিকান সিংহের শরীরেও করোনার উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। তবে এদের ছাড়া এই চিড়িয়াখানার অনান্য পশু-পাখিদের মধ্যে করোনার কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি।
Tiger at New York's Bronx Zoo tests positive for coronavirus
— ANI Digital (@ani_digital) April 5, 2020
Read @ANI Story | https://t.co/YBsiQBHfEC pic.twitter.com/RUCGsNaaxE
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, পশুদের মধ্যেও করোনা ভাইরাস ছড়ালে আগামী দিনগুলি আরও কঠিন হতে পারে ৷ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে নেমেছে USDA এবং CDC। রাজ্য ও স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে বলে জানা গিয়েছে। প্রাণী ও রাজ্য জনস্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা এ ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এই চিড়িয়াখানাটির পাশাপাশি অন্য সকল চিড়িয়াখানার পশু-পাখিদের পরীক্ষা করা হবে। তবে, এই বিষয়টি ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন ফর এ্যানিমেল হেলথেও জানানো হবে।
অন্যদিকে কোভিড-১৯-এর আগ্রাসন রুখতে দেশকে এ বার ছোট ছোট এলাকাভিত্তিক গণ্ডিতে বেঁধে ফেলার কৌশল নিয়েছে সরকার। এই ভৌগোলিক ক্ষেত্রীয় বিভাজনের উদ্দেশ্য, যেখানে রোগটা ছড়িয়েছে, সেখানে থেকে রোগটা যেন কোনও মতেই অন্য এলাকায় পৌঁছতে না পারে। যাতে নোভেল করোনাভাইরাসের বিস্তারের শৃঙ্খলটা ভাঙা যায়।
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকার কঠোর ও অনমনীয় হতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। প্রতিটি গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় নাকি কাজ হবে পঞ্চমুখী। প্রতিটি ভৌগোলিক গণ্ডিকে বিচ্ছিন্ন রাখা হবে। সামাজিক সংসর্গ থেকে দূরে থাকার বিষয়টি কঠোর ভাবে পালন করা হবে। অনেক বেশি নজরদারি চালানো হবে। প্রয়োজন বুঝলেই কোয়রান্টিন করে দেওয়া হবে। সংক্রমণের প্রকৃত ছবিটা জানতে সরকার খুব শীঘ্রই র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করতে চলেছে বলে খবর।
এক-একটি ছোট এলাকা বা ক্লাস্টারের সীমাও কার্যত সিল করা হবে। অত্যাবশ্যক পরিষেবায় যুক্তরা বাদে আর সকলের ক্ষেত্রে যেখান থেকে বেরনো বা ঢোকা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত হবে। বন্ধ থাকবে সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের যান চলাচল, স্কুল-কলেজ ও দফতর। বাড়ি বাড়ি চলবে সমীক্ষা। কারও উপসর্গ দেখা দিলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই পরিস্থিতিতে প্রথম কোনও পশুর দেহে করোনা ভাইরাসের উপসর্গের খোঁজ মেলায় চিন্তা বাড়ল বিশেষজ্ঞদের।
মূল ছবি প্রতীকী, ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে।