শিরোনাম পড়ে নিশ্চয়ই ভাবছেন যে, এটা আবার একটা বিষয় হল আলোচনা করার! ফুটপাথ (footpath) কিংবা রাস্তার ধারের স্টল (street shopping) থেকে জিনিস কেনা, এ আবার এমন কী রকেট সায়েন্স, যে তার জন্যও আবার টিপস নিতে হবে! সোজা যাব, দোকানে জিনিস পছন্দ করব, দরদাম করব, দামে পোষালে নেব, না হলে এগিয়ে যাব, দোকানি পিছু ডাকবে, তারপর একটা ঠিকঠাক রফা হলে ব্যাজার মুখ করে জিনিস নিয়ে টাকা মিটিয়ে বাড়ি ফিরে ভাবব, নাঃ, দারুণ কিনেছি, ব্যস! এর মধ্যে আবার মাথা ঘামানোর কী আছে! কিন্তু যদি আমরা বলি আছে, অনেক কিছুই আছে। বিশ্বাস না হলে গুনে-গুনে ১০টি টিপস (tips) দিচ্ছি, পড়ে দেখুন, তা হলেই বুঝতে পারবেন যে, কেন এই ধরনের বালখিল্য বিষয় নিয়ে আসলে আমরা আলোচনা করছি!
ফুটপাথ কিংবা রাস্তার ধারের দোকানে কেনাকাটা করার কায়দা
১. কোথায় যাচ্ছেন: কলকাতায় কতগুলো বিখ্যাত ফুটপাথ শপিংয়ের জায়গা আছে। যেমন ধরুন, গড়িয়াহাট, নিউ মার্কেট চত্বর, ধর্মতলা, হাতিবাগান, শ্যামবাজার, কলেজ স্ট্রিট ইত্যাদি। এর মধ্যে প্রতিটি জায়গার আলাদা-আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। শপিং (shopping) করতে যাওয়ার সময় সেগুলো মাথায় রাখুন। একটু বুঝিয়ে বলা যাক। গড়িয়াহাট চত্বরে দুটো জিনিস মূলত পাওয়া যায়, ঝুটো গয়না এবং শাড়ি। এ ছাড়া আছে বেডশিট, বেডকভার, পিলো কভার, ঘরোয়া টুকিটাকি, ঘর সাজানোর জিনিস, ওড়না, জুতো, ব্যাগ ইত্যাদি। অন্যদিকে নিউ মার্কেট অঞ্চলে আপনি ঝুটো গয়নার সঙ্গে-সঙ্গে ব্যাগ, জুতো, ওয়েস্টার্ন পোশাকও পাবেন। ফলে বুঝতেই পারছেন, দুই জায়গায় আপনার শপিংয়ের কায়দাও এক হওয়া উচিত নয়।
২. কী কিনতে যাচ্ছেন: এটাও কিন্তু সমান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর উপরে নির্ভর করবে আপনার সময় ও পরিশ্রম। মানে, আপনি শাড়ি কিনতে গেলে যতটা সময় নিয়ে যাবেন, বেডশিট কিনতে ততটা সময় লাগবে না। মেলামাইনের ডিনার সেট কিংবা শো পিস কিনতে তো আরও কম সময় লাগবে। কেন? কারণ, এসব জিনিসের রোডসাইড দোকান অনেক কম। তাই ঘোরাঘুরি কিংবা সময়ও কম!
৩. কখন যাবেন: দরাদরি করে জিনিস কিনতে যাওয়ার সবচেয়ে আদর্শ সময় হল দুপুরবেলা! কারণ, তখনই ভিড় সবচেয়ে কম থাকে। সক্কাল-সক্কাল যাবেন না, বউনির সময় গিয়ে দাম নিয়ে ঝুলোঝুলি করবেন না আর সন্ধেবেলাও যাবেন না।
রাস্তার ধার থেকে শপিং করার টিপস
শুনতে অবাক লাগলেও, নীচে দেওয়া শপিং টিপসগুলি মেনে চললে লাভবান হবেন আপনিই!
১. কী-কী কিনবেন, তার একটা লিস্ট তৈরি করে নিন। সেই লিস্টের বাইরে বেরবেন না। তাতে সময়, পরিশ্রম এবং পকেট, সবই বাঁচবে।
২. আগে পুরো চত্বরটা ঘুরে একবার দেখে নিন। কোথায়-কোথায় আপনার চাহিদার জিনিসটি পাওয়া যাচ্ছে তার একটা সার্ভে করে নিন, তারপর দরদাম করতে এগোন।
৩. মার্কেট সার্ভে যখন করছেন, দাম সম্বন্ধে একটা আইডিয়া করে রাখুন তখনই। পরে দরদাম করার সময় কাজে আসবে।
৪. দরদাম করারও একটা নিয়ম আছে। কস্টিউম জুয়েলারি কিংবা ব্যাগের ক্ষেত্রে দরদামের রেঞ্জটা একটু বেশি হয়। কিন্তু তা বলে দোকানি যা দাম বলল, আপনি তার অর্ধেক বললেন, এমনটাও করবেন না। মোটামুটি একটা রেঞ্জ থেকে শুরু করুন। অবাস্তব কিছু বললে আল্টিমেটলি আপনারই ক্ষতি!
৫. রোডসাইড শপিংয়ের সময় একটা ব্যাপার মাথায় রাখবেন। ছোটখাটো জিনিস, ঠিক আছে। কিন্তু বড় কিছু কিনতে গেলে এমন কোনও দোকান থেকে কিনুন, যেখানে আপনাকে পাকা বিল দেবে। নইলে পরে কোনও খুঁত বেরলে বদলাতে অসুবিধে হবে।
৬. আপনি থাকেন গড়িয়ায় আর একগাদা শাড়ি কিনে বসলেন হাতিবাগান থেকে, এমনটা করার আগে ভেবে নিন। যদি আপনি শাড়ির কোয়ালিটি সম্বন্ধে একশো শতাংশ নিঃসন্দেহ হন, তা হলে ক্ষতি নেই। নইলে বদলাতে গেলে কিন্তু আবার উত্তর-দক্ষিণ ছোটাছুটি করতে হবে!
৭. শপিং করে বাড়ি ফিরেই জিনিসগুলো একবার ভাল করে দেখেবুঝে নিন। যাতে কোনও গন্ডগোল হলে পরের দিনই তা পাল্টে নিয়ে আসতে পারেন। পোশাক হলে পুরো ভাঁজ খুলে দেখুন, গয়না হলে আলোর মধ্যে দেখে নিন পাথরটাথর সব জায়গামতো আছে কিনা।
৮. বিল রেখে দেবেন অতি অবশ্যই। যদিও সব দোকানে বিল দেয় না, কিন্তু দিলে তা যত্ন করে রেখে দেবেন, যতক্ষণ না সেই জিনিসটি অন্তত একবার ব্যবহার করে ফেলছেন।
৯. চৈত্র সেলের সময় স্ট্রিট শপিংয়ে গেলে দামি জিনিস ফুটপাথ থেকে কিনবেন না। জানবেন, সারা বছরের ডেড স্টক সকলে এই সময় ঝেড়ে ফেলতে চায়। সুতরাং, ঠকে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল।
১০. যে-কোনও সময় কিনলেও, জিনিস বদলানোর সেরা সময় হল দুপুরবেলা। কারণ, তখন দোকান অপেক্ষাকৃত ফাঁকা থাকে। জিনিস বদলানোর সময় এমনিতেই দোকানি রেগে থাকে। কাজেই ভরা ব্যবসার সময় তার দোকানে গিয়ে জিনিস পাল্টাব বলে আবদার না করাটাই ভাল!
মূল ছবি সৌজন্য: ইনস্টাগ্রাম
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!