একে অপরের হাত ধরে এগিয়ে যাওয়ার নামই তো সম্পর্ক। বিপদে পাশে থাকবেন, ভাল-মন্দ সব কথা শেয়ার করবেন, তবেই না সম্পর্কের ভিত শক্ত হবে। কিন্তু তা বলে পার্টনারের উপর পুরো মাত্রায় নির্ভরশীল (dependency) হয়ে পড়লে তো বিপদ!
এই নিয়ে বিশেষজ্ঞদেরও একই মত। তাঁদের মতে, একে-অপরের উপর বেশি মাত্রায় নির্ভরশীল হওয়াটা ঠিক নয়। তাতে নাকি সম্পর্কের (relationship) মজাটাই হারিয়ে যায়। যদিও এর পিছনে কিছু কারণও রয়েছে।
নির্ভরশীলতা মানেই অতিরিক্ত দায়িত্ব। আর এমন দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে অনেকেরই হাল বেহাল হতে সময় লাগে না।সেখান থেকে বিরক্তি জন্ম নেয়। আর তার থেকে আবার ঝগড়া-অশান্তি দানা বাঁধে। ফলে সম্পর্কে টানাপোড়েন বাড়তে থাকে। তাই তো হাতে সময় থাকতে-থাকতেই সাবধান হন, তাতে আপনারই মঙ্গল! কিন্তু প্রশ্ন হল, বুঝবেন কীভাবে যে আপনি বিপদসীমা পেরিয়ে গিয়েছেন? সেই লক্ষণগুলি বুঝে নিন আমাদের কাছ থেকে।

স্বামীর মুডের উপরে আপনার মুড নির্ভর করে
অনেকের ছোট্ট-ছোট্ট অনুভূতিও পার্টনারের মুডের উপর নির্ভর করে। বর খুশি থাকলে বউও খুশি, না হলে দু’জনেই মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে। এটা কিন্তু একেবারেই স্বাভাবিক নয়।
আপনারও নিশ্চয়ই কিছু জিনিসে আনন্দ হয়। কিছু-কিছু বিষয়ে মনখারাপও লাগে, তা হলে তা প্রকাশ করতে ভয় পান কেন? মনে রাখবেন, প্রতিটা মানুষেরই একটা নিজস্বতা আছে, যা হারিয়ে ফেললে আপনার কোনও অস্তিত্বই থাকবে না। তাই নিজের মতো করে বাঁচতে শিখুন।
বরের মন খারাপ হলে আপনিও বেজার মুখে বসে থাকবেন কেন! বরং পার্টনারকে এমন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার রাস্তা দেখান। আর নিজের মতো করে আনন্দ খুঁজে নিন। দেখবেন, স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই যখন নিজের মতো করে বাঁচার সুযোগ পাবেন, তখন সম্পর্ক এক অন্য মাত্রা পাবে।
অর্থনৈতিক দিক থেকে আপনি সাবলম্বী হতে চান না
হতেই পারে আপনার বর মোটা মাইনের চাকরি করেন। কিন্তু তাই বলে আপনি চাকরি ছেড়ে ঘরে বসে থাকবেন কেন? বরং এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিজের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সম্পর্কে একটু তলিয়ে ভাবুন।
আপনার বরের মানসিকতা খারাপ। তিনি আপনাকে অর্থনৈতিক ভাবে সাহায্য করবেন না, এমন কথা বলছি না! কিন্তু প্রশ্ন হল, সুযোগ থাকতে কেনই বা কারও উপর নির্ভরশীল হবেন। জানবেন, এমন নির্ভরশীলতা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ক্ষেত্রে ভাল নয়।
তাছাড়া নিজের হাত খরচার জন্য বরের মুখাপেক্ষী হয়ে বসে থাকাটাও তো কোনও কাজের কথা নয়! তাই চাকরিবাকরি ছেড়ে যাঁরা বরের হোটেলে থাকার প্ল্যান করেছেন, তাঁরা আরও একবার সব দিক ভেবে নিন। তারপর সিদ্ধান্ত নিন।
একা একা কোনও কাজই করতে পারেন না?
বাজার করা থেকে ব্যাঙ্কে যাওয়া, সবেতেই কি বরের লেজুড় হন? তা হলে তো চিন্তার সময় এসে গেছে। অল্পবিস্তর নির্ভরশীল হলে ক্ষতি নেই। কিন্তু এ-টু-জেড যদি বরের হাত ধরে করেন, তা হলে তো ভাল দেখায় না!
সারাক্ষণ এমন আঠার মতো লেগে থাকলে নিজের পায়ে দাঁড়াবেন কীভাবে শুনি? অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা শুধু সম্পর্কের বারোটা বাজায় না, সেই সঙ্গে আপনার আত্মবিশ্বাসও কিন্তু তলানিতে এসে ঠেকে, যা কিন্তু সব দিক থেকেই চিন্তার বিষয়। তাই সময় থাকতে-থাকতে একটু সামলে নিন নিজেকে। না হলে আগামী দিনে সমস্যা আরও বাড়বে!
আপনার জীবনের ছোটখাটো সিদ্ধান্তও আপনি নিতে পারেন না

উত্তর যদি ‘হ্যাঁ’ হয়, তা হলে তো আর কিছু বলার নেই! সেক্ষেত্রে সম্পর্কের মজাটা যে আর কিছু দিনেই ফিকে হয়ে যাবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কেন এমন নেতিবাচক কথা বলছি, তাই ভাবছেন? মনে রাখবেন, আপনার পার্টনার কিন্তু আপনার বাবা-মা নন। তাই তিনি যদি আপনার জীবনের ছোটখাটো নানা বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেন, তা হলে আপনাদের মাঝে দূরত্ব তো বাড়বেই।
তাছাড়া যে মানুষ নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারেন না, তাঁর শারীরিক বয়স বাড়লেও, মানসিক ভাবে তিনি যে একটুও বড় হননি, তাতে তো কোনও সন্দেহ নেই। আর এমন মানুষের সঙ্গে প্রেমের মজা জমবে কীভাবে বলুন! তাই ভাল চান তো, নিজেকে একটু বদলে ফেলুন।
মনে রাখবেন, আপনারও কিন্তু একটা পরিচয় রয়েছে। তাই আপনার জীবন কোন পথে এগোবে, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধুমাত্র আপনারই আছে। প্রয়োজনে পার্টনারের সাহায্য নিতেই পারেন। কিন্তু সব বিষয়ে তাঁর উপর ভরসা করে থাকাটা কোনও কাজের কথা নয়।
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!