মুচমুচে কুড়মুড়ে, টক ঝাল মিষ্টি এই সান্ধ্যকালীন জলখাবারের হরেক নাম আছে। দিল্লিতে এর নাম গোলগাপ্পা (golgappa) আবার মুম্বাইতে একে বলা হয় পানিপুরি (panipuri)। মধ্যপ্রদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এর নাম গুপছুপ। কেন? না সন্ধেবেলা টিউশন সেরে ফেরার পথে বা ঘরের কাজকর্ম সেরে কোনও এক গৃহবধূ এটা লুকিয়ে লুকিয়ে খায়। আর সবার প্রিয় সেই জিনিসটাকেই আমরা এখানে মানে কলকাতায় (Kolkata) বলি ফুচকা (Phuchka)। আর লেখার শুরুতে এটাকে সন্ধের জলখাবার বলে চিহ্নিত করলেও সারা দিন যে কোনও সময়ে গপাগপ ফুচকা (Phuchka) খেতে পারে এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল হবে না এখানে। আর আমি নিশ্চিত আপনিও ফুচকাপ্রেমীর (Phuchka) দলেই আছেন। তাহলে আর দেরি না করে এই শহরের সেরা ফুচকা (Phuchka) জয়েন্টের খোঁজে বেরিয়ে পড়া যাক। শুরু হোক আমাদের ফুচকা (Phuchka) অভিযান। কী যাবেন তো?
টপ ফাইভের তালিকায় যারা
বিবেকানন্দ পার্কে দিলীপদার ফুচকা
এই ফুচকা হচ্ছে কলকাতায় ওয়ার্ল্ড ফেমাস! যারা ফুচকা অন্ত প্রাণ তারা জানে দিলীপদার ফুচকার কী মহিমা! দেবশ্রী রায় থেকে বিপাশা বসু সবাই দিলীপদার ফুচকা বলতে অজ্ঞান। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বিপাশাই একবার এক সাক্ষাৎকারে কলকাতার দিলীপদার ফুচকার কথা উল্লেখ করেছিলেন। ব্যাস রাতারাতি স্টার হয়ে যান দিলীপদা। ১৯৮০ সাল থেকে দিলীপদার পরিবার ফুচকা বিক্রি করছেন। বিকেল তিনটে থেকে এখানে ফুচকা পাওয়া যায়। দিলীপদার নীল রঙের ঠেলার খ্যাতিও কম নয়। সবাই একে বলে বিএমডাব্লিউ মার্সিডিজ।
কীভাবে যাবেনঃ সাউদার্ন এভিনিউ ধরে সোজা গিয়ে কমলা গার্লস স্কুলের খোঁজ করুন। তার উল্টো দিকেই বিবেকানন্দ পার্ক। রাসবিহারী দিয়ে এলে মেনকা কবীর রোড ধরে সোজা চলে আসুন। লেক কালীবাড়ি ক্রস করলেই পৌঁছে যাবেন।
ট্রাই করুনঃ দিলীপদার স্পেশাল ককটেল ফুচকা
খরচঃ প্লেট পিছু ৩০ থেকে ৪০ টাকা
বরদান মার্কেটে শর্মাজির ফুচকা
কৃষ্ণকান্ত শর্মাকে ক্যামাক স্ট্রিট অঞ্চলে সবাই এক ডাকে চেনে। কারণ একমাত্র তার ফুচকাতেই থাকে এমন এক সুগন্ধিত মশলা যা তিনি বাড়ি থেকে তৈরি করে নিয়ে আসেন। এর আগে এই মশলা তৈরি করতেন শর্মাজির মা। তখন শর্মাজির বাবা ফুচকা বিক্রি করতেন। এখন তিনি বিক্রি করেন তবে ঘরোয়া মশলার স্বাদ অক্ষুণ্ণ আছে। মেথি, ধনে গুঁড়ো, জোয়ান মেশানো এই মশলাই শর্মাজির সিক্রেট ইউএসপি।
কীভাবে যাবেনঃ ২৫ এ, ক্যামাক স্ট্রিট, কলকাতা ১৬। ক্যামাক স্ট্রিটের মোড়ে নেমে সোজা হেঁটে যেতে পারেন। পার্কস্ট্রিট দিয়ে এলে সুবিধে হবে।
ট্রাই করুনঃ শর্মাজি স্পেশাল মশালা ফুচকা
খরচঃ ৬ টা ফুচকার দাম ২০ টাকা।
দক্ষিনাপনে রাজেন্দ্রভাইয়ের ফুচকা
রাজেন্দ্রভাইয়ের আত্মবিশ্বাস হিংসে করার মতো। কীরকম? তিনি জানেন প্রতিদিন যদি ১০০ জন দক্ষিনাপনে শপিং করতে আসেন তাহলে ৯৯ জন তার ফুচকা না খেয়ে বাড়ি যাবেন না। দক্ষিণ কলকাতার পরিপ্রেক্ষিতে তার ফুচকার দাম একটু বেশি। তবে তার জন্য ভিড় একটুও কমে না। উল্টে সারা মাসে রয়েছে তার বাঁধা খদ্দের।
কীভাবে যাবেনঃ গড়িয়াহাট থেকে সোজা ঢাকুরিয়া ব্রিজ ক্রস করলেই পেয়ে যাবেন রাজেন্দ্রভাইকে। গড়িয়ার দিক থেকে এলেও ঢাকুরিয়া ব্রিজ ক্রস করতে হবে।
ট্রাই করুনঃ রাজেন্দ্রভাইয়ের স্পেশাল দম আলু ফুচকা
খরচ পড়বেঃ ৪০ থেকে ৫০ টাকা প্রতি প্লেট
রাসেল স্ট্রিটে নাঙ্কুদার ফুচকা
নাঙ্কুদা ওরফে নাঙ্কুরাম গুপ্তর ফুচকার রেসিপিও গুপ্ত। বাঁধা খদ্দেরদের হাজার অনুরোধেও তিনি বলেন না কি মশলা দিয়েছেন।
কীভাবে যাবেনঃ পার্কস্ট্রিটে নেমে রাসেল স্ট্রিটের রাস্তা ধরুন।
ট্রাই করুনঃ নাঙ্কুভাইয়ের ইউপি স্পেশাল ফুচকা
খরচ পড়বেঃ ৬ টা ফুচকা ২০ টাকা
চক্রবেরিয়ায় উপিন্দর ভাইয়ের ঠেলা
৪০ বছর ধরে ফুচকা বিক্রি করছেন উপিন্দর ভাই। ফুচকার জলে ব্যবহার করেন মিনারেল ওয়াটার।
কীভাবে যাবেনঃ শরত বোস রোড ধরে সোজা পদ্মপুকুরের কাছে। বলুন ট্রায়াঙ্গুলার পার্কে যাব।
ট্রাই করুনঃ উপিন্দর ভাইয়ের স্পেশাল কেলাওয়ালা (কলার) ফুচকা
খরচ পড়বেঃ ৩০-৪০ টাকা
এছাড়াও অবশ্যই ট্রাই করবেন
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের রাম ভাইয়ের ফুচকা। খরচ খুবই কম। মাত্র ১০ টাকায় পেয়ে যাবেন চারটে ফুচকা।
নিউ আলিপুরে প্রকাশ ভাইয়ের ফুচকা। ১০ টাকায় পাঁচটা ফুচকা পাবেন এখানে।
আলিপুর গার্ডেন কাফের কাছে প্রবেশ ভাইয়ের ফুচকা। এখানে অবশ্যই যাবেন কারণ এখানে পাওয়া যায় ২০ রকমের ফুচকা। অবশ্যই ট্রাই করবেন স্পেশাল চকোলেট ফুচকা।
বালিগঞ্জ ফুট ব্রিজের নীচে পেট্রল পাম্পের কাছে এবং ঠিক তার উল্টো দিকে কেএমসি বিল্ডিংয়ের কাছে যে ফুচকা। যারা ঝাল বেশি খান তাদের জন্য আদর্শ।
লেক কালীবাড়ির ফুটে মিনারাল ফুচকা। হ্যাঁ এখানে সবজি ধোয়া থেকে শুরু করে সব কিছু মিনারেল ওয়াটারে হয়। তাই দাম একটু বেশি। কিন্তু খেতে লা জবাব!
Picture Courtsey: Instagram
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!