আদতে মহারাষ্ট্রের উৎসব হলেও এখন মোটামুটি দেশের সব জায়গাতেই গণেশ চতুর্থী (Ganesh Chaturthi) পালন করা হয়, এমনকী, আমাদের পশ্চিমবঙ্গও বাদ যায় না! হিন্দুমতে সিদ্ধিবিনায়ক গণেশ হলেন সৌভাগ্যের দেবতা। এঁর কৃপায় বুদ্ধির সঙ্গে সংসারের এবং ব্যবসার শ্রীবৃদ্ধিও ঘটে। আর বলুন তো গণেশের প্রিয় প্রসাদ কী? লাড্ডু তো বটেই, সঙ্গে রয়েছে মোদক (Modak)। আপনি সিদ্ধিদাতার পূজা করুন বা না করুন, মোদক খেতে তো আপত্তি নেই! দেখে নিন কীভাবে (recipe) তৈরি করবেন মোদক।
সনাতনী মোদক তৈরির রেসিপি
যা-যা উপকরণ প্রয়োজন
মোদকের দু’টি স্তর হয়, একটি হল বাইরের অংশ এবং অন্যটি ভিতরের পুর।
পুর বানানোর জন্য লাগবে: নারকেল কোরা – এক বাটি, চিনি – আধ বাটি, গুড় – আধ বাটি, আপনার পছন্দমতো ড্রাই ফ্রুটস (কুচনো), ঘি – তিন টেবিল চামচ, পোস্ত – আধ চা চামচ, খোয়া ক্ষীর – দুই চা চামচ, এলাচ গুঁড়ো – এক চিমটি
বাইরের অংশ তৈরি করার জন্য লাগবে: চালের গুঁড়ো – দুই বাটি, ঘি – দুই চা চামচ, নুন – এক চিমটি, জল – পরিমাণ মতো
প্রণালী
মোদক তৈরি করার জন্য বেশ খানিকটা সময় হাতে নিয়ে নামুন। কারণ, তিন ভাগে আপনাকে এই রেসিপিটি তৈরি করতে হবে। প্রথমেই পুর তৈরি করে নিন। একটি প্যানে ঘি গরম করে তাতে পোস্ত দিয়ে দিন। এবারে একে-একে নারকেল কোরা, চিনি, গুড়, এলাচ গুঁড়ো আর ড্রাই ফ্রুট দিয়ে ভাল করে নাড়তে থাকুন। আঁচ কমের দিকে রাখুন, যাতে প্যানের তলাটা ধরে না নায়। অবশ্য নন স্টিক প্যানে তৈরি করলে এই অসুবিধে হবে না। উপকরণগুলি ভাল করে মেশাতে থাকুন এবং দেখবেন আস্তে-আস্তে একটা মণ্ড মতো তৈরি হচ্ছে। মিনিটদশেক করলেই হয়ে যাবে, বেশিক্ষণ করবেন না কারণ, তাতে পুর শক্ত হয়ে যেতে পারে। যদি দেখেন খুব বেশি শুকনো হয়ে যাচ্ছে, তা হলে সামান্য ঘি দিয়ে আবার নাড়তে থাকুন। সোনালি রঙ ধরলে আঁচ বন্ধ করে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন।
যতক্ষণ পুর ঠান্ডা হচ্ছে, ততক্ষণে বরং আপনি বাইরের আস্তরণটি তৈরি করে ফেলুন। জল গরম করে তার মধ্যে এক চিমটি নুন দিয়ে দিন। এবারে ফুটন্ত জলের মধ্যেই এক চা চামচ ঘি আর চালের গুঁড়ো দিয়ে আঁচ কমিয়ে ভাল করে নাড়তে থাকুন। পাত্রের ঢাকা বন্ধ করে একদম কম আঁচে পাঁচ মিনিট হতে দিন। পাঁচ মিনিট পর ঢাকা খুলে দেখে নিন যে চালের গুঁড়ো সেদ্ধ হয়েছে কিনা। চালের গুঁড়ো সেদ্ধ হয়ে গেলে একবার ভাল করে নেড়ে নিয়ে নামিয়ে নিন। এবার একটু সাবধান হয়ে যেভাবে আটা বা ময়দা মাখা হয় সেভাবেই এই মিশ্রণটি মেখে নিতে হবে। হ্যাঁ, গরম অবস্থাতেই মাখতে হবে, তা না হলে ঠান্ডা হয়ে গেলে মন্ডটি শুকিয়ে যাবে এবং শক্ত হয়ে যাবে। খুব ভাল করে ঠেসে-ঠেসে মাখুন এবং নরম হলে তবেই ঠাসা বন্ধ করুন।
এবারে ফাইনাল স্টেপ আর তা হল মোদক অ্যাসেম্বল করা। মোদক সাধারণত ভাপে তৈরি হয়। অনেকে আবার ভাজাও করেন। আগে বরং আপনাদের ভাপের রেসিপিটাই জানাই। ছোট্ট-ছোট্ট লেচি কেটে নিন প্রথমে। এবার হাতের তালুতে অল্প সাদা তেল বা ঘি লাগিয়ে একটি লেচি নিয়ে মাঝখানে গর্ত করুন এবং বাটির মতো করে গড়ে নিন। দেখবেন, বাটির গর্তটা যেন গভীর হয় । এবারে আগে থেকে তৈরি করে রাখা সামান্য পুর ভরে দিন এবং পেচিয়ে পেচিয়ে বাটির মুখ বন্ধ করুন, ঠিক যেভাবে ডিমসাম তৈরি করা হয় সেভাবে। বাকি লেচিগুলি দিয়েও ঠিক একইভাবে মোদক তৈরি করে নিন। এবারে যদি আপনার স্টিমার থাকে ভাল, না থাকলে একটি ডেকচিতে জল গরম করুন এবং উপরে ঝাঁঝরিওয়ালা ঢাকা বসান, তার উপর কলা পাতা বা সুতির নরম কাপড় রেখে তাতে সামান্য ঘি মাখিয়ে একে-একে মোদক গুলি বসিয়ে দিন এবং উপর থেকে একটি উঁচু ঢাকা দিয়ে দিন। পাঁচ থেকে ছয় মিনিট পর ঢাকা সরিয়ে দিন। ব্যস, আপনার মোদক রেডি।
এখানে সনাতনী মোদকের রেসিপি দেওয়া হল, তবে আপনি চাইলে অন্য যে-কোনও পুর, যেমন চকোলেট, বেসন, খোয়া ক্ষীর বা শুধু ড্রাই ফ্রুটের পুর তৈরি করেও মোদক দিতে পারেন সিদ্ধিদাতাকে!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!