দেখতে দেখতে এসে গেল ১৪২৬। বাংলা (bengali) নববর্ষ। যদিও আমরা হাবে ভাবে সাহেব, তবে বাংলা (bengali) নববর্ষ এলেই মনে প্রাণে বাঙালি (bengali) হয়ে যাই। তখন মেনুতে লুচি ছোলার ডাল আর মুখে হ্যালো হাইয়ের বদলে শুভ নববর্ষ (poila baisakh)! তবে একদিন হলেও এসব আমাদের বেশ ভালোই লাগে। আমরা বাইরে যাই হই না কেন,ভিতরে আমরা খাঁটি বাঙালি সেটা প্রমাণ হয়ে যায়।আর কী জানেন তো পৃথিবীতে যতই পরিবর্তন আসুক না কেন, বাঙালির আড্ডার (adda) বিষয় পাল্টায় না। থোড় বড়ি খাড়া আর খাড়া বড়ি থোড়! তবু তার মধ্যেই আছে বেঁচে থাকার রসদ, জীবনের আনন্দ। তাহলে আর বৃথা সময় নষ্ট কেন? আড্ডা (adda) শুরু হোক!
রাজনীতি
সারা ভারতের লোক জানে বাঙালি মাত্রেই তার রক্তে রয়েছে রাজনীতি। সে আপনি কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য হন বাঁ না হন, পাড়ার রকে চায়ের পেয়ালায় তুফান তুলে রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হবেই। বিশেষ করে ভোটের আগে একটু চায়ের দোকানগুলোতে কান পাতলেই শোনা যাবে রাজনৈতিক তর্জা তুঙ্গে।
উত্তমকুমার না সৌমিত্র?
কোথায় বলে লেবু বেশি কচলালে সেটা তেঁতো হয়ে যায়। এই লেবু…থুড়ি এই টপিক কিন্তু এখনও ফেলুদার ভাষায় বললে বলা চলে সেলিং লাইক হট কচুরিজ! রাজনীতির মতো বাঙালি সিনেমাঅন্ত প্রাণ! আরে বাবা সত্যজিৎ রায়ের জন্মস্থান বলে কথা। বাঙালি সিনেমা গুলে খেয়েছে মশাই। আর সিনেমার প্রসঙ্গ উঠলেই একদল বলবে উত্তমকুমার আর একদল বলবে সৌমিত্র!
ফুটবল
সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল! হক কথা। আর বুঝতেই পারছেন যতই আইপিএল বলে আমরা চেঁচাই না কেন, একবার ফুটবল মাঠে গিয়ে দেখবেন। উত্তেজনা কাকে বলে হাড়ে হাড়ে মালুম পাবেন। আর ফুটবল মানেই দুই যুযুধান পক্ষ। মোহনবাগান নাকি ইস্টবেঙ্গল? মোহনবাগান হারলে ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকদের বাড়িতে সেদিন জমিয়ে রান্না। আর ইস্টবেঙ্গল হেরে গেলে মোহনবাগান দলের লোকেরা বলেন “আমরা গর্বিত মোহনবাগান!” সেদিন আবার বাড়িতে লুচি আর চিংড়ি মাছের মালাইকারি মাস্ট!
খানাপিনা
চিংড়ি না ইলিশ? আড্ডা এই নিয়েও কম হয়না। খেতে ভালোবাসে বাঙালি। সে একটু আধটু পেটরোগা হলেও ক্ষতি নেই। বাঙালরা বলে ইলিশ হল মাছের রাজা। সেই স্বাদের কাছে বাকি সব নস্যি। আর ঘটিরা গলা ফুলিয়ে বলে, মোটেই না। চিংড়ি হল নাপিত মাছ। তা দিয়ে যে রান্নাই হোক না কেন তা অমৃত সমান।
ঘটি বনাম বাঙাল
শুধু এটুকু নিয়েই গোটা একটা প্রবন্ধ লিখে ফেলা যায়। ঘটিরা রাঁধতে পারেনা। বাঙালরা ঝগড়া করে। ঘটিরা মুখে মিষ্টি কথা বললেও মনে প্যাঁচ, বাঙালরা মুখের উপর সত্যি কথা বলে দেয় ইত্যাদি ইত্যাদি। উত্তর কলকাতায় যেমন খাস ঘটিদের মহল্লা। আবার দক্ষিণে কিছু কিছু জায়গায় রয়েছে বাঙালদের ঘাঁটি। আড্ডা বসলে এই প্রসঙ্গ একবার আসবেই।
মিডিয়াম বনাম কেরিয়ার
ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বাঙালি বড়ই আবেগপ্রবণ। তাই বাংলা মিডিয়াম আর ইংলিশ মিডিয়াম নিয়ে তর্ক চলতেই থাকে। যদিও বাংলা মিডিয়ামের পক্ষে কথা বলার লোক ক্রমশ কর্পূরের মতোই উপে যাচ্ছে। তবে সে যাই হোক এই বিষয়টির সঙ্গে লেজুড়ের মতো জুড়ে থাকে কী পড়া উচিৎ? ডাক্তারি আর ইঞ্জিনিয়ারিঙয়ের পাল্লা ভারী। আড্ডার মোড় অন্যদিকে ঘুরে যায় যখন বিদেশ জাওয়ার প্রসঙ্গ আসে। ব্যাস সঙ্গে সঙ্গে কথা ঘুরে যায়। আর তখন আড্ডা চলতে থাকে আজকের জেনারেশন সম্পর্কে। মা বাবাকে ছেড়ে চলে যাওয়া বিদেশে থিতু হওয়া ঠিক নাকি এদেশেই…
বৈঠক চলতে থাকে… রক না থাক রকিং আড্ডা কি থামে? আমরা যে বাঙালি!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!