ছোট-বড় ব্যবসার মালকিন হোন, কী মাল্টি ন্যাশনালে চাকরিজীবী, ইনকাম যাই হোক না কেন ট্যাক্স ফাইল তো করতেই হবে। কিন্তু কখন, কীভাবে তা করতে হবে। ইনকাম ট্যাক্স বাঁচাতেই বা কী-কী করা উচিত, সে সম্পর্কে অনেকেরই লেজে-গোবরে অবস্থা হয়। ফলে ঠিক-ঠিকমতো করে ট্যাক্স ফাইল করতে না পারার কারণে বছর-বছর মোটা টাকা ট্যাক্স হিসেবে গুনতে হয়। সঙ্গে উকিলের পিছনে দৌঁড়াতে গিয়ে লিটারখানেক ঘামও ঝরে। আর এই সবের চক্করে যদি ডেডলাইন মিস হয়ে যায়, তা হলে তো শিরে সংক্রান্তি! তাতে ট্যাক্স পাশাপাশি গুচ্ছের ফাইনও ভরতে হয়। ফলে খরচের বোঝা বাড়ে। তাই তো আপনাদের সুবিধার্থে এমন একটা গাইড লাইনের উল্লেখ রইল, যা অক্ষরে-অক্ষরে মেনে চললে ট্যাক্স তো বাঁচবেই, সঙ্গে এই সংক্রান্ত নানা ঝক্কিও আর পোহাতে হবে না।
ঠিক সময় ট্যাক্স জমা না দিলে কী হবে?
এবছর ৩১ অগস্টের মধ্যে ট্যাক্স ফাইল না করলে পেনাল্টি দিতে হবে। তাই সময়ের আগে ট্যাক্স জমা দিয়ে দিতে ভুলবেন না যেন! তাছাড়া হাতে সময় থাকতে-থাকতে ট্যাক্স (tax) ফাইল করলে আর একটা সুবিধেও রয়েছে। ট্যাক্স ফাইল করার সময় যদি কোনও ভুল করে ফেলেন, তা হলে তা শুধরে নেওয়ার সুযোগ মিলবে। তাই শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা না করাই নিরাপদের।
ট্যাক্স প্ল্যানিং-এর গাইডলাইন
১. কখন কোন ট্যাক্স দিতে হয় জেনে নিতে হবে সে সম্পর্কে
যাঁদের মাইনে ট্যাক্সের আওতার মধ্যে, তাঁদের প্রতিটি ফিনান্সিয়াল ইয়ারেই ট্যাক্স জমা দিতে হয়। তবে আপনার মাইনে tax slabs-এর মধ্যে পরুক বা না পরুক, ট্যাক্স ফাইল করতে ভুলবেন না যেন। তাতে আপনারই নানা সুবিধে হবে। অন্য়দিকে যাঁরা ব্যবসা করেন, তাঁদের ইনকাম ট্যাক্সের পাশাপাশি Goods and Services Tax বা GST জমা দিতে হয়।
২. টিডিএস সম্পর্কে জেনেবুঝে নিতে হবে
খেয়াল করে দেখবেন আপনার সিটিসি বা Cost To Company যা, সেই মতো মাইনে আপনি পান না। কেন এমনটা হয় জানেন? আয়কর দফতরের নির্দেশমতো আপনার কোম্পানি আপনার মাইনে থেকে কিছু টাকা ট্যাক্স হিসেবে কেটে নিয়ে সরকারের খাতায় জমা করে দেয়, যাকে সরকারি ভাষায় Tax Deducted at Source বা TDS বলা হয়ে থাকে। তবে প্রতিটি ফিনান্সিয়াল ইয়ারের শেষে কোম্পানির থেকে ফর্ম ১৬ সংগ্রহ করে আয়কর বিভাগে জমা দিলেই টিডিএস হিসেবে কেটে নেওয়া টাকা আপনি ফেরত পেয়ে যাবেন।
৩. ট্যাক্স বাঁচানোর নানা উপায়
মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোজগার করা টাকা ট্যাক্স হিসেবে দিতে কারও যে মন চায় না, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু একথাও উপেক্ষা করা যায় না যে, আমাদের আয়ের পাঁচ থেকে ৩০ শতাংশ টাকা ইনকাম ট্যাক্স হিসেবে সংগ্রহ করে সেই অর্থ ভরত সরকার দেশ গঠনের কাজে লাগিয়ে থাকে। তাই দেশের উন্নতির স্বার্থে ট্যাক্স তো দিতেই হবে। তবে ইনকাম ট্যাক্স বাঁচানোর বেশ কিছু উপায়ও আছে। মিউচুয়াল ফান্ড, ন্যাশনাল পেনশন স্কিম, পিপিএফ, ন্যাশনাল সেভিং সার্টিফিকেট, সিনিয়ার সিটিজেন স্কিম এবং লাইফ ইনশিওরেন্সের টাকা বিনিয়োগ করলে ট্যাক্স সেভিং সম্ভব। এমনকী, হোম লোন এবং এডুকেশন লোনের জন্যও tax deductions হয়।
৪. কত টাকা ট্যাক্স হিসেবে দিতে হবে তা জেনে নিন
২০১৮-১৯ ফিনান্সিয়াল ইয়ারে আপনি মোট যা আয় করেছেন, সেই অনুযায়ী কত টাকা ইনকাম ট্যাক্স দিতে হবে বা আদৌ দিতে হবে কিনা, সে সম্পর্কে আজকালের মধ্যেই জেনে নিন। এখন তো অনলাইনেই এই সম্পর্কে জেনে নেওয়া যায়। তাই অকারণে সময় নষ্ট করবেন না। সেই সঙ্গে আরেকটা কাজ করতে হবে। আপনি যেখান যা বিনিয়োগ করছেন, তা ট্যাক্স সেভিং-এর কাজে আসবে কিনা সে সম্পর্কেও জেনে নিতে হবে। এক্ষেত্রে অনলাইন tax calculator-এর সাহায্য যেমন নিতে পারেন, তেমনই উকিলের পরামর্শ নিলেও মন্দ হয় না। মোট কথা এই মাসের ৩১ তারিখ যেহেতু ট্যাক্স ফাইল করার শেষ দিন, তাই ২০ তারিখের মধ্যেই প্রয়োজনীয় সমস্ত কাগজপত্র গুছিয়ে নিয়ে ট্যাক্স জমা দিয়ে দেবেন। কারণ, ৩১ তারিখের পরে ট্যাক্স ফাইল করলে ফাইন ভরতে হবে। ৩১ অগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ট্যাক্স ফাইল করলে ৫,০০০ টাকা ফাইন। আর যদি ৩১ ডিসেম্বরের পরে জমা দেন, তা হলে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত ফাইন দিতে হতে পারে।
৫. হাত খুলে টাকা জমান
চাকরির প্রথম দিন থেকেই মাইনের ২০ শতাংশ টাকা পিপিএফ, মিউচুয়াল ফান্ড অথবা ন্যাশনাল পেনশন স্কিমে জমানোর চেষ্টা করুন। তাতে ট্যাক্স সেভিং তো হবেই, সঙ্গে কিছু টাকাও জমবে, যা দিয়ে ছোট-বড় নানা স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব হবে। তাই তো কর্মজীবনের প্রথম দিন থেকেই কোনও এক ফিনান্সিয়াল অ্যাডভাইজার সাহায্য নিয়ে কোথায়, কত টাকা জমালে পরবর্তীকালে ট্যাক্সের ক্ষেত্রে সুবিধে মিলতে পারে, সে সম্পর্কে জেনে-বুঝে নেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!