শুনতে অবাক লাগলেও, কোরিয়ান কিংবা জাপানিরা, মানে ত্বক চর্চার নতুন ট্রেন্ডের জন্য সারা বিশ্ব যাঁদের দিকে হা-পিত্যেশ করে তাকিয়ে থাকে, এই নতুন বিউটি ট্রেন্ডের জনক কিন্তু তাঁরাই! সোডা ওয়াটার (Soda Water), যেটি এত দিন অম্বল-চোঁয়া ঢেকুর সারায় বলে কিংবা ফ্রেশ লাইমের সঙ্গে যার কম্বিনেশন সারা শরীর জুড়িয়ে দেয় বলে আমরা জানতাম, সেই পানীয়টিই নাকি দুর্দান্ত ক্লেনজার বলে দাবি করছেন সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞরা। ইন ফ্যাক্ট, কোরিয়ান বা জাপানিরা, যাঁরা ফেস মাস্ক কিংবা শিট মাস্ক তৈরিতে সারা বিশ্বে সবচেয়ে দড়, তাঁরাও এই সব মাস্কে ভরপুর সোডা ওয়াটার বা কার্বনেটেড ওয়াটার ব্যবহার করে থাকেন। আর এখন এই পানীয়টিই ক্লেনজার হিসেবেও ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু কেন? সোডা ওয়াটারে এমন কী আছে, যা ত্বকের যত্নে কাজে আসে?
আরও পড়ুনঃ জল অপচয় বন্ধ করবেন কিভাবে?
সোডা ওয়াটার দিয়ে মুখ ধোওয়ার উপকারিতা
সোডা ওয়াটারের ধরনটাই আসলে ত্বকের যত্নে সবচেয়ে বেশি কাজে আসে…
১. এর বুদ্বুদ হচ্ছে এর আসল অস্ত্র! সোডা ওয়াটার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করলে এই বুদবুদগুলো মুখের ত্বকের উপর ফেটে দিয়ে ত্বকের ছিদ্র খুলে দেয় এবং ভিতরের তেল-ময়লা টেনে বের করতে সুবিধে করে দেয়!
২. আমাদের মুখের (face) ত্বকের PH ভ্যালু হল 5.5। আর সাধারণ জলের PH ভ্যালু হচ্ছে 7। জানেন কি, অন্য কোন জিনিসের PH ভ্যালুও 5.5? ঠিকই ধরেছেন, সোডা ওয়াটারের! তাই এই পানীয়টি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করলে তা ত্বকের PH ভারসাম্যের কোনও ক্ষতি করবে না। ফলে ব্রণ কিংবা ফুসকুড়ি বেরনোর আশঙ্কাও কমে যাবে!
৩. সোডা ওয়াটার ত্বকের (skin) ঠিক নীচের লেয়ারের ব্লাড ভেসেলগুলিকে সক্রিয় করে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয়। ফলে এই ধরনের জল দিয়ে মুখ ধুলে মুখে বেশ একটা সুন্দর লালচে আভা আসে। এটিতে মিশ্রিত কার্বন ডাই অক্সাইড আবার ত্বকে অক্সিজেনের প্রবেশ বাড়িয়ে দেয় তার ছিদ্রগুলি খুলে। ফলে ত্বক স্বাভাবিকভাবে তরতাজা হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুনঃ তামার বোতলে জল খাওয়ার উপকারিতা
কীভাবে সোডা ওয়াটার দিয়ে মুখ ধোবেন
সোডা ওয়াটার দিয়ে কীভাবে মুখ ধুতে হবে, এবার সেটা জেনে নেওয়া যাক।
১. প্রথমে মুখে ঠান্ডা সোডা ওয়াটারের ঝাপটা দিন।
২. এবার যে ফেসওয়াশ আপনি নিয়মিত ব্যবহার করেন, সেটি মুখে লাগিয়ে আঙুলের ডগা দিয়ে আলতো হাতে মালিশ করুন মিনিটদুয়েক।
৩. আবার মুখ ধুয়ে নিন সোডা ওয়াটারেরই সাহায্য, ঝাপটা দিয়ে।
৪. এবার তোয়ালে দিয়ে আলতো হাতে চেপে-চেপে মুখ মুছে নিন।
সোডা ওয়াটার ব্যবহারের বিষয়ে কিছু সতর্কতা
১. এই কার্বনেটেড ওয়াটার কিংবা সোডা ওয়াটার দিয়ে কিন্তু প্রতিদিন মুখ ধোবেন না। সপ্তাহে দুই থেকে তিন বারই এই উপায়ে মুখ পরিষ্কার করা যথেষ্ট। তার বেশি ব্যবহার করলে ত্বকের ছিদ্রগুলি সব সময় খোলা থাকবে এবং ধুলোময়লা ঢোকার আশঙ্কাও বেড়ে যাবে।
২. সোডা ওয়াটার যেন ভাল ব্র্যান্ডের হয়। মনে রাখবেন, এটি সরাসরি মুখে ব্যবহার করছেন, তাই সস্তা ব্র্যান্ডের সোডা ওয়াটার কিনে পয়সা বাঁচাতে গিয়ে ত্বকের বারোটা বাজাবেন না!
সোডা ওয়াটারের ফেস মিস্ট
সোডা ওয়াটার দিয়ে সহজেই তৈরি করে ফেলতে পারেন একটা ফেস মিস্ট, যেটি ত্বকের যত্নে দারুণ উপকারী এবং বাড়িতে বানিয়ে বেশ কিছুদিন রেখেও দিতে পারবেন! সম পরিমাণ সোডা ওয়াটার আর ঠান্ডা গ্রিন টি একসঙ্গে মিশিয়ে একটা বোতলে পুরে ফ্রিজে রেখে দিন। সপ্তাহে একবার তুলোর প্যাডে এই মিশ্রণ নিয়ে চেপে-চেপে মুখে লাগিয়ে চুপ করে শুয়ে থাকুন মিনিটদশেক। তারপর সোডা ওয়াটাক দিয়ে মুখ ধুয়ে, ভাল করে ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। রাতে শুতে যাওয়ার আগে এই বিউটি রুটিনটি ফলো করে দেখুন। সকালে উঠে দেখবেন, নিজের রূপ দেখে নিজেই তাজ্জব বনে যাবেন!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!