জলপাই রঙের পোশাক। গোল ফ্রেমের চশমা। মাথার সামনে চুল অনেকটাই পাতলা হয়ে এসেছে। ভদ্রলোককে চিনতে পারছেন? উত্তর যদি ‘না’ হয়, তা হলে আপনার জন্য আরও একটা অপশন। পরনে গেরুয়া পোশাক। গলায় রুদ্রাক্ষ। সেই গোল ফ্রেমের চশমা। এ বারে মাথার সামনের চুল একেবারেই নেই। এ বারে কি চেনা চেনা লাগছে?
ভেবে দেখুন তো, নেতাজী (Netaji) সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে এই ছবির ভদ্রলোকের কোনও মিল খুঁজে পাচ্ছেন কিনা? পাওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ ইনি পর্দার নেতাজী। বাস্তবের প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (prosenjit Chatterjee)। চমকে গেলেন তো? ঠিকই। চমকে যাওয়ার মতোই ঘটনা। সৃজিত (Srijit) মুখোপাধ্যায়ের আগামী ছবি ‘গুমনামী’তে (Gumnaami) এটিই প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের লুক। স্বাধীনতা দিবসের সকালে যা আমজনতার সামনে প্রথম প্রকাশ হল। মুক্তি পেল টিজারও।
আসলে নেতাজীকে নিয়ে আম-বাঙালির মনে এখনও এনেক রহস্য রয়েছে। বিশেষ করে তাঁর মৃত্যু কী ভাবে হয়েছিল, তার কোনও সঠিক দিশা আজও পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন উঠেছে, গুমনামী বাবাকে নিয়েও। তিনিই কি আসলে নেতাজী? এ ধাঁধার সমাধান নেই। তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। মত, বিরুদ্ধ মতের জায়গা তৈরি হয়েছে। কিন্তু সমাধান? আবার সিনে পর্দাতেও নেতাজীকে নিয়ে বহু কাজ হয়েছে। কিন্তু গুমনামী বাবাকে নিয়ে কাজের পরিমাণ খুবই কম। এই ছবি দু’টোর খিদেই মেটাবে বলে আশা করছেন সিনেপ্রেমীরা।
নেতাজী এবং গুমনামী বাবা- এই দুটো চরিত্রেই অভিনয় করেছেন প্রসেনজিৎ। দুটো চরিত্রের লুকই (look) প্রকাশ হল। এ ছবির ট্যাগলাইন, ‘দ্য গ্রেটেস্ট স্টোরি নেভার টোল্ড’। কী ভাবে ভাবলেন গোটা গল্পটা? সৃজিত শেয়ার করলেন, “নেতাজী বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাননি। আবার বেঁচেও নেই। এই লাইনটা আমি ছোটবেলা থেকে শুনেছি। এমনকী আজও গোটা দেশ তাঁর মৃত্যুর কারণ খুঁজে বেড়ায়। নেতাজীর মৃত্যুর কারণ আজও রহস্যে মোড়া। আমি যখন ছবিটা লিখেছিলাম, তখন যতটা উত্তেজিত ছিলাম, তা আগে কখনও হয়নি। আমার বিশ্বাস ছবিটা দেখতে গিয়ে দর্শকও সেই উত্তেজনা অনুভব করবেন।”
মুখার্জি কমিশনের একটি রিপোর্টের ভিত্তিতেই কাহিনির অনেকটা অংশ তৈরি হয়েছে বলে খবর। চিত্রনাট্য লেখার আগে লুক নিয়ে অনেক রিসার্চ করেছেন পরিচালক। রিসার্চ করেছেন প্রসেনজিতের লুক নিয়েও। আর এ বিষয়ে তাঁকে সাহায্য করেছেন মেকআপ আর্টিস্ট সোমনাথ কুণ্ডু। ওজন বাড়ানো থেকে প্রস্থেটিক মেকআপ- এই ছবির জন্য দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন প্রসেনজিৎ। গুমনামী বাবার তুলনায় নেতাজীর চরিত্রে অভিনয় করাটা তাঁর কাছে বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল বলে দাবি করেছেন। যে কোনও ছবির মতোই এ ক্ষেত্রেও ভাল হোমওয়ার্ক করেই কাজ শুরু করেছিলেন নায়ক।
ইতিহাস বলে, ১৯৭০ সালে উত্তর প্রদেশে গুমনামী বাবার আবির্ভাব হয়। অনেকে মনে করেন, তিনি আসলে নেতাজী। কারণ সুভাষচন্দ্রের চেহারার সঙ্গে তাঁর বেশ কিছু মিল পাওয়া গিয়েছিল। আজাদ হিন্দ ফৌজের বেশ কিছু চিঠিও তাঁর কাছে ছিল বলে শোনা যায়। ১৯৪৫ সালের ১৮ অগস্ট শেষবারের মতো নেতাজীকে প্রকাশ্যে একটি বিমানে চড়তে দেখা গিয়েছিল। সেই বিমান ভেঙে পড়ে বলে দাবি করেন অনেকে। কিন্তু নেতাজীর মৃতদেহ পাওয়া যায়নি। সৃজিতের নতুন ছবি অনেক অজানা রহস্যের সমাধান করবে বলে মনে করছেন ইন্ডাস্ট্রির সদস্যরা। প্রসেনজিৎ ছাড়াও অনির্বাণ ভট্টাচার্য, তনুশ্রী চক্রবর্তী এই ছবিতে অভিনয় করেছেন। মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্টের দায়িত্বে সামলেছেন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। আগামী ২ অক্টোবর পুজোর (pujo) আগেই মুক্তি পাবে ‘গুমনামী বাবা’।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!