বিয়ের বছর ঘুরতে না-ঘুরতেই সমাজ, থুড়ি মা-শাশুড়ির চাপে পড়ে ‘মা’ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন অনেক মেয়েই। ছোট-বড় নানা স্বপ্নকে এক প্রকার জলাঞ্জলি দেওয়া ছাড়া সে সময় তাঁদের কাছে আর কোনও উপায়ই থাকে। কীভাবেই বা থাকবে বলুন! মাকে খুশি করার চক্করে একদিকে বরের প্রেশার, অন্যদিকে বয়স বেড়ে যাওয়ার দোহাই দিয়ে মা-বাবার ব্ল্যাকমেল! এমন চাপে কতদিন আর মনের জোর ধরে রাখা যায়! অগত্যা চাপের মুখে হার স্বীকার করা ছাড়া আর কোনও গতি থাকে না। কিন্তু এমনটা হওয়া কি উচিত? না, উচিত নয়! তাই এখনই মা হতে যদি না চান, তা হলে মুখ বুজে না থেকে স্বামীকে সেকথা জানান। মনের কথা খুলে বলুন তাঁকে। জানবেন, ইচ্ছের বিরুদ্ধে নেওয়া সিদ্ধান্তের বোঝা বওয়াটা সহজ কাজ নয়। তাই সুযোগ বুঝে স্বামীকে (Husband) মনের কথা বলেই ফেলুন! তবে বিষয়টা যেহেতু স্পর্শকাতর, তাই পার্টনারকে নিজের মনের কথা বলার (ways to tell your partner) সময় কতগুলি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।
১. কারণগুলি খুলে বলুন
সন্তানের জন্ম দেওয়ার সিদ্ধান্তটা যতটা আপনার, ততটাই আপনার স্বামীরও। তাই যে-যে কারণে আপনি এখনই এই সিদ্ধান্ত নিতে চান না, সেই কারণগুলি ঠান্ডা মাথায় পার্টনারকে বোঝানোর চেষ্টা করুন। যুক্তি দিয়ে তার মন জয় করার চেষ্টা করুন। ভুলেও মাথা গরম করে খারাপ কথা বলে ফেলবেন না যেন! আরও একটা বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। কী বিষয়? আপনার পার্টনার যেন খুশি মনে আপনার সিদ্ধান্তে সম্মতি জানান। জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়াটাও কিন্তু ঠিক কাজ নয়। মোট কথা যে সিদ্ধান্তই নিন না কেন, তাতে যেন দু’জনের সম্মতি থাকে। তবেই জীবনের গাড়ির ব্রেক ফেল হওয়ার আশঙ্কা কমবে।
২. পার্টনারের যুক্তিও মন দিয়ে শুনুন
মনে রাখবেন, ‘কমিউনিকেশন ইজ আ টু ওয়ে চ্যানেল’। অর্থাৎ আপনিই শুধু আপনার কথা বলে গেলেন, উল্টোদিকের মানুষটার কোনও কথাই কানে তুললেন না, তা হলে কিন্তু চলবে না। কারণ, এমনটা হলে সম্পর্কে ফাটল ধরতে বাধ্য। তাই আপনার সিদ্ধান্তের কথা পার্টনারকে বলার পরে তাঁর যুক্তিগুলিও মন দিয়ে শুনতে হবে। তিনি কী-কী কারণে এখনই এমন সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন, তা ধৈর্য ধরে শুনতে হবে। হয়তো পার্টনারের কথায় কোনও যুক্তি খুঁজে না-ও পেতে পারেন। কিন্তু তাই বলে তাঁকে থামিয়ে দিলে চলবে না। বরং স্বামীর সব কথা শুনে নিয়ে প্রতিটা পয়েন্ট ধরে-ধরে তাঁকে বোঝাতে হবে। অর্থনৈতিক কোনও সমস্যার কারণে যদি আপনি এখনই মা হতে না চান, তা হলে সে কথাও তাঁকে বোঝান। অর্থাৎ একে অপরের কথা শুনে, যুক্তি বিশ্লেষণ করে তবেই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। আর সেই সিদ্ধান্তে যেন দু’জনেরই মত থাকে।
৩. তাড়াহুড়ো করলেই বিপদ
সন্তানের জন্ম দেওয়াটা বা এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সহজ কাজ নয়। তাই সমাজ বা মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের চাপে পড়ে এমন সিদ্ধান্ত নিলে ভুল করবেন। বরং এই বিষয়ে তাড়াহুড়ো না করে স্বামীর সঙ্গে মন খুলে কথা বলুন। যখন বুঝবেন আপনারা দু’জনেই মানসিক এবং অন্যান্য সব দিক থেকে প্রস্তুত, তখনই এগোন। প্রয়োজনে পার্টনারের সঙ্গে কথা বলে মোটামুটি একটা সময়সীমা ঠিক করে নিয়ে তাঁকে নিজের দলে টেনে নিন। তাতে কোনও ধরনের ভুল বোঝাবুঝি হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমবে, তেমনই যাঁরা আপনাদের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন, তাঁরাও আর আপনাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে নাক গলানোর সুযোগ পাবেন না।
৪. মনোমালিন্য এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ
হাজার বোঝানোর পরেও যদি আপনার স্বামী যদি নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন, তা হলেও মাথা গরম করে ফেলবেন না। কারণ, এমন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে আপনাদের দু’জনের মধ্যে মনোমালিন্য দানা বাঁধলে পরিবারের বাকিরা আপনাদের ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক গলানোর সুযোগ পেয়ে যাবেন। তখন কিন্তু অতি সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট হতে পারে। উপরন্তু নানা মতামত শুনে বিভ্রান্ত হয়ে গিয়ে আপনার স্বামীও কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারেন। তাই ভুলেও ঝগড়ার ফাঁদে পড়বেন না। বিশেষ করে এই বিষয়ে স্বামী বা শাশুড়ির চিমটি উপেক্ষা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। বরং মাথা টান্ডা রেখে, ধৈর্য ধরে পার্টনারকে বুঝিয়ে যান। খেয়াল রাখবেন, আপনাদের ব্যক্তিগত বিষয় যেন ভুলেও বেডরুমের বাইরে না বের হয়। ঘুণাক্ষরেও যেন কেউ এই বিষয়ে জানতে না পারেন। এই টিপসগুলি মাথায় রেখে এগলে দেখবেন একদিন না-একদিন আপনার পার্টনার, আপনার মনের কথা ঠিক বুঝতে পারবেন।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!