যৌন হেনস্থা। এই বিষয়টির সঙ্গে হয়তো অনেকেই পরিচিত। কারও বা প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা রয়েছে। এরও রকমফের রয়েছে। কখনও যৌন হেনস্থা হয় প্রত্যক্ষ ভাবে। কখনও বা একই আঘাত নেমে আসে পরোক্ষে।
বাড়ি হোক বা বাড়ির বাইরে, মেয়েরা সব জায়গাতেই যৌন হেনস্থার শিকার। কর্মস্থলে যৌন হেনস্থার বিষয়টিও অপরিচিত নয়। কিন্তু যেহেতু কাজের সঙ্গে আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টি যুক্ত, তাই অনেক ক্ষেত্রে সব বুঝেও চুপ করে থাকতে বাধ্য হন মেয়েরা। অনেক সময় আপনার সহকর্মী হয়তো পরোক্ষে আপনাকে যৌন হেনস্থা করছে। হয়তো সেক্সুয়াল জোকস (sexual jokes) পাঠিয়ে বিরক্ত করছেন আপনাকে। আপনি প্রতিবাদ করলেন। কিন্তু একই কাজ যদি আপনার বস (boss) করেন, ঠিক কী করবেন তখন?
আপনার সিনিয়র, হতে পারে তিনি আপনার বস, যদি আপনাকে ক্রমাগত সেক্সুয়াল জোকস পাঠিয়ে বিরক্ত করেন, আর তা যদি আপনার পছন্দ না হয়, তাহলে তা পরোক্ষে যৌন হেনস্থার সামিল। কড়া হাতে পরিস্থিতি সামলানোর দাওয়াই দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রাথমিক ভাবে বসকে আপনি সহকর্মী ভাবতে শুরু করুন। হতে পারে তিনি আপনার সিনিয়র। তাঁর হাতে হয়তো আপনার প্রোমোশন বা ইনক্রিমেন্ট, কিন্তু এই অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবেন না। প্রতিবাদ করুন। তাঁর এই আচরণ যে আপনি পছন্দ করছেন না, তাঁকে জানিয়ে দিন প্রথমেই।
কোনও ভাবেই এই ধরনের জোকসের কোনও উত্তর দেবেন না। বরং দেখা হওয়ার পর সামনা সামনি আপনার আপত্তির কথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিন। শুধুমাত্র কাজের কথা ছাড়া অন্য কোনও প্রসঙ্গকেই মেসেজ বা হোয়াটস্অ্যাপে প্রশ্রয় দেবেন না।
যদি আপনার আপত্তিতে কাজ না হয়, তাহলে অফিসে আপনার সহকর্মীদের বিষয়টি জানাতে পারেন। ভরসাযোগ্য কোনও সিনিয়র সহকর্মীর সাহায্য নিতে পারেন। প্রয়োজন হলে দলগত ভাবে প্রতিবাদ করুন।
প্রত্যেক কোম্পানির নিজস্ব কিছু নিয়ম থাকে। তার মধ্যে কোনও কর্মীর যৌন হেনস্থা হলে, কোথায় কীভাবে অভিযোগ জানাতে হবে তার নির্দেশ দেওয়া থাকে। সেই নিয়ম জেনে যথাযথ ভাবে অভিযোগ করুন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে নির্দিষ্ট আইন মেনে দোষী ব্যক্তির সাজা পর্যন্ত হতে পারে।
যদিও এতেও সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানাতে পারেন। তবে কোনও ভাবেই এই আচরণকে প্রশ্রয় দেবেন না। এতে আখেরে ক্ষতি আপনারই।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখা দরকার কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট অব ওয়মেন অ্যাট ওয়ার্কপ্লেস অ্যাক্ট আইন পাশ হয় ২০১৩ সালে। এই আইনের ভিত্তিতে মহিলারা যৌন হেনস্থার অভিযোগ করতে পারেন। ২০১৩ সালের আগে পর্যন্ত মহিলাদের যৌন হেনস্থার প্রতিবাদের জন্য বিশাখা নির্দেশিকা ছিল। নতুন আইন সেই বিশাখা নির্দেশিকাকে আরও শক্তিশালী করে।