প্রতি বৃহস্পতিবার আমরা ঘটা করে লক্ষ্মী পুজো করে থাকি! কিন্তু বাড়ির লক্ষ্মীর দিকে কারও নজর নেই। বরং তাকে কীভাবে নিয়মের শিকলে জড়িয়ে রাখা যায়, ছেঁটে ফেলা যায় তার ডানা, সে লক্ষ্যেই আমারা সবাই এগিয়ে চলেছি। আর তাই তো আমাদের দেশের বেশিরভাগ মা-বোনেরাই (woman) আজ চাকরি (work) করার সুযোগ পায় না। আর তাতে যে শুধু মেয়েদের স্বনির্ভরতা ক্ষুন্ন হয়, তা নয়। সেই সঙ্গে দেশের অর্থনীতির ভিতটাও যে দুর্বল হয়ে পড়ে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
অর্থনীতিবিদদের মতে “জি২০” দেশগুলির মধ্যে সৌদি আরব এবং ভারতই হল এমন দুই দেশ, যেখানকার অর্থনীতিতে মেয়েদের অবদান মাত্র ১/৬ শতাংশ, যে কারণেই কিন্তু আমাদের দেশ আজও অর্থনৈতিক দিক থেকে এতটা দুর্বল। তাই তো দেশের উন্নতির জন্য যেমন মেয়েদের চাকরি করাটা জরুরি, তেমনি আরও কিছু কারণেও আমাদের দেশের মেয়েদের স্বনির্ভর হয়ে ওঠার প্রয়োজন রয়েছে (girl should work)। যেমন ধরো…
১. দেশের সঙ্গে এগোবে পরিবারও:
মেয়েরা অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাবলম্বী হয়ে উঠলে তাদের জীবন তো সুন্দর হয়ে উঠবেই, সেই সঙ্গে পরিবারের অর্থনৈতিক ভিতও আরও মজবুত হবে। ফলে টাকা-পয়সা সংক্রান্ত কারণে পারিবারিক অশান্তি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যাবে কমে। তাছাড়া আজকের দিনে সব ক্ষেত্রেই খরচা যা বেড়েছে, তার সঙ্গে তাল মেলাতে স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই যে চাকরি করার প্রয়োজন রয়েছে (importance of women’s work), তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
২. নিজের একটা পরিচয় মিলবে:
আমাদের সবারই একটা নাম আছে। পরিচয় আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় সমাজ ততক্ষণ সেই পরিচয়কে মান্যতা দেয় না, যতক্ষণ না কেউ নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছে। আর ঠিক এই কারণেই স্বামীর ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে এসে নিজের নামকে প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে চাকরি করাটা যে জরুরি (why every woman should work), তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধু তাই নয়, একথা তো মানতেই হবে যে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা একজন মানুষকে নিজের মতো করে বাঁচতে শেখায়। সিদ্ধান্ত নিতে শেখায়। আর এটাই তো মানুষ হিসেবে সবার প্রথম অধিকার হওয়া উচিত, কি তাই না?
৩. মানুষকে চিনতে শেখায়:
বাড়ির চার দেওয়াল কি নতুন কিছু শেখায়? একেবারেই না! কিন্তু বাড়ির বাইরে পা রাখা মাত্র এক নতুন জগত খুলে যায় আমাদের সামনে। সেই সঙ্গে নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে আলাপ হওয়ার কারণে একদিকে যেমন নানা বিষয়ে অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞানের বিকাশ ঘটে, তেমনি মানুষের চরিত্রের ব্যাপারেও চোখ খুলতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই পরিবারের সদস্য থেকে অফিসের সহকর্মী, কার সঙ্গে কেমনভাবে মানিয়ে নেওয়া উচিত, সে বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা তৈরি করে নিতেও সময় লাগে না। তাই তো বলি, কুয়োর ব্যাঙ না হয়ে এই বৃহৎ সমাজের একজন যোগ্য অংশীদার হয়ে ওঠার চেষ্টা করো, দেখবে জীবনটাই বদলে যাবে!
৪. আত্মবিশ্বাস বাড়বে:
আমার দ্বারাও এই কাজটা করা সম্ভব…! এমন বিশ্বাস যখন একবার তৈরি হয়ে যায়, তখন মনের জোর আকাশ ছোঁয়। ফলে নানা বিষয়ে ভয় দূর হতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি মানসিক দৃঢ়তা এত বেড়ে যায় যে একের পর এক সমস্যার পাহাড় পেরিয়ে জীবন যুদ্ধে জয় লাভ করার সম্ভাবনাও যায় বেড়ে। শুধু তাই নয়, মনের জোর বাড়ার কারণে দুর্বল হয়ে ওঠে সবল। ফলে সমাজের সার্বিক ছবিটা বদলে যেতে যে সময় লাগে না, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই তো এই সমাজ এবং দেশের স্বার্থে মেয়েদের শক্তিশালী হয়ে উঠতে হবে। তবেই না প্রকৃত অর্থে “আচ্ছে দিন” আসবে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!