দেবী (goddess) দুর্গার (durga) মর্তে আগমনের সময় হয়ে এল প্রায়। পুজো শুরু হতে আর বেশি দিন বাকি নেই। এই সময় দেবী দুর্গাকে নিয়ে নানা পৌরাণিক কাহিনি প্রায়শই শোনা যায় বিভিন্ন জায়গায়। দেবীর যে ১০৮টি নাম আছে, সে আমাদের অজানা নয়। সেই ১০৮টি নামের মধ্যে একটি হল শাকম্ভরী (shakambari)। জানেন কি কেন দেবীর এই নাম হয়েছে? আজ আপনাদের সেই কাহিনিই শোনাব। দেবীর এই নামের শুরু যখন ‘শাক’ দিয়ে তখন বোঝাই যাচ্ছে, এই নামের সঙ্গে শাকের গভীর যোগ আছে। পুরাণ বলছে, দেবী আদ্যাশক্তি দেখা দিলেন শাকম্ভরী রূপে। কিন্তু আমরা জানি দেবী যখন তাঁর বিভিন্ন অবতারে অবতীর্ণ হন তখন তাঁর পিছনে কোনও নয়া কোনও কারণ থাকে। যেমন তিনি অবতীর্ণ হয়েছিলেন মহিষাসুরমর্দিনী রূপে। মার্কণ্ডেয় পুরাণে এই নিয়ে রয়েছে এক চমৎকার কাহিনি। বলা হচ্ছে, একবার শতবর্ষ অর্থাৎ একশো বছর ধরে পৃথিবীতে দেখা দিল অনাবৃষ্টি। যার থেকে জন্ম নিল খরা। জলের অভাবে শুকিয়ে গেল সমস্ত নদীনালা। শাকসবজির ফলন বন্ধ হয়ে গেল। উপায় নয়া দেখে মর্তবাসী দেবীর শরণাপন্ন হলেন। দেবী যোগবলে নিজের শরীর থেকে উৎপন্ন করলেন শাক। সেই দিয়ে ক্ষুধার্ত মানুষের ক্ষুধা নিবারণ করলেন তিনি। সেই থেকে তাঁর নাম হল শাকম্ভরী।
উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর জেলায়, শিবালিক পর্বতের পাদদেশে রয়েছে শাকম্ভরী মাতার মন্দির। এখানে ফলমূলের সঙ্গে দেবীকে প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয় নানা রকমের শাক। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। দেবীর কৃপা থাকলে বাড়িতে কোনওদিন শাকভাতের অভাব হবে না। উত্তরাখণ্ডে ত্রিযুগীনারায়ণ যাওয়ার পথে এবং রাজস্থানের জয়পুরে শাকম্ভরীর মন্দির আছে। আমাদের রাজ্যে একটি মাত্র শাকম্ভরী মাতার মন্দির দেখা যায়। আর সেটি আছে বর্ধমানের মাজিগ্রামে। এখানে শাকম্ভরী সিংহবাহিনী ও চতুর্ভুজা। প্রতি বছর আষাঢ় মাসে শুক্লা নবমীতে দেবীর বিশেষ পুজো ও হোম হয়। বড় রকমের মেলাও বসে। স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন পুজোর দিনে বৃষ্টি হলে ফসল ভাল হবে। তবে মাজিগ্রামে দেবী শাকম্ভরীর প্রতিষ্ঠা নিয়েও অনেক কাহিনি প্রচলিত আছে। এই কাহিনিগুলির ঐতিহাসিক সত্যতা কতটা সেটা জানার কোনও উপায় নেই। সবটাই লোকমুখে চলে এসেছে। কিংবদন্তী বলছে যে, দেবীর মূর্তি আগ্রা থেকে এক ক্ষত্রিয় রাজপুত নিয়ে এসেছিলেন। দেবীকে প্রথম প্রতিষ্ঠা করা হয় ভাতারের কাছে এরুরার বলে একটি গ্রামে। পরে বর্গী আক্রমণের হাত থেকে দেবীকে বাঁচাতে নিয়ে আসা হয় মাজিগ্রামের কাছেই অন্য একটি গ্রামে। কিন্তু অজয়ের বন্যায় সেই গ্রাম জলে তলিয়ে যায়। পরে জেলেরা এই মূর্তি উদ্ধার করে এবং মাজিগ্রামে দেবীর প্রতিষ্ঠা হয়। ঐতিহাসিক ও মূর্তি বিশেষজ্ঞরা হরপ্পার শিলমোহরে আঁকা শস্যের দেবীর সঙ্গে শাকম্ভরীর মিল খুঁজে পেয়েছেন। সম্ভবত দু’জনের উৎসই চাষাবাদের সঙ্গে জড়িত।
Featured Photo Courtsey: ismart_dileepk, kolkatadurgapuja
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!