পিচবোর্ডের বাক্স। পার্সেল এসেছিল একটা। তাই ছেঁড়া হয়েছে। মাঝখান দিয়ে সোজা আপনার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন একজন। চোখে ভয়, কৌতূহল নাকি বিরক্তি? আপনি চেনেন ওঁকে। ঠিকই ধরেছেন। অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (Rituparna Sengupta)। এ নিছকই পর্দার জীবন। সে আন্দাজ আপনি পেয়েছেন। কিন্তু এমন নো মেকআপ লুকে ঋতুপর্ণা! অনেক দিন পরে, তাই না?
এই লুক ‘পার্সেল’ (parcel)-ছবির। ফার্স্ট লুক। ক্যাপ্টেন অর্থাৎ পরিচালক ইন্দ্রাশিস আচার্য (Indrasis Acharya)। ‘বিলু রাক্ষস’, ‘পিউপা’র মতো ছবি যাঁর আস্তিনের তাস। যে ছবি দু’টোর নাম লিখলাম, যদি দেখে থাকেন, তা হলে একমত হবেন ইন্দ্রাশিসের রুটম্যাপটা আলাদা। টলিউডের অলি, গলি, পাকস্থলীতে দাঁড়িয়েও অন্য হাওয়ার গন্ধ দিতে পছন্দ করেন তিনি। তাই তাঁর ছবি মানেই অন্য প্রত্যাশা তৈরি হবে। ‘পার্সেল’ও ফার্স্ট লুকেই সেই প্রত্যাশা তৈরি করেছে।
এই ছবিতে এক অন্য ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে আপনি দেখবেন, সেই ইঙ্গিত রয়েছে রয়েছে ফার্স্ট লুকেই। পরিচালকের একই দাবি। “গল্পটা যখন ঋতুকে শুনিয়েছিলাম তখনই খুব ইন্টারেস্ট দেখিয়েছিল। আমি বলেছিলাম, যেমন ভাবে বলব, করতে হবে কিন্তু। একেবারে নো মেকআপ লুক। খুব কোঅপারেট করেছে। আমার তো মনে হয় এটা” শেয়ার করলেন ইন্দ্রাশিস।
ছবির ভাবনাটা কেমন? পরিচালক বললেন, “এখানে ডাক্তার দম্পতি রয়েছে। যে চরিত্র দুটো করেছে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় এবং ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ঋতুপর্ণা এখন আর ডাক্তারিটা করে না। কেন করে না, সেটাই ছবিতে দেখিয়েছি। সোশিও পলিটিক্যাল ইস্যু রয়েছে। যে সব নিয়ে বাংলায় খুব একটা ছবি হয় না। আন্ডার মেডিক্যাল সিস্টেম মডার্ন ক্রাইসিসটা দেখিয়েছি।”
চিত্রনাট্য অনুযায়ী ঋতুপর্ণার কাছে ঘন ঘন পার্সেল আসতে থাকে। সেটা দেখে তাঁর মনে হয় অতীতের কাজের জন্য কেউ হয়তো ব্ল্যাকমেল করছে। এর থেকেই ফিয়ার সাইকোসিস তৈরি হয়। সেটা কাটাতেই বিভিন্ন ঘটনা ঘটে। একইসঙ্গে শাশ্বত যে হাসপাতালে কাজ করেন সেখানে রোগীমৃত্যুর ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়। ফেয়ার ডেথ নারি রেসপন্সিবিলিটি অব ট্রিটমেন্ট সেটা নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। পাশাপাশি ঋতুপর্ণার অতীতও যেন সামনে এসে দাঁড়ায়…।
পোস্টার (poster) ক্রেডিট রৌদ্র মিত্রের। কেমন ভাবে কাজটা প্ল্যান করেছিলেন? রৌদ্র বললেন, “পরিচালক সিনোপসিস পাঠিয়েছিলেন। শুনে মনে হয়েছিল ইন্টারেস্টিং বিষয়। প্রথমে আমি অন্য রকম পোস্টার বানিয়েছিলাম। পার্সেলের মধ্যে ঋতুদির অনেকগুলো ফোটো। কিন্তু পরিচালকের পছন্দ হয়নি। আরও ভাবতে বলেছিলেন। অনেক ভাবার পর মনে হয়েছিল দু’দিকে পার্সেলের ছেঁড়া কাগজের মধ্যে ঋতুদির মুখ। সেটা বেশ অভিনব। এক্সপ্রেশনেও বিরক্তি নাকি ভয়, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। ড্রামাটিক ব্যাপার হয়েছে ওই এক্সপ্রেশনে। তবে ঋতুদি ওইরকম এক্সপ্রেশন না দিলে পোস্টারটা জমত না। এর পর স্ট্যাম্পের মতো করে লোগো বসিয়েছিলাম।”
ঋতুপর্ণা এবং শাশ্বত- জুটি হিসেবেও অফবিট। টলিউড তো বটেই, বলিউডেও অন্য রকমের চরিত্রে বার বার দর্শকের সামনে নিজেকে ভেঙেছেন, গড়েছেন শাশ্বত। এই ছবিও ব্যতিক্রম হবে না বলেই বিশ্বাস ইন্ডাস্ট্রির একটা বড় অংশের। আর একার কাঁধে ছবি বয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব অনেকদিন ধরেই নিয়ে নিয়েছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। সে অভ্যেস তাঁর রয়েছে। উপরি পাওনা এ ছবিতে অচেনা লুক। যেটার কৌতূহল মেটাতেই দর্শক সিনেমা হলে যাবেন বলে মনে করছেন অনেকে।
সব থেকে বড় কারণ এই ছবির গল্প। কনটেন্ট ইজ দ্য কিং, এই নতুন ভাবনার শরিক ইন্দ্রাশিস। তাঁর কেরিয়ারগ্রাফ সেটাই প্রমাণ করে। ‘পার্সেল’ও আপনাকে ভাবনার রসদ দেবে। প্রথমে কিছু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানোর পর এই ছবি রিলিজের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানলেন পরিচালক। ঋতুপর্ণা, শাশ্বত ছাড়াও দামিনী বেণী বসু, অম্বরীশ ভট্টাচার্য, শ্রীলা মজুমদার, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের অভিনয়ে সমৃদ্ধ এই ছবি।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!