মহুয়া কিছুদিন হল চাকরি পেয়েছে আর প্রথম মাইনেটা পেয়ে সবটাই প্রায় খরচ করে ফেলেছে! ফলস্বরূপ মাসের মাঝামাঝি সময়ে আবার হাত পাততে হয়েছে বাবার কাছে। সেই সময়েই ওর বাবা পরামর্শ দিয়েছিলেন কিছু-কিছু করে টাকা জমানোর জন্য। এদিকে মহুয়ার আবার অন্য প্ল্যান। অনেকদিন ধরেই ভেবে রেখেছিল যে চাকরি পেলে একটা credit card নেবে। সেকথা বাবাকে বলতেই বাবা তো রেগে আগুন! যে মেয়ে নিজের খরচের উপরে কোনও নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না, সে ক্রেডিট কার্ড নিলে যে কী করবে, সেটা ভেবেই ওঁর মাথায় হাত! মেয়েকে বুঝিয়েছিলেন যে ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার কী-কী সুবিধে আর কী-কী অসুবিধে।
মহুয়ার মতো অনেকেই আছেন, যারা ক্রেডিট কার্ড নিতে চান। আর তাঁদের ইন্ধন জোগায় নানা ক্রেডিট কার্ড কোম্পানির কাছ থেকে আসা রোজকার ফোন এবং নানা লোভনীয় অফার। যদিও ক্রেডিট কার্ড নেবেন কি নেবেন না, সেটা আপনার একান্তই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, তবে যদি নেন, তা হলে কয়েকটা বিষয় একটু মাথায় রাখবেন…
১। সময়মতো সম্পূর্ণ বিল মিটিয়ে দিতে হবে
ক্রেডিট কার্ড তখনই নেওয়া উচিত যখন আপনি সম্পূর্ণ বিল একবারে মিটিয়ে দিতে পারবেন। সম্পূর্ণ বিল অর্থাৎ কার্ডে যতটা বিল আসছে, ততটা। সম্পূর্ণ বিল একবারে শোধ না করলে কিন্তু যে টাকাটা বকেয়া থাকে তার উপরে কড়া হারে সুদ বসে এবং আপনার বকেয়া টাকার অঙ্ক দিন-দিন বাড়তেই থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বেশিরভাগ মানুষ ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার সময় এই বকেয়া টাকার উপর বসা সুদের টাকার হিসেবটা করেন না, যার ফলে সমস্যা তৈরি হয়। এক-একটা কোম্পানির এক-এক লেভেলের কার্ডের সুদের হার এক-একরকম। তাই ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ভাল করে রিসার্চ করে তবেই নেওয়া উচিত।
২। ফ্রি বললেও আসলে কিন্তু ফ্রি-তে কিছুই হয় না
অনেকসময়েই আপনার কাছে হয়তো ফোন আসে যেখানে একজন এগজিকিউটিভ বলেন যে, আপনি বিনে পয়সায় একটা ক্রেডিট কার্ড পাচ্ছেন। ব্যস, আপনিও আনন্দে নাচতে-নাচতে কার্ড নিয়ে নিলেন। কিন্তু জেনে রাখুন, ফ্রি বলে এই পৃথিবীতে কিছু হয় না। জয়েনিং ফি, প্রসেসিং ফি, রিনিউয়াল ফি, লেট পেমেন্ট ফি – এরকম অনেক ‘হিডেন কস্ট’ থাকে, যেগুলো কিন্তু আপনাকে বিলের সঙ্গে ব্যাঙ্ককে দিয়েই যেতে হয়।
৩। সঠিক ক্রেডিট কার্ড কোনটি?
এটা একটা খুব জটিল প্রশ্ন। এতগুলো ব্যাঙ্ক, তাদের এত রকমের ক্রেডিট কার্ড…এসবের মধ্যে আপনি কোনটা নেবেন? কোনওটা ক্যাশব্যাক দেয়, আবার কোনওটাতে কিছু অতিরিক্ত সুবিধে পাওয়া যায়। আপনার কাছে কোন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ সেটা দেখে নিয়ে, সেই হিসেবে ক্রেডিট কার্ড নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে আমাদের মনে হয়।
৪। শুধুমাত্র ফোন কল যথেষ্ট নয়
আপনাকে যদি কেউ ফোন করে বলে যে আপনি একটা ক্রেডিট কার্ড পাচ্ছেন আর সেটাও কোনও কাগজপত্র ছাড়াই, তা হলে তৎক্ষণাৎ পুলিশের কাছে ব্যাপারটি জানান। এরকম অনেক কারচুপির কেস হয়ে থাকে যেখানে আদৌ এই কলগুলো ব্যাঙ্ক থেকে আসে না, বরং ভুয়ো কোম্পানি থেকে আসে।
৫। ডেবিট কার্ড অনেক ভাল
যদি সম্ভব হয়, ক্রেডিট কার্ডের বদলে ডেবিট কার্ড নিন। এতে আপনি জানতে পারবেন যে আপনার কাছে কত টাকা আছে এবং তার থেকে আপনি কতটা খরচ করতে পারেন। ক্রেডিট কার্ডে সেই সুবিধেটা নেই। আপনার ব্যাঙ্কে টাকা না থাকলেও আপনি দেদার খরচ করতে পারেন এবং তারপর যে বিশাল অঙ্কের বিল আপনার কাছে আসবে, সেটা আপনার কল্পনার অতীত!
আশা করি, এই প্রতিবেদনটি কিছুটা হলেও আপনাকে সাহায্য করল। এবার ক্রে়ডিট কার্ড নিতে গেলে উপরে বলা বিষয়গুলো মাথায় রেখে তবেই হ্যাঁ করবেন।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!