আমাদের সবার হয়তো ইংরেজি ভাষাটা অতটাও সাবলীল নয়। হয়তো দক্ষতা সেরকম নেই। তাঁরা সবার সামনে ইংরেজিতে কথা বলতে গিয়ে থতমত খান। তাঁদের কথা আটকে যায়। ভাবেন যদি ভুল ইংরেজি বলে থাকেন, তবে হয়তো সবার সামনে আবার অপদস্থ হতে হবে। হয়তো ঘাবড়ে যাবেন এভাবেই। আর এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় যদি কেউ ভুল ইংরেজি ভুলবশত লিখে ফেলেন তাহলে তো ট্রোলিং আছেই।
তাই আমরা হয়তো কবে নিজেদের অজান্তেই ইংরেজি না জানাকে শিক্ষাগত যোগ্যতার মাপকাঠি বানিয়ে ফেলেছি। যাঁরা মাতৃভাষাতে বেশ দক্ষ, তাই তাঁদেরও তাঁদের রাজ্যে চাকরি খুঁজতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় শুধুমাত্র ইংরেজিটা ঠিকঠাক জানা ছিল না বলে। ইংরেজি বানান লিখতে গিয়ে আমরা যতটা হোঁচট খাই, ঠিক সেভাবেই বাংলা বানান লেখার সময় আমরা ততটাই অবহেলা করি। ণ-র জায়গায় ন লিখে দিই। একবার ভাবিও না, বাংলারও একটা ব্যাকরণ (mother tongue) আছে। সেখানে নির্দিষ্ট বানানবিধি আছে। সেই বানানবিধি অনুযায়ী আমাদের লেখা উচিত। আমরা সেটা কোনওদিন ভেবেই দেখিনি।
এইসবের মধ্যে ইংরেজি যে কবে শিক্ষাগত যোগ্যতার মাপকাঠি হয়ে গিয়েছে, আমরা ভেবে দেখিনি। কিন্তু সত্যি আমাদের ভেবে দেখা উচিত ছিল। কোনও ব্যক্তি যদি সাবলীলভাবে ইংরেজি বলতে না পারেন তবে তাঁর কথা নিয়ে ঠাট্টা না করে তাঁর পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল। তাঁকে ধীরে ধীরে সেই ইংরেজি শব্দ বা বাক্যের অর্থ বুঝিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু কয়জনই বা তা করে থাকি?
সম্প্রতি অভিনেত্রী উষশী চক্রবর্তী যেন সেই বিষয়টিই আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন আবার। নেট মাধ্যমে একজন নেটাগরিক তাঁর ইংরেজি উচ্চারণ নিয়ে তাঁকে কটাক্ষ করেছিলেন। সেই কটাক্ষের স্পষ্ট ও যোগ্য জবাব দেন উষশী। স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি বাংলা মাধ্যমের ছাত্রী, তাই তাঁর ইংরেজি অতও সাবলীল নয়। বাংলা ভাষায় পড়াশোনা করার দরুণ তিনি বাংলাতেই বেশি সাবলীল। কিন্তু ইংরেজি ভাষায় কম জ্ঞান থাকা মানে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা কোনও অংশেই কম হয়ে যায় না। তাই এই কথাও স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যেহেতু রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থায় বাংলা ভাষায় উত্তর লেখা যায়। তাই তাঁর এমফিল এবং পিএইচডি দুটোই বাংলায় (mother tongue)লিখেছেন তিনি।
উষশীর এই জবাব আমাদেরও হয়তো আরও একবার মনে করিয়ে দেয়, দিনের পর দিন নিজেদের ইংরেজি ভাষায় কম দক্ষতা নিয়ে আমরা ভিতর ভিতর লজ্জা পেয়েছি। কোথাও কোথাও কোনও আলোচনাতেই অংশ নিতে পারিনি, ইংরেজি ভাষা সঠিক জানি না বলে। কিন্তু আলোচনার বিষয়বস্তুতে অন্ততপক্ষে বাকিদের থেকে অনেক বেশি জ্ঞান আমার ছিল।
তবে চাকরির ক্ষেত্রে ও অন্যান্য রাজ্যে কথা বলা ও যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ইংরেজি ভাষায় সামান্য জ্ঞান আমাদের প্রয়োজন হয়। যাতে অন্য মানুষের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ করতে পারি আমরা। আমাদের পাশের মানুষটি হয়তো সঠিক ইংরেজি জানেন না, কিন্তু তাঁর কথা আমরা বুঝতে পারছি। তবে সেভাবেই বোঝার চেষ্টা করি। কিন্তু তাঁর কথা নিয়ে কোনও তামাশা আর নয়। মনে রাখা প্রয়োজন, বাংলা (mother tongue) ভাষার জন্য সারা পৃথিবী মাতৃভাষা দিবস পালন করে। বাংলা ভাষা অত্যন্ত গর্বের ভাষা। লাখ লাখ শহিদের রক্ত মিশে আছে এই ভাষার সঙ্গে… তা আমাদের গর্ব করতে শেখায়। লজ্জা পেতে নয়।
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!