করোনা আতঙ্ক। লকডাউন। পিছিয়ে গিয়েছে সব কাজ। গৃহবন্দি থেকেও পজিটিভি থাকার বার্তা দিলেন অভিনেতা চন্দন (chandan) রায় সান্যাল।
ভালই। বাড়িতেই রয়েছি। মুম্বইতে। রান্না করছি, খাচ্ছি, ঘর পরিষ্কার করছি। আমার বেড়াল আছে। তাকে খাওয়াচ্ছি। আমি যেখানে থাকি, অনেক পাখি আসছে এখন। এমনিতে দেখতে পাই না। কেটে যাচ্ছে সময়।
২০০৩-এ ২১ বছর বয়সে মুম্বই এসেছিলাম। তখন থেকে একাই থাকি। প্রায় সব কিছুই নিজে করে নেওয়ার অভ্যেস রয়েছে আমার। ফলে সেই অসুবিধে নেই। আর আমি পজিটিভ থাকি সব সময়। বাড়িতে মা, বাবা চিন্তা করছে ভবিষ্যতের, ভাবছে টাকা আসবে কোথা থেকে, আমার বন্ধুরাও অনেকে খুব দুশ্চিন্তায় রয়েছে। কিন্তু আমি পজিটিভ থাকতে চাই। আসলে অনেক খারাপ দিন দেখেছি আমি। তাই জানি, এই সময় কেটে যাবে ঠিকই। ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে আমাদের। অনেক টেনশনের মধ্যে নেগেটিভ কথা বলে আমি আর ভিড় বাড়াতে চাই না।
নিশ্চয়ই। আমার জন্ম দিল্লিতে। সেখানেই বড় হয়েছি। মধ্যবিত্ত পরিবার। মামারবাড়িতে বেশি থাকতাম। মামার একটা বইয়ের দোকান ছিল। সেখানে মামাকে সাহায্য করতাম। মামার বাড়িতে বই পড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখার একটা অভ্যেস ছিল। সেখান থেকে আমারও সেই অভ্যেস শুরু হয়। স্কুলে খুব সাধারণ যেমন অনেকেই নাটক করে, আমিও করেছি, সেটা আলাদা করে বলার মতো কিছু নয়। কিন্তু কলেজে গিয়ে যখন নাটক করলাম, তখন তার একটা আলাদা মানে খুঁজে পেলাম।
না। অভিনয় নিয়ে কিছু করব, এটাই কেরিয়ার হবে, কোনওদিন ভাবিনি। বাবা, মা চাইতেন আমি আরও পড়াশোনা করে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইপিএস বা ওরকম আরও কিছু হব। যেমন অনেক বাবা-মা চান, তেমনটাই...। কিন্তু ছোট থেকে অনেক অভাব দেখেছি আমি। পুজোর সময় হয়তো নতুন জামা হত না কখনও। বাবা হয়তো হাতে পয়সা দিতে পারতেন না, এসব দেখে আমার মধ্যে প্রচুর রাগ জমা হয়েছিল। আই ওয়াজ আ ভেরি অ্যাংরি চাইল্ড। অনেক প্রশ্ন জমা হত নিজের মধ্যে। যার উত্তর কেউ দিতে পারত না। কলেজে নাটক করতে গিয়ে, অভিনয়ের মাধ্যমে সেই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে শুরু করলাম। গোটা ব্যাপারটা ভাল লেগে গেল...।
ওই কাজটা আমার কাছে অভিনয় শেখার স্কুলের মতো ছিল। অতদিন ধরে আমির খান, শরমন যোশি, অতুল কুলকার্নি, মাধবন, সোহা আলি খান সকলের সঙ্গে থেকে শিখতে পেরেছিলাম। আবার ১৫০০ টাকাও পেতাম। ফলে প্রচুর শিখেছিলাম সে সময়।
হ্যাঁ, করোনার কারণে সব পিছিয়ে গিয়েছে।
অফকোর্স। আমি নিয়ম করে লিখছি। গল্প লিখে রাখছি। চার, পাঁচটা স্ক্রিপ্ট হয়ে গিয়েছে। এই সময়টা কেটে গেলে শুরু করব কাজ। যত দিন যাচ্ছে, আরও বেশি করে মনে হচ্ছে, সিনেমা খুব শক্ত একটা আর্ট ফর্ম, আর এক্সপেনসিভ। এটা গান করা বা ছবি আঁকা তো নয়। সেখানে কোলাবরেশনের খুব একটা দরকার হয় না। আর এখানে কোলাবরেশনটাই সব। তবে একটা ফিল্ম তৈরি হয়। সেটা না চললে আবার স্ট্রাগল শুরু।
ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এমনিতেই অনিশ্চিত। এই ইন্ডাস্ট্রিতে যাঁরা কাজ করতে আসেন, সে অভিনেতা, পরিচালক, এডিটর, ক্যামেরা পার্সন প্রত্যেকেই এই অনিশ্চয়তার কথা জানেন। তার মধ্যে কেউ কেউ ভাল কাজ করেন। কেউ করেন না। ফলে আমার তো মনে হয়, এই অবস্থা কাটিয়ে উঠে ঘুরে দাঁড়ানোটা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মানুষের পক্ষে অন্যদের তুলনায় সহজ হবে। কারণ তাঁরা অস্থিরতা, অনিশ্চিত জীবনের সঙ্গে পরিচিত।
একদম। সুস্থ থাকুন সকলে। বি পজিটিভ।