করোনা আক্রান্ত গোটা পৃথিবী। ভারতে চলছে লকডাউন। সকলের মন খারাপ। গৃহবন্দি অবস্থাতেই ভবিষ্য়তের জন্য চিন্তা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বিনোদনের কথাও যেন আলাদা করে মনে পড়ছে না। সিনেমা হলে যাওয়ার কোনও উপায় নেই। তাই বাড়িত বসে টিভিতে দেখা সিরিয়ালের রিপিট টেলিকাস্ট বা সিনেমা।
হ্যাঁ, আর একটা উপায় আছে বটে। সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম। সেখানে নিরন্তর ওয়েব সিরিজ বা সিনেমা দেখা চলছে। তবে লকডাউনের আগে থেকেই এই অভ্যেসে অভ্যস্ত বাঙালি। নিঃসন্দেহে সেই সংখ্যা এখন আগের থেকে বেড়েছে অনেকটাই। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল একটি নতুন নাম। 'হিং' (Hing)। সৌজন্যে উইনডোজ।
শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্য়ায় এবং নন্দিতা রায়ের প্রোডাকশন হাউজ উইনডোজ এর নতুন প্রয়াস 'লকডাউন শটস'। যার প্রথম ছবি 'হিং'। মুক্তি পেয়েছে বৃহস্পতিবার। উইনডোজের সমস্ত সোশ্যাল চ্যানেলেই দেখা যাচ্ছে এই ছবি।
জিনিয়া সেনের লেখা গল্পে তৈরি হয়েছে এই ছবি। সঙ্গীত পরিচালনায় প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়। সামাজিক দূরত্ব মেনেই ছবিতে অভিনয় করেছেন অপরাজিতা (Aparajita) আঢ্য ও মানালি (Manali) দে। অর্থাৎ অপরাজিতা এবং মানালি নিজের বাড়িতে থেকেই শুটিং করেছেন। এরপর ছবির সম্পাদনা বা মিউজিকের কাজ সবটাই করা হয়েছে বাড়িতে বসে। এই সিরিজের আরও বেশ কিছু ছবি নিয়ে হাজির হবে উইনডোজ। কিন্তু কী ছবি বা কারা অভিনয় করবেন, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
দুই বোনের রোজনামচা নিয়ে গল্প বেঁধেছেন জিনিয়া। দিদি অর্থাৎ অপরাজিতা বোন মানালিকে রান্না শেখাচ্ছেন ফোনে। কারণ লকডাউনের পরিস্থিতিতে একে অপরের বাড়িতে যাওয়ার উপায় নেই। দিদির কাছ থেকে ফোনে শুনে রান্না করার চেষ্টা করছেন বোন। কিন্তু রান্না হয়ে যাওয়ার পর, তার স্বাদ ঠিক যেন দিদির মতো হল না।
বছরভর বড় চাকরি করে প্রচুর টাকা রোজগার করেন বোন। আর দিদি সামলে রাখেন বাড়ি। হয়তো তাঁর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নেই। কিন্তু সংসার করেন গুছিয়ে। সংসার আগলে রাখেন। আর বাইরে না বেরিয়ে যাঁরা বাড়ির বাকিদের দেখভাল করেন, সংসার করেন, সেটাও তো যথেষ্ট পরিশ্রমের কাজ। তার মূল্য কি আমরা দিতে পারি? এই লকডাউন যেন চোখে আঙুল দিয়ে সেই সত্যি আবার দেখিয়ে দিল। সংসার করাটাও যে একটা আর্ট, শিল্প তা যেন বুঝিয়ে দিল 'হিং'।
আসলে এ এক এমন পরিস্থিতি যা আগে কখনও দেখিনি আমরা। একদিকে যেমন মন খারাপ হচ্ছে সকলের, ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা বাড়ছে সকলের, তেমনই কাছের মানুষরা যেন হয়ে উঠছেন আরও কাছের। 'হিং' যেন সেই কাছের মানুষদের কথা আরও একবার মনে করিয়ে দিল, যাঁরা আজীবন আগলে রাখেন আমাদের। অথচ তাঁদের প্রাপ্য সম্মান আমরা অনেক সময়ই দিতে পারি না।