এনা (Ena) সাহা। এখন আর শুধু অভিনেত্রী নন। প্রযোজকও বটে। 'এসওএস কলকাতা' এনার প্রযোজিত প্রথম ছবি। লকডাউনের পর আনলক পর্বের প্রথমে এই ছবি দিয়েই টলিউডে ছবির শুটিং শুরু হয়েছে। মিমি (Mimi) চক্রবর্তী, নুসরত (Nusrat) জাহান, যশ রয়েছেন মুখ্য চরিত্রে। প্রযোজনার পাশাপাশি অভিনয় করছেন এনাও। নতুন দায়িত্ব কেমন লাগছে? আড্ডায় মুখোমুখি এনা।
নিজের প্রোডাকশন হোক, এই ইচ্ছেটা বোধহয় সব অভিনেতারই থাকে। নিজের মতো করে কাজ করা যায়। আমারও সেই ইচ্ছে ছিল। তবে সেই ইচ্ছে যে এত তাড়াতাড়ি পূর্ণ হবে, ভাবিনি। মূলত লকডাউনেই এই সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেললাম। বলতে পারেন, লকডাউনের পরিস্থিতিই এত তাড়াতাড়ি প্রযোজনার সিদ্ধান্ত নিতে আমাকে সাহায্য করল।
হ্যাঁ। আসলে এই সময়টা আমরা কেউই কাজ করিনি। কেউ ঝাড়ু দিচ্ছিল, কেউ ঘর মুছেছে। আর সেই সব ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করেছে। আমি এ সব কিছুই করতে পারিনি। কারণ আমার বাড়ির লোকেরা আমার ভাগের কাজটা করে দিত। লকডাউনের পর আর আগের মতো ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ হওয়া সম্ভব নয়, সেটা বুঝতে পারছিলাম। তাই মনে হল, নিজের কিছু শুরু করার এটাই বেস্ট টাইম। বাড়িতে কথা বললাম। সকলে সাপোর্ট করল। তারপর বিভিন্ন জায়গায় কথা বলতে বলতে প্রচুর আইডিয়া পেলাম। শুরু করে দিলাম।
আমাদের ডিরেক্টর অংশুমান প্রত্যুষের নাম ইন অ্যাসোসিয়েশন হিসেবে যাবে। ওই লিখেছে গল্পটা। এমনিতে আমি একাই প্রযোজনা করছি।
শুটিং অলমোস্ট ডান। আমরা কলকাতাতেই কাজ করলাম। যেহেতু লকডাউনের মধ্যে প্ল্যান করেছি, সেহেতু ওভাবেই গল্পটা লেখা হয়েছিল। এত বড় একটা ফিল্ম, এত বড় ইউনিট, সকলের সুরক্ষার বিষয়টা আগে। ইন্ডাস্ট্রির প্রায় সব টেকনিশিয়ান কাজ করেছেন আমার ছবিতে। সেফটি মেনটেন করা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ এভাবে আগে আমরা কখনও কাজ করিনি। অভ্যস্ত ছিলাম না কেউই।
সত্যি কথা বলতে, যশ আমার চয়েস। ওকে নিয়ে কাজ করব প্রথম থেকেই ঠিক করেছিলাম। তারপর গল্প যেভাবে লেখা হল, মনে হয়েছিল মিমি দিদি আর নুসরত দিদি এই চরিত্র দুটোতে সবথেকে ভাল জাস্টিস করতে পারবে। ওরা আমার থেকে তো বড় অভিনেত্রী। আর প্রথম ছবিতে বড় স্টার কাস্ট নিয়ে কাজও করতে চেয়েছিলাম।
আমার কিন্তু ওদের সামলানো ডিফিকাল্ট মনে হয়নি। কেউ ট্যানট্রাম শো করেনি। মিমি দিদি তো সুপার সুইট। সকলেই সাপোর্ট করেছে। আমি প্রথমে এক্সপেক্টও করিনি, এতটাই সাপোর্ট পেয়েছি।
আসলে করোনার ফলে অনেকদিন সবাই পারফর্ম করেনি। সকলে পারফর্ম করার জন্য মুখিয়ে ছিল। আর অ্যাক্টরদের মধ্যে বন্ডিং না থাকলে কিন্তু পারফর্ম করা যায় না। ক্যামেরাকে চিট করা যায় না। সকলেই খুব কোঅপারেট করেছে।
কস্টিউম পরে নিলে মেকআপ হয়ে গেলে তখন কিন্তু আমি অ্যাক্টর। প্রোডিউসার বলে সেটে কখনও ডমিনেট করিনি। আমার শুটিং না থাকলে, সে সময় অন্য কাজ না থাকলে আমি সেটে থাকতাম। আর ফোনে তো সব সময় অ্যাভেলেবল থাকতাম, পার্সোনালি।
সব সময়। ইনপুটের জন্য আমি ওপেন থাকতাম। আমি, অংশুমানদা, ইউনিটের সকলেই ইনপুট নিয়েছে। আমি জানি এটা আমার প্রথম প্রোডাকশন। কিছু ভুল হবেই।
আমি কোনওদিন কোনও কিছু নিয়ে টেনশন করতে পারি না। এটা নিয়েও তাই টেনশন নেই। তবে খারাপ কিছু হলে খারাপ লাগবে। আর ইন্ডাস্ট্রির সব প্রোডিউসাররা আমাকে অনেক ছোট থেকে দেখেছেন। আশা করছি সকলে সাপোর্ট করবেন। ওদের সঙ্গে আমার এক বা দুটো জেনারেশনের গ্যাপ রয়েছে। তাই চিন্তাধারাটা মিলবে না। থট প্রসেস অনেক আলাদা হবে বলেই মনে হয়। আমি যে ধরনের গল্প নিয়ে কাজ করব, ওরা হয়তো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেরকম ভাববেন না।
এখনও পর্যন্ত পুজো রিলিজ ভেবে রেখেছি। এবার দেখা যাক। আশা করছি কোনও সমস্যা হবে না। আর সমস্যা হলেও আমি তো একা ফেস করব না। পুরো টিম ফেস করবে।
এখনই সেটা ভাবিনি। এমনিতে অন্যান্য ছবি যেমন ভাবে ওটিটি বা টিভিতে যায়, তেমন ভাবেই যাবে।