শীত আসব আসব করার সঙ্গে সঙ্গেই বাঙালির মনে ‘খাই-খাই’ ঝড় ওঠে। বাজারে ভালো ফুলকপি দেখলে মনে হয় বড়া খাই, খিচুড়ি খাই। কড়াইশুঁটি দেখলে মনে হয় কচুরি খাই। আর শীত জাঁকিয়ে বসলে তো আর কথাই নেই। তখন মনে হয় পিঠেপুলি আর পায়েসের স্বাদ ছাড়া এ জীবন বৃথা।কথাটা যে নেহাত ফেলনা নয় সেটা আমিও জানি। আর তাই তো আমরা নিয়ে এসেছি কিছু সুস্বাদু পিঠেপুলি আর পায়েসের রেসিপির সম্ভার।যেগুলো প্রথাগত পিঠে পুলি ও পায়েসের থেকে একটু আলাদা কিন্তু তৈরি করা ভারি সহজ আর স্বাদেও লাজবাব। আর দেরি কেন? কোমর বেঁধে নেমে পড়ুন আর ঝটপট বানিয়ে ফেলুন এই পদগুলি।দেখবেন পাড়া প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে বাড়ির আপন জনেরা সবাই ধন্য ধন্য করছে। আমাদের ভুলবেন না! আমরা আসছি আপনার বাড়ি।
পাউরুটির পিঠে
উপকরনঃ পাউরুটি ৬ স্লাইস, চিনি ৩০০ গ্রাম, ঘি ১০০ গ্রাম, দুধ জ্বাল দেওয়া ক্ষীর ১ কাপ, গোলাপ জল সামান্য, জাফরান আধ চা চামচ, পেস্তা ও বাদাম আন্দাজমতো
প্রণালীঃ পাউরুটির ধারের লাল অংশ কেটে বাদ দিয়ে গরম ঘিয়ে লালচে করে ভেজে নিয়ে চিনির রসে ভেজান। ওপর থেকে গোলাপজল ও জাফরান ছড়ান। একটা পাত্রে খানিকটা ক্ষীর ঢেলে তার উপর পাউরুটির টুকরোগুলো রেখে তার উপরে আরও খানিকটা ক্ষীর ঢালুন। ঠাণ্ডা হলে পেস্তা ও বাদাম কুচি ছড়িয়ে দিন।
মিষ্টি কুমড়োর পায়েস
উপকরণঃ মিষ্টি কুমড়ো ৫০০ গ্রাম, চিনি ৫০০ গ্রাম, কিশমিশ ৩০০ গ্রাম, দুধ ২ লিটার, কাজুবাদাম ১০০ গ্রাম,চেরি ১০-১২ টা
প্রণালীঃ কুমড়ো সেদ্ধ করে মাখা মাখা করুন। দুধ জ্বাল দিয়ে ফোটান। চিনি দিয়ে জ্বাল দিন। বেশ ঘন হয়ে এলে সেদ্ধ কুমড়ো দিয়ে দুধের সঙ্গে মেশান। কাঠের হাতা দিয়ে নাড়বেন। কিছুক্ষণ বাদে ঘন হলে নামিয়ে নিয়ে পরিবেশন করুন। পাত্রে ঢেলে উপরে কিশমিশ ও কাজু ছড়িয়ে দিন।
কাঁচা মুগের পুলি
উপকরণঃ কাঁচা মুগডাল ৫০০ গ্রাম, আতপ চাল ২০০ গ্রাম, নারকোল ১টা, চিনি ৪০০ গ্রাম, বাদামতেল ২০০ গ্রাম।
প্রণালীঃ নারকোল কুরিয়ে রাখুন। মুগডাল ভালো করে ধুয়ে জল দিয়ে সেদ্ধ করে জল ঝরিয়ে নিন। আতপ চাল ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন। আন্দাজমতো চিনি দিয়ে নারকোল করা জ্বাল দিয়ে পুর তৈরি করুন। আতপ চাল ভিজে গেলে জল ঝরিয়ে শুকনো করে বেটে নিন। মুগডালের সঙ্গে আতপচালের গুঁড়ো মিশিয়ে বেশ ভালো করে মাখুন। মাখা ডাল পুলির মতো করে গড়ে নিন। পুলির ভিতরে নারকোলের পুর দিয়ে মুখ বন্ধ করুন। উনুনে কড়া চাপিয়ে তাতে তেল গরম করুন। পুলিগুলো বাদামি করে ভেজে আরেকটা কড়াইতে চিনি ও আন্দাজমতো জল দিয়ে রস তৈরি করে ভাজা পুলি তাতে দিন। কিছুক্ষণ পরে তুলে নিন।
চিঁড়ের পিঠে
উপকরণঃ চিঁড়ে ১ কাপ, নারকোল কোরা ১কাপ, ক্ষীর আধ কাপ, ময়দা ১ টেবিল চামচ, চিনি ২ কাপ, জল ১ কাপ, বাদাম তেল ১ কাপ।
প্রণালীঃ চিঁড়ে ভালো করে ২-৩ বার ধুয়ে নিন। এতেই চিঁড়ে নরম হয়ে যাবে। নারকোল কোরা, ক্ষীর ও নরম কোরা চিঁড়ে একসঙ্গে মিশিয়ে করে বেটে নিন। এবার এর সঙ্গে ময়দা মিশিয়ে ভালো করে লুচির তালের মতো ঠেসে নিন। চিনি ও জল একসঙ্গে একটা সসপ্যানে মিশিয়ে আঁচে বসান। রস মাঝারি ঘন হলে নামিয়ে নিন। কড়াইতে তেল গরম করুন। চিঁড়ের মিশ্রণ থেকে একটু একটু মিশ্রণ নিয়ে নারকোল কুলের আকারে গড়ে নিন। এবার এই তৈরি করা অংশগুলো তেলে দিয়ে ভেজে নিন। ভাজা হলে রসে ডুবিয়ে দিন। রসে থেকে ফুলে উঠলে পরিবেশন করুন।