বসের ঘরে জরুরি ফাইল নিয়ে যাচ্ছিল রমা। কিন্তু ঘরের দরজা পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই লাফ মেরে ফিরে এল নিজের কিউবিকলে। কেসটা কি? করিডরে দাঁড়িয়ে আছে বা বলতে গেলে বেজার মুখে দাঁড়িয়ে আছে শ্রেয়সী। অফিসে যাকে সবাই দুখি আত্মা বলে জানে! কেন না শ্রেয়সী কোনও কিছুতেই খুশি হয়না। জীবনের প্রতি পদে রয়েছে অভিযোগের পাহাড়। এক কথায় তার মতো নেগেটিভ মানুষ (negative people) এই অফিসে (office) খুঁজে পাওয়া ভার। রমার হয়েছে আরও জ্বালা। একই রুটে যাতায়াত করে দুজনে। ফলে অফিসের বাইরেও দেখা সাক্ষাৎ হয়েই থাকে। গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো অফিস ছুটির পরেও ফোন করে ঘ্যানঘ্যান করে শ্রেয়সী। তার নেগেটিভিটি (negativity) মাঝে মাঝে স্পর্শ করে যায় রমাকেও। ফলে শাশুড়ির সঙ্গে অযথা কথা কাটাকাটি, মেয়েকে বিনা দোষে মারধোর বা স্বামীর সঙ্গে ছোটখাটো মনোমালিন্য প্রায়ই হচ্ছে। বিপদ বুঝে রমা পরামর্শ নিল অফিসের অনেক দিনের পুরনো সহকর্মী ও দাদা অনির্বাণের। নেগেটিভ মানুষদের থেকে দূরে থাকার জন্য কি বললেন তিনি? (how to deal with negative people)
নেগেটিভ মানুষদের এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়। বিশেষ করে বাড়িতে বা অফিসে, যেখানে সে প্রায়ই চোখের সামনে ঘুরঘুর করে সেখানে তো নয়ই। আবার তাদেরকে কোনও ভাবে সন্তুষ্ট করাও সম্ভব নয়। কারণ আপনার কোনও পরামর্শ সে নেবে না। বরং তিনি যা বলছেন শুনে যান। তাকে বলুন তিনি সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
আপনার সহকর্মী বা বন্ধু যতই নেগেটিভ কথা বলুন না কেন, আপনি সব সময় পজিটিভ থাকুন। সামনের মানুষটিকে বোঝান হতাশাগ্রস্ত না হয়ে সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজতে। কথার ছলে মনের জোর বাড়ায় এরকম সিনেমা বা বইয়ের নাম বলুন।
যিনি নেগেটিভ তিনি আর যাই হোন না কেন ছোট শিশু নন। সুতরাং তার যাই সমস্যা হোক না কেন, সেটা বোঝার জন্য তার নিজের পরিবার ও বন্ধুরা আছে। কবি বলেছেন তোমার উপরে নাই ভুবনের ভার। সত্যিই তো। এরকম কত মানুষের সমস্যা আপনি সমাধান করবেন? তার চেয়েও বড় কথা হল দীর্ঘক্ষণ নেগেটিভ মানুষদের সঙ্গে থাকলে বা তাদের কথা ভাবলে কিছুটা প্রভাব আপনার উপরেও পড়বে। আপনারও মনে হবে আপনি পারবেন না, পারছেন না ইত্যাদি। এই না না থেকেই নেগেটিভিটির জন্ম হয়। সুতরাং অফিস থেকে বেরলেই বা ফোন রাখার পর এসব হাবিজাবি কথা নিয়ে বেশিক্ষণ ভাববেন না।
নেগেটিভিটি এবার সীমা ছাড়িয়ে চলে যাচ্ছে। আপনার সহকর্মী বা বন্ধু আত্ম্যহত্যা করার কথা বলছেন। এরকম পরিস্থিতি হলে একদম চুপ করে বসে থাকবেন না। প্রথমেই বিষয়টি ব্যক্তির বাড়ির লোক ও কাছের জনেদের জানান। তিনি যদি সব কথা আপনাকে ভরসা করে বলে থাকেন তাহলে সেটার মর্যাদা দিন। বন্ধুকে বুঝিয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান। নানা উদাহরণ দিয়ে তাকে বোঝান এই জীবন কতটা দামী। সেটা শেষ করে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠেনা।
কিছু কিছু মানুষ এই দুনিয়ায় থাকেন যারা এরকমই হন। তাদের কাজই হয় নানা বিষয় নিয়ে ঘ্যানঘ্যান করে মানুষকে বিরক্ত করা। আপনার প্রথম কাজ হবে এই জাতীয় মানুষদের বোঝা এবং তাদের থেকে দূরে থাকা। ভুলেও কখনও যেচে তাদের ভালো করতে যাবেন না বা জ্ঞান দিতে যাবেন না। এতে হিতে বিপরীত হবে। তিনি আপনার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন এবং ছোটখাটো ব্যাপারেও আপনাকে বিরক্ত করবেন।নয়তো ভাববেন আপনি এই পরিস্থিতিতে মজা পাচ্ছেন এবং লেকচার দিচ্ছেন।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এগুলোও আপনি পড়তে পারেন