শান্তিনিকেতনের দোল উৎসবের (holi) মাদকতা সম্পর্কে নতুন করে কী আর বলবো! এখানকার রঙ খেলা তো জগৎ বিখ্যাত। তবে রঙের উৎসব যদি একটু অন্যভাবে উপভোগ করতে মন চাও, তাহলে ব্যাকপ্যাক গুছিয়ে কয়েকজন মিলে ঘুরে আসতে পারো এ দেশের এই জায়গাগুলি থেকেও (Best Places to Celebrate Holi in India)। কারণ এখানকার দোল উৎসবও কিন্তু বেজায় নজরকাড়া! সেই সঙ্গে উপরি পাওনা হবে আজব সব সংস্কৃতি চাক্ষুস করা, যা বছরের পর বছর ধরে মেনে আসছেন এখানকার মানুষজন।
কোন কোন জায়গার কথা বলছি, তাই ভাবছো নিশ্চয়? তাহলে আর অপেক্ষা কেন ঝটপট পড়ে ফেলো না বাকি প্রবন্ধটা…!
আরও পড়ুনঃ হোলি উপলক্ষে বিশেষ শুভেচ্ছা বার্তা
১. মথুরা এবং বৃন্দাবন:
বছরের এই বিশেষ সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তো বটেই, সেই সঙ্গে বিদেশি পর্যটকেরাও মথুরা এবং বৃন্দাবনে এসে ভিড় জমায় (mathura holi india)। আর কেন এমনটা করবে নাই বা বলো! এখানকার সপ্তাহ ব্যাপী দোল উৎসব যে সত্যিই দেখার মতো।
কীভাবে যাবে:
হাওড়া থেকে ট্রেনে পৌঁছে যেতে পারো মথুরা-বৃন্দাবন। তবে ইচ্ছা হলে দিল্লি এসে সেখান থেকেও যাওয়া যেতে পারে। গাড়িতে সময় লাগবে কম-বেশি সাড়ে তিন ঘন্টা।
২. বার্সানা, উত্তরপ্রদেশ:
বেশ ধুমধাম করে হোলির উৎসব পালন করে হয়ে থাকে (barsana holi india)। তবে আরেকটি কারণেও বার্সানার দোল উৎসব বেজায় জনপ্রিয়। এখানে হোলির দিন বিবাহিত মহিলারা মজা করে স্বামীকে লাঠি দিয়ে মারেন। আর স্বামীরা একটা ঢালের মতো জিনিস দিয়ে নিজেদের বাঁচান। কিছুক্ষণ এমন খেলা চলার পরে শুরু হয় রং খেলা। তাই তো এই উৎসবকে অনেকে “লাঠ মার হোলি” নামেও ঢেকে থাকে। তাই বুঝতেই পারছো হোলির সময় এখানে উপস্থিত থেকে এমন ভিন্ন ধরনের দোল উৎসবে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা যে কম রোমাঞ্চকর হবে না, তা তো বলাই বাহুল্য!
কীভাবে যাবে:
কলকাতা থেকে প্লেনে আগ্রা, সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে পৌঁছে যেতে পারো বার্সানা। গাড়িতে সময় লাগবে ২ ঘন্টার মতো। তবে ট্রেনে যেতে চাইলে সে উপায়ও আছে। হাওড়া থেকে বেশ কয়েকটি ট্রেন রয়েছে কোসি কালান পর্যন্ত। সেখানে পৌঁছে লোকাল ট্রান্সপোর্ট নিয়ে পৌঁছে যেতে পারো বার্সানা।
৩. আনন্দপুর সাহিব:
গুরু গোবিন্দ সিংহ আনন্দপুর সাহিবে হোলি উৎসব শুরু করেছিলেন। সেই থেকে প্রতি বছর মার্চ মাসে এখানে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। তবে এখানে রং খেলার মজা তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে এখানকার বিশেষ আকর্ষণ হল মার্শাল আর্টের প্রদর্শন, যা একথায় অসাধারণ! তবে তিন দিন ধরে চলা এই উৎসবে রং খেলা এবং মার্শাল আর্টের পাশাপাশি কির্তন এবং কবিতা পাঠের আয়োজনও করাও হয়ে থাকে। তাই সব মিলিয়ে আনন্দপুর সাহিবের দোল উৎসব যে একটু হলেও অন্যরকমের, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
কীভাবে যাবে:
কলকাতা থেকে ট্রেন বা প্লেনে অমৃতসর। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে আনন্দপুর সাহিব পৌঁছাতে সময় লাগবে কম বেশি সাড়ে তিন ঘন্টা।
৪. জয়পুর:
কেল্লা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে এখানকার হোলি উৎসবে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা যে একেবারে ভিন্ন স্বাদের হবে, তা তো বলাই বাহুল্য (holi festival in jaipur)। তাই তো বলি, কয়েক দিনের ছুটি ম্যানেজ করতে পারলে আগামী বছর দোল উৎসবের সময় জয়পুর থেকে একবার ঘুরে আসতেই পারো। কারণ দুদিন ধরে চলা এখানকার রাজকীয় হোলির উৎসব সত্যিই দেখার মতো। প্রথম দিন “হোলিকা দহন” নামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, আর দ্বিতীয় দিনে সুসজ্জিত হাতির প্রসেশানের পর জয়পুরের প্রতিটি গলি যেন রং এবং অবিরের ছোঁয়ায় হয়ে ওঠে রঙিন। তাই তো বলি, রাজস্থানের অলিতে গলিতে রং খেলার পাশাপাশি রাজস্থানী ফোক ডান্সের তালে নিজেকে ভাসিয়ে দিতে যদি মন চায়, তাহলে বছরের এই একটা সময় জয়পুর আসা চাইই চাই! তবে ইচ্ছা হলে জয়পুরের পাশাপাশি উপদপুরও ঘরে দেখতে পারো। কারণ এখানকার হোলির উৎসবও কিন্তু বেজায় জনপ্রিয়।
কীভাবে যাবে:
কমবেশি প্রায় ৫ টা ট্রেন হাওড়া থেকে সরাসরি জয়পুর পর্যন্ত যায়। তবে ইচ্ছা হলে প্লেনেও যেতে পারো। আর আগে থেকে যদি টিকিট কেটে রাখতে পারো, তাহলে খরচ একটু কম হবে।
৫. নবদ্বীপ-মায়াপুরের হোলি:
দোল উৎসবের কথা যখন হচ্ছেই তখন মায়াপুরকে বাদ দেওয়া যায় কীভাবে বলো! ইস্কন মন্দিরের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত এখানকার হোলির উৎসব সত্যিই মনকাড়া। আর শুধু কী রং খেলা, সেই সঙ্গে এখানে এসে কির্তন মেলা, গঙ্গা পুজো, নবদ্বীপ ধাম পরিক্রমা এবং বোট ফেস্টিভালেের স্বাদ নেওয়ার সুযোগও মিলবে!
কীভাবে যাবে:
কলকাতা থেকে ট্রেনে যেমন যাওয়া যায়, তেমনি গাড়ি নিয়েও যাওয়া যেতে পারে নবদ্বীপ-মায়াপুর। সময় লাগবে কম-বেশি চার ঘন্টা।
ছবির কৃতজ্ঞতা স্বীকার: wikipedia,youTube
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!