শীত চলে গিয়ে আস্তে আস্তে গরম যে পড়ছে সেটা বেশ বোঝা যাচ্ছে। আর একমাস বাদেই বৈশাখ মাস পড়ে যাবে আর বৈশাখ মানেই তো বিয়ের মরসুম চলে আসবে। আমাদের বাঙ্গালীদের বিয়েতে তো আবার অনেক রকমের নিয়ম-কানুন মানা হয়। দধি মঙ্গল, নান্দীমুখ, বৃদ্ধি, জল সইতে যাওয়া, গায়ে হলুদ, হোম, আরও কত কিছু। তার মধ্যে অবশ্য গায়ে হলুদের নিয়মটা বেশ মজার। কাকিমা-জেঠিমা, মাসি-পিসি, দিদি-বৌদি মোটামুটি সবাই মিলে বিয়ের কনেকে বেশ ভালো করে হলুদবাটা লাগিয়ে স্নান করানো হয়। সেসব করতে গিয়ে বেশ মজাও হয়। কিন্তু গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান টা ঠিক কি কি কারণে হয় সেটা কি আপনি জানেন? না জানলে জেনে নিন এখানে –
গায়ে হলুদ ব্যাপারটা কি?
শুধু বাঙ্গালীদের বিয়েতে না, যে কোনও ভারতীয় হিন্দু বিয়েতেই গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের (biyer aage gaye holud) একটা আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। বরের বাড়ির থেকে হলুদবাটা নিয়ে বরপক্ষ আসেন কনের বাড়িতে। বরের গায়ে ছোঁয়ানো হলুদবাটা আর কনের বাড়ির হলুদ একসাথে মিশিয়ে তারপর তা লাগানো হয় কনেকে। বিয়ের দিন সকালে এই অনুষ্ঠান হয়। অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিয়ের আগের দিন গায়ে হলুদ বা ‘হলদি’ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। অনেকে আবার হলুদবাটার সাথে গোলাপজল, চন্দনবাটা এবং দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে বর এবং কনের মুখে, কাঁধে, পায়ের পাতায় লাগান। অনেক সময়েই নাচ-গান করে এবং উলু দিয়ে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান করা হয়।
কনের গায়ে ‘হলুদ’-ই কেন লাগানো হয়?
কিন্তু প্রশ্ন হল, বিয়ের আগে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে বর এবং কনের গায়ে হলুদ-ই কেন লাগানো হয়! অন্য কিছুও তো লাগানো যেতে পারে। আসলে প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে হলুদ রূপচর্চা থেকে আরম্ভ করে ওষধি হিসেবে নানা জায়গায় দারুণভাবে কাজে লাগে। আর বিয়ে বাড়িতে তো হলুদের গুরুত্বই আলাদা। কেন? জেনে নিন এখনি –
যাতে নজর না লাগে
অনেকেই মনে করেন যে বর এবং কনে যদি বিয়ের আগে গায়ে হলুদ লাগান, তাহলে নাকি তাঁদের নজর লাগে না। সেকারণেই বোধ হয় গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান হয়ে যাবার পর বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত বর কনেকে বাড়ি থেকে বেরতে দেওয়া হয়না।
হলুদ রঙ অর্থাৎ পবিত্র রঙ
বিয়ে কিন্তু একটা পবিত্র ব্যাপার আর পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে হলুদ রঙটাও খুবই পরিচিত। সেজন্যই তো বিয়ের কার্ডেও হলুদের ফোঁটা দেওয়া হয়। অনেকেরই বিশ্বাস যে হলুদ রঙ খুব শুভ কাজেই দু’জন মানুষ নতুন জীবনে প্রবেশ করার আগে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁদের জীবনে শুভাশিস প্রদান করা হয়।
বর ও কনের মুখে ‘এক্সট্রা গ্লো’ আনে
আগেকার দিনে তো আর বিউটি পার্লার ছিল না বা এতো কসমেটিক্সও ছিল না, তাই থাকুমা-দিদিমারা প্রকৃতির উপরেই ভরসা করে থাকতেন, তা সে দৈনন্দিন রূপচর্চাই হোক কিংবা বিয়ের জন্য স্পেশ্যাল রূপচর্চাই হোক! হলুদ যেহেতু ত্বকের নানা সমস্যা দূর করে এবং ত্বকে একটা আলাদা জেল্লা নিয়ে আসে, তাই বিয়ের আগে গায়ে হলুদের এই অনুষ্ঠানে বর আর কনের মুখে, হাতে, কাঁধে আর পায়ে জমিয়ে হলুদ লাগানো হয়।
অবিবাহিতদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যায়
এটা কিন্তু অনেকেই মনে করেন যে কনের গায়ের ছোঁয়ানো হলুদ যদি অবিবাহিত কারও গায়ে লাগিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে নাকি তার তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যায়! সত্যি-মিথ্যে আমি জানি না, আপনি নিজে ট্রাই করুন 😉
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এগুলোও আপনি পড়তে পারেন