Periods

অনিয়মিত ঋতুস্রাবের ১০টি সম্ভাব্য কারণ এবং তার ঘরোয়া সমাধান (Delayed Period Causes In Bengali)

Debapriya Bhattacharyya  |  May 12, 2019
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের ১০টি সম্ভাব্য কারণ এবং তার ঘরোয়া সমাধান (Delayed Period Causes In Bengali)

শিঞ্জিনী কয়েকদিন ধরেই কেমন অন্যমনস্ক। বাড়িতেও কারও সঙ্গে ঠিকভাবে কথা বলছে না, কলেজে যাচ্ছে ঠিকই, তবে সেখানেও ক্লাসে অন্যমনস্ক থাকায় বেশিরভাগ সময়েই প্রোফেসরদের কাছে বকা খাচ্ছে, বন্ধুদের সঙ্গেও বেশি ঘোরাঘুরি বা খাওয়াদাওয়া কোনোটাই করছে না। অকারণে খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে। একবারের বেশি দু’বার একটা কথা বললেই এমনভাবে রিঅ্যাক্ট করছে যেন কী না কী ঘটে গেছে। কলেজের প্রথমবর্ষের প্রাণোচ্ছল এবং মেধাবী মেয়েটি যেন হঠাৎ করেই পাল্টে গেছে। শেষ পর্যন্ত ওর মা চেপে ধরতে শিঞ্জিনীর এই অদ্ভুত আচরণের কারণ জানা গেল। তার কথায়, লাস্ট দু’মাস তার ঋতুস্রাব হয়নি (Delayed Period) এবং তাতে তার শরীরে এক অদ্ভুত কষ্ট হচ্ছে। মাঝে-মাঝেই পেটে যন্ত্রণা হচ্ছে এবং অসম্ভব দুর্বল হয়ে পড়ছে সে দিন-দিন। শিঞ্জিনী এ-ও জানায়, কোথায় নাকি ও শুনেছে যে, অনিয়মিত ঋতুস্রাব নাকি জরায়ুতে টিউমার হলে হয়। এই নিয়েই সে অত্যন্ত চিন্তায় পড়েছে। এমনকী বেচারি কাঁদতে-কাঁদতে তার মাকে এ-ও জানায় যে, তার কোনও প্রেমিক নেই, কাজেই প্রেগন্যান্সি তার ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার কারণ (Delayed Period Causes In Bengali) হতে পারে না। সব শুনে শিঞ্জিনীর মা তাকে নিয়ে যান শহরের নামী একজন স্ত্রীরোগ বিশেশজ্ঞের কাছে এবং সেখানেই তাঁরা প্রথম জানতে পারেন যে, প্রেগন্যান্সি ছাড়াও এমন অনেক কারণ (Reasons) থাকতে পারে, যার ফলে ঋতুস্রাব অনিয়মিত (Irrerugalr Periods) হয়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ কীভাবে মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করবেন

অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া টোটকা

অনিয়মিত ঋতুস্রাব সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নোত্তর

পিরিয়ড পিছিয়ে যাওয়ার ১০টা সম্ভাব্য কারণ (Reasons Of Delayed Period)

আমাদের শারীরিক অবস্থা থেকে শুরু করে মানসিক পরিস্থিতি এবং পারিপার্শ্বিক অনেক কারণেই ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে বা অনিয়মিত হতে পারে। এখানে আমরা অনিয়মিত ঋতুস্রাবের ১০টি সম্ভাব্য কারণ (Delayed Period Causes In Bengali) আপনাদের জানাব, যেগুলো শুনলে হয়তো আপনি অবাক হয়ে যেতে পারেন! 

১। হরমোনাল সমস্যা (Hormonal Reasons):

PCOS  বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম কিন্তু অনিয়মিত ঋতুস্রাবের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে। সত্যি কথা বলতে কী, শুনলে হয়তো অবাক হবেন যে, অনেক মহিলা সারা জীবন জানতেও পারেন না যে, তাঁদের এই সমস্যাটি রয়েছে। পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম একটি হরমোনাল সমস্যা। মহিলাদের শরীরে নানা হরমোনের মধ্যে ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন এবং টেস্টোস্টেরনের স্বাভাবিক ক্ষরণে মহিলাদের প্রতি মাসে ঋতুস্রাব হয়ে থাকে। কিন্তু যখন এই হরমোনগুলির ক্ষরণ কম হয় এবং শরীরে মেল হরমোন অর্থাৎ অ্যান্ড্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় তখন পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের সমস্যা শুরু হয়। আপনার যদি এমন কোনও সমস্যা হয়ে থাকে, তা হলে প্রথমেই তা অবহেলা না করে ডাক্তারের সাহায্য নিন। অনিয়মিত ঋতুস্রাব কিন্তু PCOS-এর একটি অন্যতম লক্ষণ, তবে ঠিক সময়ে চিকিৎসা করলে সহজেই তা নিরাময় করা সম্ভব।

তবে শুধু যে PCOS-এর কারণেই অনিয়মিত ঋতুস্রাব হতে পারে তা নয়। আমাদের শরীরে থাইরয়েডের মাত্রা বৃদ্ধি পেলেও কিন্তু ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রেও অবহেলা না করে প্রথমেই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

২। মদ্যপান (Drinking Alcohol):

অনেকই আজকাল নিয়মিত মদ্যপান করেন। তাঁদের মধ্যেও কিন্তু অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা দেখা যায়। আপনি বলতেই পারেন যে, আপনি তো প্রতিদিন মদ্যপান করেন না, মাঝেমধ্যে হয়তো কোনও অনুষ্ঠানে এক-দুটো পেগ নিলেন…সেক্ষেত্রেও কিন্তু অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা হতে পারে। অ্যালকোহল ইস্ট্রোজেন এবং টেস্টোস্টেরন ক্ষরণের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলস্বরূপ একজন মহিলার স্বাভাবিক ঋতুচক্র বাধাপ্রাপ্ত হয়ে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে কিন্তু মদ্যপান একদম বন্ধ করতে হবে। হ্যাঁ, ওই মাঝেমধ্যে ব্যাপারটাও চলবে না আর!

৩। বেড়াতে যাওয়া (Traveling): 

হ্যাঁ, একদম ঠিক পড়েছেন। কোথাও বেড়াতে যাওয়ার ফলেও কিন্তু আপনার অনিয়মিত ঋতুস্রাব হতে পারে। একদম নির্ধারিত তারিখেই প্রতি মাসে পিরিয়ড হয়, এমন সৌভাগ্য খুব কম মহিলারই হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট তারিখের এক-দু’দিন আগে অথবা পরে পিরিয়ড হয়। তাকে কিন্তু অনিয়মিত ঋতুস্রাব বলা চলে না। তবে অনেকসময় কিন্তু পিরিয়ড বেশ কয়েকদিন পিছিয়ে যেতে পারে বা এগিয়ে আসতে পারে এবং সেটা অন্য কোথাও বেড়াতে যাওয়ার ফলে। আসলে অন্য একটা আবহাওয়া, লম্বা জার্নি, অন্য একটা টাইম জোন (যদি দেশের বাইরে বেড়াতে যান) – এসব আপনার শরীরের বায়োলজিক্যাল ক্লককে একটু ঘেঁটে দেয় আর কী! খেয়াল করে দেখবেন, অনেকেরই বেড়াতে যাওয়ার ঠিক আগেই পিরিয়ড শুরু হয়, আবার অনেকের দেরি করে শুরু হয়। এক্ষেত্রে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। জাস্ট বেড়ানোটা উপভোগ করুন!

৪। রুটিন বদলানো (Changes In Your Daily Routine):

আপনি কি সদ্য কোনও নতুন চাকরিতে যোগ দিয়েছেন বা কলেজ শুরু করেছেন? আপনার কি ঘুমনোর সময় বদলেছে? কিছুদিন ধরে কি রাত জাগা চলছে? অথবা যে সময়ে যে কাজ করতেন তার কি সময় বদলেছে? এর মধ্যে একটা প্রশ্নের উত্তরও যদি ইতিবাচক হয়, তা হলে কিন্তু আপনার পিরিয়ডের তারিখ পিছোতে পারে। আমরা বহুদিন ধরে যে কাজটি যে সময় করতে অভ্যস্ত, সেই কাজটি যদি আমাদের অন্য সময়ে করতে হয় এবং সেটাও আবার হঠাৎ করে, সেক্ষেত্রে আমাদের শরীরের বায়োলজিক্যাল ক্লকেরও তো ব্যাপারটাতে সরগড় হতে সময় লাগবে, তাই না? ধরুন, আপনি এতদিন পর্যন্ত দিনে জাগতেন আর রাতে ঘুমতেন। কিন্তু সদ্য আপনি এমন একটি কাজে যুক্ত হয়ে পড়লেন যেখানে আপনার স্লিপ সাইকেল উল্টে গেল! অর্থাৎ এবার থেকে আপনাকে দিনে ঘুমতে হবে এবং রাতে জাগতে হবে; সেক্ষেত্রে এই রুটিনে আপনার শরীরেরও অ্যাডজাস্ট হতে সময় লাগবে। আশ্চর্যের বিষয় হল, ওভল্যুশনের সময় যদি এই পরিবর্তনটা আপনার জীবনে শুরু হয়, তা হলে আপনার শরীরের হরমোনের উপরে এর প্রভাব একটু বেশিই পড়ে। যদি এই কারণে আপনার অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয়, তা হলে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। কিছুদিন অপেক্ষা করুন, শরীরকে একটু সময় দিন নতুন রুটিনের সঙ্গে সড়গড় হতে, পিরিয়ড আবার নিয়মিত হয়ে যাবে।

৫। ধকল (Too Much Stress):

আজকাল কেউ বুক বাজিয়ে বলতে পারবেন না যে, তাঁর জীবন এক্কেবারে স্ট্রেস-ফ্রি! হ্যাঁ, প্রতিদিনের কাজের ধকল, ডেডলাইন মিট করা, টার্গেট পূরণ করা, সংসারের চাপ, স্কুল-কলেজে প্রতিযোগিতা এবং তার সঙ্গে উত্তরোত্তর বাড়তে থাকা পরিবেশ দূষণ – ধকল বাড়ার পিছনে এগুলোই মূলত কারণ হিসেবে কাজ করে। এই ধকলের প্রভাব কিন্তু আপনার স্বাভাবিক ঋতুচক্রের উপরে পড়তেই পারে। যে-মুহূর্তে আপনি শারীরিক এবং মানসিকভাবে বিধ্বস্ত, সেই মুহূর্ত থেকে তা আপনার শরীরের হরমোনের উপর প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে এবং সেক্ষেত্রে কখনও-কখনও পিরিয়ড দেরিতে (Delayed Period) শুরু হতে পারে।

৬। নিয়মিত ধূমপান (Regular Smoking):

যাঁরা নিয়মিত ধূমপান করেন, অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বাকিদের তুলনায় তাঁদের ক্ষেত্রে অনেকটাই বেশি থাকে। অনেকেই আছেন, যাঁরা অনেক কম বয়স থেকে ধূমপান করেন, তাঁদের শরীরে ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন এবং টেস্টোস্টেরন ক্ষরণের মাত্রা অন্যদের তুলনায় অনেকটা কমে যায়। ফলে অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সঙ্গে বন্ধাত্বের আশঙ্কাও অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। কাজেই, আপনিও যদি নিয়মিত ধূমপান করেন, এই মুহূর্তে তা বন্ধ করুন।

৭। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হওয়া (Lack Of Sleep):

ঘুম যদি পর্যাপ্ত না হয়, তা হলে যে শুধু বড়-বড় হাই উঠবে তা নয়, ঋতুস্রাবও কিন্তু দেরিতে হতে পারে! শরীরে ক্লান্তি থাকলে তা হরমোনের ভারসাম্যে তারতম্য আনতে পারে এবং অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক কাজ করুন, টেনে ঘুম দিন। শরীরকে ঠিকভাবে চালাতে পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। নিশ্চই জানেন, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের অন্তত আট ঘণ্টা ঘুম দরকার সারাদিনে!

৮। হঠাৎ করে ওজন বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া (Weight Gain or Loss):

অনেক সময় আমরা চট করে ওজন কমানোর জন্য ক্র্যাশ ডায়েটিং করতে শুরু করি। এতে ওজন হয়তো কমে, কিন্তু শরীরে হরমোনাল ভারসাম্যের অভাবও দেখা যায়। আবার অনেক সময় থাইরয়েড বেশি নিঃসৃত হলে ওজন বেড়ে যায়। চট করে ওজন কমা অথবা বাড়া – এই দুই ক্ষেত্রেই কিন্তু ঋতুচক্রের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে এবং পিরিয়ড পিছতে পারে।

৯। অতিরিক্ত এক্সারসাইজ (Extreme Workout):

আপনি কি ইদানীং খুব বেশি ওয়ার্কআউট করছেন অথবা ওজন কমানোর জন্য মরিয়া হয়ে দৌড়োদৌড়ি করছেন? তা হলে একটু শান্ত হয়ে বসুন। হঠাৎ করে যেমন রুটিন পরিবর্তন হলে বায়োলজিক্যাল ক্লক ঘেঁটে যায়, তেমনই হঠাৎ করে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করলেও কিন্তু তা আপনার শরীরের হরমোনের উপরে প্রভাব ফেলতে পারে। ফলস্বরূপ ঋতুচক্রে পরিবর্তন দেখা দিতে পারে অর্থাৎ হয় পিরিয়ডের তারিখ পিছতে পারে বা এগিয়ে আসতে পারে।

১০। ভুল ক্যালকুলেশন (Wrong Calculation):

মোটামুটি ২৮ দিনের সাইকেল হলে বলা হয় যে, আপনার ঋতুচক্রে কোনও সমস্যা নেই। অর্থাৎ আগের মাসে আপনার যেদিন পিরিয়ড শুরু হয়েছিল, তার ঠিক ২৮ দিনের মাথায় যদি আবার পরের বার পিরিয়ড শুরু হয়, তা হলে বলতে পারেন যে, আপনার পিরিয়ড ক্লক নর্মাল। এক-দু’দিন এদিকওদিক হলে চিন্তা করবেন না। আর হ্যাঁ, যদি আপনি তারিখ গুনতে ভুল করেন বা মনে রাখতে না পারেন, তা হলে একটা ডায়েরি মেনটেন করুন পারেন অথবা POPxo-র পিরিয়ড ট্র্যাকার গুলাবো-র সাহায্য নিতে পারেন। 

অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ট্রাই করুন এই ঘরোয়া টোটকা গুলো (Home Remedies For Irregular Periods):

অনিয়মিত ঋতুস্রাব (Irregular Periods) থেকে মুক্তি (Solution) পেতে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তিনি যে ওষুধ দেবেন সেগুলো নিয়মিত খাওয়াও উচিত। তবে তার সঙ্গে কয়েকটা ঘরোয়া টোটকাও ট্রাই করে দেখতে পারেন, এগুলোর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।

১। পুদিনা পাতা (Mint):

পুদিনা পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। এক টেবিল চামচ মধুর সঙ্গে এক চা চামচ পুদিনা পাতার গুঁড়ো মিশিয়ে দিনে তিনবার করে খাবার আগে খান। এভাবে প্রতিদিন খেয়ে যেতে হবে প্রায় কয়েকমাস। অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা কমানোর সঙ্গে পিরিয়ড ক্র্যাম্প কমাতেও এই টোটকাটি অত্যন্ত কার্যকরী।

২। কাঁচা পেঁপে (Papaya):

কাঁচা পেঁপে জরায়ুর পেশি সঙ্কুচিত করে রক্তের প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং জমাট রক্ত অর্থাৎ ব্লাড ক্লট পাতলা করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন একবার করে দু’-তিন চামচ কাঁচা পেঁপের রস অথবা এক টুকরো কাঁচা পেঁপে সেদ্ধ করে খান কয়েক মাস। পিরিয়ড স্বাভাবিক সাইকেলে ফিরে আসবে। তবে হ্যাঁ, পিরিয়ড চলাকালীন কিন্তু কাঁচা পেঁপে খাবেন না, তাতে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যেতে পারে এবং অধিক রক্তপাতে শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।

৩। মৌরি (Fennel Seed):

পি এম এসের (post menstrual syndrome) সময় অনেকের তলপেটে, কোমরে বা পায়ের পাতায় যন্ত্রণা হয়। এক চামচ কাঁচা মৌরি এক গ্লাস জলে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন ওই মৌরি-ভেজানো জল ছেঁকে খেয়ে নিন। খালি পেটে সকালবেলা জলটা খেতে হবে। অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কমপক্ষে মাসখানেক মৌরি ভেজানো জল খেয়ে যেতে হবে।

অনিয়মিত ঋতুস্রাব সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নোত্তর (FAQs)

প্রশ্ন: অনিয়মিত পিরিয়ড কি বন্ধ্যাত্ব?

উত্তর: না। অনিয়মিত পিরিয়ড আর বন্ধ্যাত্ব, একই ব্যাপার নয়। আপনার যদি অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রেও কিন্তু আপনার ওভাল্যুশন হতে পারে অর্থাৎ ডিম্বাশয় থেকে এগ রিলিজ হতে পারে। তবে যদি অনিয়মিত ঋতুস্রাবের কারণে এগ রিলিজ না করে অথবা ওভারিতে কোনও সমস্যা দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্ব আসতেই পারে। কাজেই সমস্যা জটিল হওয়ার আগেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হন।

প্রশ্ন: আমার অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা রয়েছে। এতে কি আমার প্রেগন্যান্সিতে সমস্যা আসতে পারে?

উত্তর: যদি আপনার ওভারি থেকে এগ রিলিজ করে, সেক্ষেত্রে গর্ভধারণ করতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে অনেকসময় অনিয়মিত ঋতুস্রাবের ফলে ওভারিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং তখন আর ডিম্বাশয় থেকে এগ রিলিজ করে না। সেক্ষেত্রে প্রেগন্যান্সিতে সমস্যা হতে পারে।

প্রশ্ন: ঠিক কত দেরি হলে বুঝব যে আমার পিরিয়ড সাইকেল ঠিক নেই?

উত্তর: সাধারণত ২৮ দিনের সাইকেল হল নর্মাল পিরিয়ড সাইকেল। তবে কারও-কারও ক্ষেত্রে সাইকেল ২১ থেকে ৩৫ দিনেরও হয়। যদি কখনও ৩৫ দিনের থেকে বেশি সময় অতিক্রান্ত হবার পরেও ঋতুস্রাব শুরু না হলে তা চিন্তার বিষয়।

প্রশ্ন: পিরিয়ড সাইকেল মানে কি?

উত্তর: প্রতি মাসে যে কদিনের ব্যাবধানে ঋতুস্রাব হয়, তাকেই বলা হয় পিরিয়ড সাইকেল বা ঋতুচক্র। ধরুন, গত মাসে আপনার ১৩ তারিখে পিরিয়ড শুরু হয়েছে আর এই মাসে শুরু হয়েছে ১০ তারিখে। সেক্ষেত্রে আপনার ঋতুচক্র ২৭ দিনের (৩০ দিনে মাস এই হিসেবে)। অর্থাৎ আপনার শেষ পিরিয়ড যেদিন শুরু হয়েছিল আর আপনার এবারের পিরিয়ড যেদিন শুরু হয়েছে, তার মধ্যে যত দিনের ব্যাবধান, সেটাই আপনার পিরিয়ড সাইকেল বা ঋতুচক্র।

প্রশ্ন: PCOS আর অনিয়মিত পিরিয়ড কি এক ব্যাপার?

উত্তরঃ না। PCOS ঋতুস্রাব অনিয়মিত হওয়ার একটি কারণ মাত্র।

POPxo এখন ৬টা ভাষায়, ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!

এগুলোও আপনি পড়তে পারেন

AIDS এর লক্ষণ

মুড সুইং কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?

সাদাস্রাব থেকে মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া টোটকা

Read More From Periods