বিনোদন

‘ত্রিনয়নী’ শেষ, এবার কী করবেন শ্রুতি?

Swaralipi BhattacharyyaSwaralipi Bhattacharyya  |  Jul 19, 2020
‘ত্রিনয়নী’ শেষ, এবার কী করবেন শ্রুতি?

শাড়ি। কপালে সিঁদুরের টিপ। টেনে বাঁধা খোঁপা। মেয়েটির বিশেষ কিছু ক্ষমতা রয়েছে। ঠিক এভাবেই ‘ত্রিনয়নী’ ধারাবাহিকে ‘নয়ন’কে দেখতে অভ্যস্ত দর্শক। ‘নয়ন’ অর্থাৎ শ্রুতি (Shruti) দাস। প্রায় দেড় বছর চলার পর আগামী ২৬ জুলাই শেষ হতে চলেছে এই জনপ্রিয় ধারাবাহিক। কেমন এই জার্নি। লকডাউনের পরেও সমস্ত সুরক্ষা মেনে শুটিং শেষ করার পর আড্ডা দিলেন শ্রুতি।

‘ত্রিনয়নী’র শুরুটা কেমন ছিল?

এই ধারাবাহিকে আমার অভিনয়ের শুরুটা খুব সহজ ছিল না। আমার বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায়। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে আমি। সেখানেই স্কুল, নাচ শেখা, মডেলিং। ‘ত্রিনয়নী’ শুরুর সময় ফেসবুকে কাস্টিংয়ের জন্য পোস্ট করা হয়। সেটা দেখে আমার এক পরিচিত রেফার করেছিলেন। আমি ছবি পাঠিয়েছিলাম। তারপর একদিন দেখা করতে যাই। কিন্তু ছবির সঙ্গে আমার কোনও মিল না থাকায় বাতিল করে দেওয়া হয়। এর কয়েকদিন পরে একটা ভিডিও নিজেই মোবাইলে শুট করে পাঠিয়েছিলাম। সেটা দেখে সিলেক্ট করা হয় আমাকে।

অভিনয় শুরু করার পর নিশ্চয়ই কলকাতায় থাকছেন?

হ্যাঁ। স্টুডিওর কাছেই টালিগঞ্জে থাকতে শুরু করি। বাবা-মাকে পরে নিয়ে এসেছি। আমরা এখন এখানেই থাকি।

কলকাতায় এসে কি কলেজ শুরু করলেন?

ট্র্যাডিশনাল সাজে শ্রুতি। ছবি ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে।

আমি বিদ্যাসাগর উওম্যানস কলেজে ইংলিশ অনার্স নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলাম। কিন্তু গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করতে পারিনি। তার আগেই অভিনয় শুরু করে দিয়েছিলাম। আর এখন এই জগতেই আরও কাজ করতে চাই। তাই এখনও হয়তো আবার পড়াশোনা শুরু করা সম্ভব হবে না। তবে ভবিষ্যতে ইচ্ছে আছে।

দেড় বছরের জার্নি শেষ। হঠাৎ করেই হাতে অনেকটা সময়। প্রতিদিনের ব্যস্ততা নেই। নতুন কাজের অফার আসছে?

এখনও অফার আসেনি। আর আমিও একটু নিজেকে সময় দিতে চাইছি। ‘ত্রিনয়নী’তে আমার চরিত্র মানে ‘নয়ন’কে মানুষ একটু ভুলে যাক। তারপর আবার নতুন কাজ করব। এই মুখটা এত পরিচিতি পেয়েছে, যে এখনই নতুন কিছু ভাবিনি।

আপনি কাটোয়ায় থিয়েটার করতেন। কলকাতায় এসে সেই চর্চাটা আবার শুরু করলেন না কেন?

মেগায় মূল চরিত্রে অভিনয় করলে আলাদা কিছু করার আর সময় পাওয়া যায় না। আমি ‘অনুভব’ নামের একটা গ্রুপে থিয়েটার করতাম। কলকাতার বহু বিখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্বরা কাটোয়াতে গিয়ে ক্লাস করাতেন। সেখান থেকে শিখতে পেরেছি। এখন এই ফাঁকা সময়টাতে কোনও একটা কোর্স করার ইচ্ছে রয়েছে।

মাত্র ২৪ বছর বয়সে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন আপনি। এই সাফল্যের পরেও নিজেকে আগের মতো রাখার মন্ত্রটা কী?

পুরস্কার পাওয়ার মুহূর্ত। ছবি ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে।

এই বিষয়ের পুরো ক্রেডিটটাই আমার বাবাকে দিতে চাই। বাবা একটি দোকানের কর্মচারী ছিলেন। বাবাকে প্রতিদিন সকালে দোকান খুলতে বা ঝাঁট দিতেও আমি দেখেছি। প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। কিন্তু আমাকে কখনও সেটা বুঝতে দেননি। আমাকে বড় করে তোলার জন্য কোনও কিছুর অভাব রাখেননি। নাচ শিখিয়েছেন। থিয়েটার করেছি। কোনও কিছুতে কোনওদিন বাধা দেননি। আমাকে এখন তো কিছু লোক চেনেন। কেউ কেউ সেলিব্রিটির তকমাও দিয়েছেন। সেই অর্থে বাবা তো একজন সেলিব্রিটির বাবা। তারপরও কিন্তু বাবা একই রকম আছে। ফলে আমি ভেবেছি, বাবা যদি এতটা ডাউন টু আর্থ হতে পারে, তাহলে আমি কেন পারব না? ফলে মাথা ঘুরে যাওয়ার কোনও চান্স নেই। বাবা, মা আমার ইন্সপিরেশন।

নয়ন চরিত্রটা গড়ে তুলতে কার সাহায্য পেয়েছিলেন?

প্রথমেই বলব নয়নকে যিনি তৈরি করেছেন, অর্থাৎ সাহানা দত্তর কথা। উনি যে আমাকে এই চরিত্রটার জন্য ভেবেছেন, আমার উপর বিশ্বাস রেখেছেন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। হাউজও আমাকে ভরসা করেছে। এরপর আমাদের পরিচালক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দার। উনি বারবার বলতেন, তুমি শ্রুতি নও, নয়ন। নিজেকে নয়ন ভাবতে শুরু করো। নিজেকে ভাঙতে হেল্প করেছেন। আর আমি নিজেকে যে নিজে বোঝাতে পেরেছিলাম, আমি নয়ন। সে জন্য নিজের সত্ত্বার কাছেও কৃতজ্ঞতা রয়েছে।

কাজ করতে গিয়ে বন্ধুত্ব হল কার কার সঙ্গে?

‘ত্রিনয়নী’র শুটিং শেষে টিমের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে শ্রুতি। ছবি ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে।

আমি টেকনিশিয়ানদের কাছ থেকে খুব সাহায্য পেয়েছি। আমাদের হিরো গৌরব রায়চৌধুরি, ঋ-দি, মিতাদি, দেবযানিদি, রোহিতদা সকলেই হেল্প করেছে। আমি যে নিউ কামার, সেটা কেউ বুঝতে দেয়নি। বরং সকলেই বলেছেন, তোমার চেষ্টা আছে। তোমাকে আমরা হেল্প করব।

কোনও খারাপ লাগা তৈরি হয়েছিল?

আমাদের টিমের মধ্যে আমার কমপ্লেকশন সবচেয়ে ডার্ক। আমার লাইট করতে সবথেকে বেশি সময় লাগত। তখন কোনও টেকনিশিয়ানের মুখে বিরক্তির ছাপ দেখলে খারাপ লাগত। একবার এক সিনিয়র বলেছিলেন, ও এভাবে কেন হাঁটছে, কিছুই কি না শিখে চলে এসেছে? একা বসে থাকলে এগুলো মনে পরলে খারাপ লাগে। আবার দর্শকদের একটা অংশ, আমার চরিত্রকে নিয়ে কিছু নেগেটিভ কথা বলেছেন। হয়তো গল্পের গতি না বুঝেই বলেছেন। সে সব খারাপ লাগত। যদিও এই চরিত্রই আমাকে অ্যাওয়ার্ড এনে দিয়েছে। ফলে এ সব খারাপ লাগা ভুলে গিয়ে আমি শুধু মন দিয়ে কাজটা করতে চাই।

https://bangla.popxo.com/article/a-chat-with-actress-rupsa-chatterjee-about-tansener-tanpura-in-bengali-899151

POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!

Read More From বিনোদন