বিনোদন

#MeToo থেকে তাঁর সম্ভাব্য বলিউড জার্নি, জীবন এবং কেরিয়ার নিয়ে আড্ডা দিলেন মনামী ঘোষ

Swaralipi Bhattacharyya  |  Aug 25, 2019
#MeToo থেকে তাঁর সম্ভাব্য বলিউড জার্নি, জীবন এবং কেরিয়ার নিয়ে আড্ডা দিলেন মনামী ঘোষ

মনামী (Monami Ghosh) ঘোষ টলিউডের টেলি পাড়ার জনপ্রিয় মুখ। এই মুহূর্তে ‘ইরাবতীর চুপকথা’ দিয়ে প্রতিদিন সন্ধেবেলা আপনার ড্রইংরুমে হাজিরা দেন তিনি। কিন্তু জানেন কি, মনামীর কেরিয়ারের শুরুটা তেমন ছিল? কীভাবে তাঁর যাত্রাপথ এগিয়েছে? পর্দার ইরাবতী আর বাস্তবের মনামীর আদৌ কোনও মিল আছে কিনা? কিংবা বলিউডে কবে দেখতে পাওয়া যাবে মনামীকে? এসব প্রশ্নের উত্তর দিলেন জমাটি আড্ডায়। 

টেলিভিশন তো মনামীর (Monami) চেনা মাঠ। দীর্ঘদিন ধরে লিড রোলে… বেশ কিছু ছবিও করেছেন। শুরুর জার্নিটা কেমন ছিল?

আমরা বসিরহাটের মানুষ। বাবার একটা নাটকের দল ছিল। বাবার পরিচিত ছিলেন দেবীদাস ভট্টাচার্য। এখন দাদা বলি, তখন কাকু বলতাম। মাধ্যমিক দেওয়ার পরই দেবীদাসদার মাধ্যমে প্রথম অফার এসেছিল। তখন ডি ডি ওয়ানের সমরেশ মজুমদারের ‘সাতকাহন’ তৈরি হচ্ছিল। দীপাবলী চরিত্রের জন্য নতুন মেয়ে খোঁজা চলছিল। স্কুলে পড়া মেয়ে। দেবীদাসদার মনে হয়েছিল আমি পারব। সেই শুরু।

অডিশন দিয়েছিলেন?

তখন অডিশন ঠিক হত না। স্ক্রিপ্ট রিডিং হত। বাবার এসবে বরাবরই আগ্রহ ছিল। আমি কলকাতায় এলাম। তার ১০-১৫ দিন পরে ফাইনাল হয়েছিল। তখন ভেবেছিলাম হঠাৎ করে অফার এল, করেই দেখি। পরে পড়াশোনা কমপ্লিট করব, নাচ নিয়ে আরও এগোব। তবে এই সিরিয়ালটা আমার কেরিয়ারে প্রথম টেলিকাস্ট নয় কিন্তু।

ওঃ! তা হলে টেলিকাস্ট প্রথম কোনটা হল?

দেবাংশু সেনগুপ্তের পরিচালনায় ‘শ্যাওলা’। আলফা বাংলার প্রথম মেগা ছিল ওটা। ‘সাতকাহন’-এর শুটিং হত যখন, অন্য ডিরেক্টররা তখন মাঝেমধ্যে দেখতে আসেন। যেমন, দুলাল লাহিড়ি গিয়েছিলেন একদিন, মনে আছে…

নাচ কি প্রফেশনালি শিখেছেন?

ক্লাস এইটে পড়ার সময়ই কথ্থকের ফোর্থ ইয়ার কমপ্লিট হয়ে গিয়েছিল। মাধ্যমিক না হলে ফিফ্থ, সিক্সথ ইয়ার করতে দিত না। অভিনয় করতে শুরু করার পর প্রচুর অ্যাওয়ার্ড শো করতাম। তখন আবার পুরোদমে নাচ শুরু হল। ওখানেই কিন্তু আমি প্রথম ওয়েস্টার্ন শিখছিলাম।

বাবার নাটকের দল ছিল বললেন, স্টেজে পারফর্ম করতেন?

আমি তো মঞ্চেই থাকতাম। নাচ (dance) দিয়েই তো জীবন শুরু। আর নাটকে আমার জন্য অ্যাপ্রোপিয়েট কিছু থাকলে করতাম। ‘রক্তকরবী’তে নন্দিনীর ছোটবেলাটা তখন করেছিলাম। বসিরহাট সে সময় খুব কালচারাল জায়গা ছিল। আমি যোগ ব্যায়ামের ডিস্ট্রিক্ট চ্যাম্পিয়ন ছিলাম, গোল্ড মেডেলিস্ট। অনেকেই  কিন্তু জানেন না…(হাসি) 

বাঃ, এ তো দারুণ ব্যাপার…

হ্যাঁ, এসব তো বলার সুযোগ খুব একটা হয় না। তবে যোগ ব্যায়াম নিয়ে আর বেশি কিছু করিনি। তখন পর পর মেগা করেছি অনেক।

যেমন? কয়েকটার নাম শেয়ার করুন…

তখন আসলে জানতে পারার মাধ্যম তো কম ছিল। ডি ডি ওয়ানে দুপুরে কিছু মেগা হত মনে আছে? সে সময় ‘প্রতীক্ষা একটু ভালবাসার’, ‘ছায়া মানুষ’, ‘কোন সে আলোর স্বপ্ন নিয়ে’- খুব হিট হয়েছিল। আমার আর পরমের (পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়) জুটি ছিল। সাহিত্যধর্মী সিরিয়ালগুলো হত খুব। তারপর তো ‘এক আকাশের নীচে’ অনেক পরে। টেলিফিল্ম হত প্রচুর। ‘শুধু তোমারই জন্য’ সিরিজের জন্যও অনেকগুলো কাজ করেছিলাম। 

প্রথম সিনেমা কোনটা?

শতরূপা সান্যালের পরিচালনায় ‘কালো চিতা’। সে সময় আরও বেশ কিছু ছবি (film) করেছিলাম। আর ইদানীং তো ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’, ‘বেলাশেষে’, ‘মাটি’।

এখন তুলনায় অনেক বেশি ছবি করছেন। আগে কি তেমন অফার আসেনি?

আফটার ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’ সিচুয়েশন কিছুটা চেঞ্জ হয়েছে। দর্শকের চাহিদাও খানিকটা তৈরি হয়েছে। আর এত বেশি টিভিতে (tv) কাজ করেছি যে, ছবি বেশি করিনি। যেগুলো করেছি তেমন পপুলার হয়নি। যখন বুঝেছি কী ধরনের ছবি করতে চাই, তখন তেমন অফার আসেনি। আবার কখনও টিভিতে ব্যস্ত থেকেছি বলে ছবি করা হয়নি। রিসেন্টলি শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, নন্দিতা রায়ের ‘গোত্র’ করার কথা ছিল। হয়ে উঠল না।

দীর্ঘদিন যে টেলিভিশন করছেন, ক্লান্ত লাগে না?

মাঝে-মাঝে তো ক্লান্তি আসেই। সকালে আসা, রাতে বাড়ি যাওয়া…তারপর বেশিরভাগ সিরিয়ালেরই কনটেন্ট কিছুদিন পরে ঘেঁটে যায়, তখনও ক্লান্ত লাগে।

আপনি এত সিনিয়র মেম্বার। কনটেন্ট নিয়ে ইনপুট দেন না?

সত্যি কথা বলতে, ইনপুট দেওয়ার জায়গা থাকে না। গল্প তো অনেক পারমিশনের পর অ্যাপ্রুভ হয়, ফলে হয়ে যাওয়ার পর আর চেঞ্জ করা সম্ভব নয়। কিন্তু ফ্লোরে অনেক সময় মতামত দিই। 

এত দিন ধরে লিড রোল ধরে রাখা মানে বয়স বুঝতে না দেওয়ার সিক্রেটটা কী?

হা হা হা …। এটা কিছুটা জিনগত। আমার বাবাকে সব সময়ই ১০-১৫ বছরের ছোট দেখতে লাগে। আমি সত্যিই এই রেসিপিটা নিজেও জানি না। যখন কেরিয়ার শুরু করেছি, তখন ছোটরা নাম ধরে ডাকলে রাগ হত। তখন নতুন কারও সঙ্গে প্রথম দেখা হলেই আগে বয়স বলতাম। যাতে দিদি বলে। এখন তো ইউজড টু হয়ে গিয়েছি।

এত দিনের অভিজ্ঞতা, এমন কিছু হয়েছিল যেটা আজ মনে হয় না হলেই ভাল হত?

আমার আসলে কিছুতেই কিছু যায় আসে না। যার এই অ্যাটিটিউড থাকে, তাকে বোধ হয় হারানো যায় না! জীবনের সব ক্ষেত্রেই এটা সত্যি। ফলে খারাপ ঘটনা সেভাবেই মোকাবিলা করি। আর আমার সঙ্গে খুব একটা খারাপ হয়ওনি। কী জানি, আমাকে বোধ হয় সবাই ভয় পায়!

ইন্ডাস্ট্রিতে কখনও ব্যাক বাইটিং ফেস করেছেন?

মনে হয় করেছি। এমন কিছু হয়েছে সেটা সন্দেহ করেছি। তবে শিওর নই। কারণ শুনেছি, আন্দাজ করেছি। নিজে তো প্রত্যক্ষভাবে দেখিনি। তবে আমার সমসাময়িকরা কেউ করেনি। যা হয়েছিল, তা অনেক উঁচু লেভেল থেকে বলে আমার ধারণা।

কিছুদিন আগে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে #MeToo নিয়ে প্রবল আলোচনা হয়েছিল। আপনি কখনও তেমন সিচুয়েশন সামলেছেন?

আমি নিজে কখনও #MeToo ফেস করিনি। এটার ভাল, খারাপ দুটো দিকই আছে, জানেন। ভাল দিক হল, লোকে কনসার্নড হবে। ভয় পাবে। ভাববে, এটা করব, লোকে জেনে যাবে। কিন্তু কিছু মেয়ে এটার সুযোগও নিতে পারে। হয়তো তেমন কিছুই না, কিন্তু অন্যদিকে ব্যাপারটা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে।

কিছুদিন আগেই তো মুম্বই থেকে ঘুরে এলেন কিছুদিনের জন্য, তা হলে কি শিগগিরই আপনাকে বলিউডে দেখতে পাব?

‘ইরাবতীর চুপকথা’র পর মে বি। আসলে মেগার অফার এত লোভনীয় হয় যে ছাড়া যায় না। এবার দেখা যাক…

অল দ্য বেস্ট, POPxo বাংলার তরফে আপনাকে আগাম শুভেচ্ছা…

থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ।

POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!

আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!

Read More From বিনোদন