এই থোর বড়ি খাড়া, আর খাড়া বড়ি থোর-এর মতো বোরিংমার্কা জীবনে একটু অ্যাডভেঞ্চার না হলে চলে! একটু ভয়, একটু অ্যাড্রিনালিন রাশ, উফফ… জাস্ট ফাটাফাটি! তাই পকেটের জোর যদি থাকে, তা হলে পাঁচ-ছয় দিনের ছুটি ম্যানেজ করে বেরিয়ে পরুন। কিন্তু প্রশ্ন হল, ব্যাগ তো গুছিয়ে ফেললেন। কিন্তু যাবেন কোথায়? সেই কথাটাই তো বলব এবার।
এদেশের নানা কোনায় নানা অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের ব্যবস্থা রয়েছে। তবে সে সব নিয়ে পরে কথা হবে। আজ চলুন লাইফ জ্যাকেট পরে পাহাড়ি নদীতে ঝাঁপ মারা যাক! না, পাগলের প্রলাপ নয়! এদেশের সেরা কিছু রিভার রাফটিং ডেস্টিনেশনের সন্ধান দিতে চলেছি আমার (Best river rafting destinations in India)। একবার মনের জোরে যদি রিভার রাফটিং করে ফেলতে পারেন, তা হলে সেই অভিজ্ঞতা যে জীবনেও ভুলতে পারবেন না, সেই গ্যারান্টি আমাদের।
এদেশের সেরা কিছু রিভার রাফটিং ডেস্টিনেশন
১. সিন্ধু নদে রাফটিং (Rafting at Indus river)
রাফটিং যদি করতেই হয়, তা হলে একবার লাদাকে পৌঁছে যেতেই হবে (river rafting in india)। কারণ, তুমুল খরস্রোতা সিন্ধু নদে রাফটিং করার অভিজ্ঞতা কম রোমাঞ্চকর নয়। সঙ্গে উপরি পাওনা অবশ্যই পাহাড়ের সৌন্দর্য। একবার ভাবুন, একের পর এক ঢেউয়ের সঙ্গে পাঞ্জা লড়িয়ে এগিয়ে চলেছেন, আর আপনাকে ঘিরে রয়েছে ধূসর পাহাড়…ফাটাফাটা ভিউ, তাই না?
খরচ: ফে (Phey) থেকে নিমো পর্যন্ত রাফটিং করতে মাথাপিছু খরচ হবে ১,০০০ টাকা। আরও বেশি দূরত্ব পর্যন্ত যদি রাফটিং করতে মন চায়, তা হলে সে ব্যবস্থাও রয়েছে। তাতে খরচ হবে ১,২০০ টাকা। এখানে অনেক এজেন্সি রয়েছে যারা রাফটিং-এর আয়োজন করে থাকে। যার কোনও একটায় পৌঁছে গেলেই চলবে।
রাফটিং-এর সেরা সময়: জুন থেকে অগস্ট পর্যন্ত এখানে রাফটিং করার সুযোগ মিলবে।
আরও পড়ুন: এই ৪ টে রোড ট্রিপ না করলে কিন্তু জীবনটাই বৃথা!
২. হৃষীকেশের গঙ্গায়
হোয়াইট ওয়াটার রাফটিং-এর সেরা ডেস্টিনেশনগুলির মধ্যে অন্যতম হল হৃষীকেশ (rishikesh river rafting)। এখানে গঙ্গা নদীর তিনটে জায়গায় রাফটিং-এর ব্যবস্থা রয়েছে। প্রথমটা ব্রহ্মপুরী থেকে হৃষীকেশ (দূরত্ব ৯ কিমি)। দ্বিতীয়টা শিবপুরী থেকে হৃষীকেশ (দূরত্ব ১৬ কিমি)। আর একটা হল, মেরিন ড্রাইভ থেকে হৃষীকেশ (দূরত্ব ২৪ কিমি)। এর চেয়েও বেশি দূরত্বে যদি যেতে চান, তা হলে ৩৬ কিমি ব্যাপী রাফটিং-এর ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে এতটা পথ রাফটিং করা সহজ কাজ নয়। তাই ব্রহ্মপুরী থেকে হৃষীকেশ পর্যন্ত করাই ভাল।
খরচ: ৬০০ থেকে ২,৫০০ টাকা।
রাফটিং-এর সেরা সময়: সেপ্টেম্বর থেকে জুন।
৩. তিস্তায় রাফটিং, সিকিমে
এবার সিকিম বেড়াতে গেলে তিস্তা নদীতে river rafting মাস্ট! সিন্ধু বা গঙ্গার মতো তিস্তা অতটা খরস্রোতা নয় ঠিকই, কিন্তু এই নদী পথে রয়েছে হঠাৎ-হঠাৎ বাঁক, যা রাফটিং-এর অভিজ্ঞতাকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়। গ্যাংটক শহরে অনেক এজেন্সি রয়েছে যারা রাফটিং-এর আয়োজন করে থাকে। ভালখোলা এবং মেলি (Melli) নামে এক জায়গা থেকে থেকে শুরু হয় রাফটিং। সময় লাগে ৩০ মিনিট।
খরচ: পাঁচ জনের বোট নিলে বোট পিছু খরচ ৩,৫০০ টাকা।
রাফটিং-এর সেরা সময়: অক্টোবর থেকে এপ্রিল।
আরও পড়ুন: সোলো ট্রিপে যেতে চান? এই জায়গাগুলোতে কিন্তু মহিলারা সুরক্ষিত
৪. বারাপোল, কুর্গ
দক্ষিণ ভারতের অন্যতম সেরা টুরিস্ট ডেস্টিনেশন হল কুর্গ। এখানেই রয়েছে বারাপোল নদী, যেখানে প্রায় সারা বছরই রাফটিং-এর আয়োজন করা হয়ে থাকে (river rafting in Coorg)। এখানে দু’ধরনের রাফটিং-এর ব্যবস্থা রয়েছে। নদীরে উপরের দিকে যেখানে স্রোত বেশি, সেখানে যেমন হাই স্পিড রাফটিং করতে পারেন, তেমনই নদীর নীচের দিকে, যেখানে বেগ কিছুটা কম, সেখানেও লো ওয়াটার রাফটিং-এর ব্যবস্থা রয়েছে। নিজের সাহস অনুযায়ী কোনও একটা বেছে নিলেই চলবে। বারাপোলের টাটা টি এস্টেটের কাছ “কে কে আর” জাংশন থেকে শুরু হয় রাফটিং। শেষ হয় ৮ কিমি দূরে গিয়ে।
খরচ: মাথা পিছু ১,২০০ টাকা।
রাফটিং-এর সেরা সময়: মে থেকে সেপ্টেম্বর।
আরও পড়ুন: ট্রাভেল লিস্টে থাকা মাস্ট এই ৩ টি সমুদ্র সৈকত!
৫. টন নদী, উত্তরাখণ্ড
সিন্ধুর পরে এদেশের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং রিভার রাফটিং ডেস্টিনেশন হল এই টন নদী। এখানে রাফটিং করতে মনের জোর থাকা চাই। প্রায় ১০ কিমি ব্যাপী এই রুটে রয়েছে বহু বাঁক, নদীর স্রোতও লাগামছাড়া। তাই যাঁদের চরম অ্যাভেঞ্চারের নেশা, তাঁদের একবার এখানে আসা চাই-ই চাই। তা ছাড়া এখনকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও নজরকাড়া। তাই শহুরে জীবন থেকে কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে এখানে এসে গেলেই দেখবেন স্ট্রেস-অ্যাংজাইটি সব দূরে পালাবে!
খরচ: দেরাদুন শহরে বহু ট্রাভেল এজেন্সি আছে যারা টোন নদীতে রাফটিং-এর ব্যবস্থা করে থাকে। তবে বেশিরভাগই কিন্তু প্যাকেজ টুর। এই প্যাকেজে রাফটিং ছাড়াও রয়েছে কায়াকিং এবং ট্রেকিংও। দু’দিন, দু’রাতের জন্য খরচ পরবে মাথা পিছু কম-বশি ১০,০০০ টাকার মতো। দিন বাড়ালে খরচও বাড়বে। সেক্ষেত্রে খরচ হবে ১১,৫০০-২৯,০০০ টাকার মতো।
রাফটিং-এর সেরা সময়: এপ্রিল থেকে জুন।
৬. ডান্ডেলি নদী, কর্নাটক
বেঙ্গালুরু শহর থেকে প্রায় ৪৬০ কিমি দূরে অবস্থিত এই নদী। একদিকে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা, অন্যদিকে সবুজ বনানী ঘিরে রেখেছে এই নদীকে। কয়েক বছর হল এখানে শুরু হয়েছে রাফটিং (river rafting)। ১২ কিমি ব্যাপী এই নদীতে রয়েছে অনেক বাঁক। নদীর স্রোতও মন্দ নয়। তাই তো ইতিমধ্যেই রাফটিং ডেস্টিনেশনের লিস্টে অনেকটাই উপরে উঠে এসেছে এই জায়গার নাম।
খরচ: ১,৩০০ টাকার মতো।
রাফটিং-এর সেরা সময়: নভেম্বর থেকে জুন।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!