২০১৯ অনেকের কাছে মন খারাপেরও বছর। বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বকে (celebs) হারিয়েছি আমরা। বছর শেষে তাঁদের আরও একবার স্মরণ।
১) রমেন রায়চৌধুরী
২০১৯-এর মার্চে জীবনাবসান হয় অভিনেতা রমেন রায়চৌধুরীর। বেশ কিছুদিন ক্যানসারে ভুগছিলেন অভিনেতা। পাশাপাশি ছিল কিডনির সমস্যা। শেষের কয়েকদিন হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাঁকে। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।নাট্যব্যক্তিত্ব রমেন জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন বাংলা ধারাবাহিকের মাধ্যমে। বহু ধারাবাহিকে পর পর কাজ করেছেন তিনি। ‘সবুজ দ্বীপের রাজা’ ছবিতে তাঁর অভিনয় মনে রাখবেন দর্শক। তপন সিংহ, গৌতম ঘোষের মতো পরিচালকের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। ‘বাঞ্ছারামের বাগান’, ‘সর্বজয়া’, ‘ত্যাগ’, ‘জেহাদ’, ‘অভিষেক’-এর মতো বহু মেনস্ট্রিম বাংলা ছবিতে রমেন অভিনয় করেছিলেন।
২) চিন্ময় রায়
২০১৯-এর মার্চের মাঝামাঝি সল্টলেকে নিজের ফ্ল্যাটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বর্ষীয়ান অভিনেতা চিন্ময় (Chinmoy) রায়। বয়স হয়েছিল ৭৯।দীর্ঘ দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ ছিলেন চিন্ময়বাবু। বছরখানেক আগে নিজের ফ্ল্যাটের নীচ থেকে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সে সময়ই তাঁর মাথা, হাত ও পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে। তার পর থেকেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে বার্ধক্যজনিত কারণেও ভুগছিলেন চিন্ময়বাবু। রুপোলি পর্দায় কমেডিয়ান হিসেবে জনপ্রিয় হলেও অভিনয় জগতে চিন্ময়বাবুর শুরুটা হয়েছিল থিয়েটারের মঞ্চে। নান্দীকারের মতো গ্রুপ থিয়েটারের দলে। তবে এক সময় সে দলও ছেড়ে দেন তিনি। প্রথম ছবি ‘গল্প হলেও সত্যি’। ‘বসন্ত বিলাপ’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘ধন্যি মেয়ে’, ‘চারমূর্তি’, ‘মৌচাক’, ‘হাটে বাজারে’, ‘ঠগিণী’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘সূবর্ণ গোলক’- একের পর ছবিতে তিনি মাতিয়েছেন বাঙালি দর্শককে।
৩) অমর পাল
২০১৯-এর এপ্রিলে জীবনাবসান (passes away) হয় প্রবাদপ্রতিম সঙ্গীতশিল্পী অমর পালের। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার এক হাসপাতালে প্রয়াত হন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। সুরকার তথা গায়ক অমর পালের জন্ম ১৯২২-এর ১৯ মে, বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। মা দুর্গাসুন্দরী দেবীর কাছে লোকসংগীতে হাতেখড়ি হয় তাঁর। আট বছর উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের তালিম নেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খানের ছোট ভাই আয়েত আলি খানের কাছে। ১৯৫১-এ আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রের লোকসঙ্গীত শিল্পী হিসেবে গান পরিবেশন করেন। দেবকী বসু, সত্যজিত্ রায়ের পরিচালিত ছবিতে গান গেয়েছিলেন তিনি। সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি সহ দেশে, বিদেশে একাধিক সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন অমর।
৪) মৃণাল মুখোপাধ্যায়
২০১৯-এর মে মাসের শুরুতেই প্রয়াত হন অভিনেতা মৃণাল মুখোপাধ্যায়। শেষ কয়েকদিন বেশ অসুস্থ ছিলেন অভিনেতা। ভর্তি হতে হয়েছিল হাসপাতালে। ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন অভিনেতা। জন্ডিসের সমস্যাতেও ভুগছিলেন। বহু বাণিজ্যিক ছবি সমৃদ্ধ হয়েছিল মৃণালের অভিনয়ে। নেগেটিভ চরিত্রে দাগ কেটেছেন বহুবার। শুধু সিনেমা নয়, টেলিভিশনেও দাপটে কাজ করেছিলেন তিনি। আবার যাত্রার মঞ্চেও ছিলেন সমান সাবলীল। বাণিজ্যিক ছবির চেনা ছকের বাইরে ‘পোস্ত’, ‘টোয়েন্টিটু ইয়ার্ডস’-এর মতো ছবিতে নিজের অভিনয় দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছিলেন তিনি।
৫) রুমা গুহঠাকুরতা
২০১৯-এর জুন। প্রয়াত হলেন রুমা গুহঠাকুরতা। বালিগঞ্জের বাড়িতে বার্ধক্যজনিত কারণে ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। অভিনয় ও সঙ্গীতে অসম্ভব প্রতিভাময়ী রুমার জন্ম ১৯৩৪ সালে। সাত বছর বয়সে মায়ের সঙ্গে আলমোড়ায় গিয়েছিলেন তিনি। উদয়শঙ্করের কালচারাল সেন্টারে ভর্তি হন। পরে উদয়শঙ্করের সঙ্গেই বেরিয়ে পড়েন ভারত পরিক্রমায়। মুম্বইয়ে শো চলাকালীন নজরে পড়েন দেবিকা রানির। তার পরেই বম্বে টকিজ়ে দশ বছরের রুমা পাঁচশো টাকা বেতনে নিযুক্ত হন অভিনেত্রী হিসেবে। ১৯৪৪ সালে অমিয় চক্রবর্তীর ‘জোয়ার ভাটা’য় প্রথম অভিনয়। পুরোদস্তুর নায়িকা হতে আরও তিন বছর। নীতিন বসুর ‘রজনী’তে অশোককুমারের বিপরীতে। এর পরে ‘মশাল’, ‘অফসর’। তবে সাংসারিক কারণেই বেশি ছবি করেননি। বম্বে টকিজেই আলাপ কিশোরকুমারের সঙ্গে। ১৯৫২য় বিয়ে ও পরের বছর ছেলে অমিতের জন্ম। গানও গেয়েছিলেন নানা ছবিতে। মুম্বই ছাড়ার আগে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিক্ষার তালিম নেন আব্দুল রহমান খানের কাছে। তৈরি করেন ‘ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যার’। কিশোরের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর কলকাতায় ফিরে নতুন করে সংসার পাতেন অরূপ গুহঠাকুরতার সঙ্গে।
৬) স্বরূপ দত্ত
২০১৯-এর জুলাইয়ে প্রয়াত হন বাংলা ছবির বর্ষীয়ান অভিনেতা স্বরূপ দত্ত। মল্লিকবাজারের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। সত্তরের দশকের জনপ্রিয় অভিনেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন স্বরূপ। স্কুলজীবন থেকেই অভিনয়ের প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি। উৎপল দত্তের সঙ্গে আলাপই পরবর্তী কালে তাঁর অভিনয়কে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে সাহায্য করে।
৭) নিমু ভৌমিক
২০১৯-এর অগস্টে প্রয়াত হন অভিনেতা নিমু ভৌমিক। বার্ধক্যজনিত রোগভোগে গড়িয়ার কানুনগো পার্কের বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বর্ষীয়ান এই টলিউড অভিনেতা। বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। ১৯৩৫-এর ১৪ নভেম্বর অবিভক্ত বাংলার দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন নিমু ভৌমিক। কেরিয়ার হিসেবে বেছে নেন অভিনয়কে। টলিউডেও জায়গা করে নিয়েছিলেন নিজের অভিনয়ের গুণে। ভিলেন হোক বা কমেডিয়ান— সব চরিত্রে তিনি ছিলেন সমান দক্ষ ও সাবলীল। সব মিলিয়ে ৬০টিরও বেশি বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছেন নিমু ভৌমিক।
৮) নবনীতা দেব সেন
২০১৯-এর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই লড়াই ফুরলো নবনীতার (Nabaneeta)। দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। একটি যুগের অবসান হল। ১৯৩৮-এর ১৩ জানুয়ারি জন্ম। কবি নরেন্দ্র দেব এবং রাধারাণী দেবীর কন্যা স্নাতক হন ১৯৫৮-এ। বাবা ও মা দু’জনেই কবি (poet), নবনীতাও আজীবন কাব্যচর্চা করে গিয়েছেন। ১৯৫৯-এ বিয়ে করেন অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে। তাঁদের দুই কন্যা সন্তান অন্তরা দেব সেন এবং নন্দনা সেন। ১৯৭৬-এ বিবাহবিচ্ছেদ হয় নবনীতা-অমর্ত্যর। দত্তক কন্যা শ্রাবস্তীর সঙ্গে শেষ জীবনে কলকাতাতেই থাকতেন নবনীতা।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এই দশকটি আমরা শেষ করতে চলেছি #POPxoLucky2020-র মাধ্যমে। যেখানে আপনারা প্রতিদিন পাবেন নতুন-নতুন সারপ্রাইজ। আমাদের এক্কেবারে নতুন POPxo Zodiac Collection মিস করবেন না যেন! এতে আছে নতুন সব নোটবুক, ফোন কভার এবং কফি মাগ, যেগুলো দারুণ ঝকঝকে তো বটেই, আর একেবারে আপনার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। হুমম…আরও একটা এক্সাইটিং ব্যাপার হল, এখন আপনি পাবেন ২০% বাড়তি ছাড়ও। দেরি কীসের, এখনই POPxo.com/shopzodiac-এ যান আর আপনার আগামী বছরটা POPup করে ফেলুন!
Read More From বিনোদন
চশমা পরা হবু কনেরা কিভাবে সাজবেন জেনে নিন
SRIJA GUPTA