পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকলে যেমন রোগ-ব্যাধি লেজুড় হয়, ঠিক তেমনই ঘুমানোর আগে ‘স্লিপ হাইজিন’ না মানলে ঘুমের বারোটা বাজতে বাধ্য। আর ঠিক এমন ঘটনাই ঘটছে আমাদের দেশে। নানা সমীক্ষায় দেখা গেছে ভারতীয় নাগরিকদের সিংহভাগই Sleep hygiene নিয়ে কোনও খোঁজ-খবরই রাখেন না। বিশেষ করে কম বয়সীরা তো এই বিষয়ে একেবারেই সচেতন নন, যে কারণেই sleep-deprived দেশগুলির মধ্যে ভারতের স্থান দ্বিতীয়। গোদা বাংলায় বললে জাপানিদের পরে ভারতীয়রাই নাকি সবথেকে কম সময় নির্বিঘ্নে ঘুমান। তাই তো নানা জটিল রোগের প্রকোপ বাড়ছে এদেশে। Center for Disease Control-এর প্রকাশ করা এক রিপোর্ট অনুসারে দিনের পর দিন ঠিক মতো না ঘুমালে নাকি ডায়াবেটিস, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ এবং ডিপ্রেশনের প্রকোপ বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও থাকে। আর একবার ওবেসিটির খপ্পরে পড়লে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড প্রেসার এবং হাই কোলেস্টেরলের মতো রোগও ঘাড়ে চেপে বসতে পারে। তাই তো নিয়মিত আট ঘন্টার ঘুম জরুরি। আর ঠিক সেই কারণেই স্লিপ হাইজিন মেনে চলা একান্ত প্রয়োজন। কী এই স্পিল হাইজিন? ঘুমাতে যাওয়ার আগে কতগুলি কাজ না করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এই নিয়মগুলি মানলে নাকি ঘুমে ব্যাঘাত ঘাটার আশঙ্কা আর থাকে না। আর ঠিক মতো ঘুম (sleep) হলে শরীরও রোগমুক্ত থাকে। তাই চলুন আর সময় নষ্ট না করে স্লিপ হাইজিন নিয়ে একটু জেনে-বুঝে নেওয়া যাক।
নিয়মিত একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস করুন
একদিন রাত দুটোয় ঘুমাতে যাচ্ছেন, তা একদিন দশটায়। এই ভাবে চললে কিন্তু বিপদ! তাহলে কী করণীয়? ঘুমাতে যাওয়ার একটা নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন। আর প্রতিদিন ঠিক ওই সময়ে ঘুমাতে যান এবং ঘড়ি ধরে একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে উঠে পরুন। এমনকী, ছুটির দিনেও এই নিয়ম মেনে চলতে হবে। তাতে কী উপকার মিলবে? sleep schedule মেনে ঘুমানোর অভ্যাস করলে ঘুম আসতে যেমন সময় লাগে না, তেমনই ঘুমে ব্য়াঘাত ঘটার আশঙ্কাও আর থাকে না। তাছাড়া একটা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চললে শরীরের বায়োলজিকাল ক্লকও সেই মতো ধাতস্থ হয়ে যায়। ফলে প্রতিদিন ওই নির্দিষ্ট সময়ে আপনা থেকেই ঘুম এসে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অনিদ্রার সমস্যার খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা আর থাকে না।
ঘুমানোর আগে বই পড়ুন অথবা ঝট করে স্নান সেরে নিন
বললে হতো বিশ্বাস করবেন না। তবে এই নিয়ে বিশেষজ্ঞরা একমত যে ঘুমাতে যাওয়ার আধ ঘন্টা আগে স্নান সারলে বা মিনিটকুড়ি বই পড়লে নাকি তাড়াতাড়ি ঘুম এসে যায়। শুধু তাই নয়, এমন অভ্যাস রপ্ত করলে ঘন্টা আটেক নিশ্চিন্তে ঘুমও হয়। এই সময় শরীর নিজের ক্ষতের চিকিৎসায় লেগে পরে। তাই তো ঠিক মতো ঘুম হলে শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে।
আরও পড়ুন: ঘুম পেলেই কি যখন-তখন ঘুমিয়ে পড়বেন নাকি? উত্তরটা কিন্তু ‘হ্যাঁ’! খুশি হলেন তো?
মোবাইলে খুটখুট চলবে না
অনেকেই ঘুমতে যাওয়ার আগে সিনেমা দেখেন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোরাঘুরি করেন। এমন অভ্যাস কিন্তু ঘুমের পরিপন্থী। বিশেষজ্ঞদের মতে ঘুমতে যাওয়ার আগে মোবাইল স্ক্রিনের জোড়ালো আলোর কারণে শরীরের ভিতরে এমন কিছু বদল আসে, যে কারণে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। শুধু তাই নয়, অন্ধকালে মোবাইলের নীল আলো রেটিনারও মারাত্মক ক্ষতি করে দেয়। এই কারণেই তো অন্ধকারে টিভি দেখতে বা মোবাইল-ল্যাপটপ ঘাঁটতে বারণ করা হয়। আপনিও এবার থেকে এই নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলুন। দেখবেন, উপকার পাবেন।
ডিনারে হলকা কিছু খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ
একথা বাঙালিরা তো শুনবেই না! আমরা হলাম গিয়ে জাত খাদ্যরসিক। সারা দিন অফিসের পরে কব্জি ঢুবিয়ে ডিনার সারতেই অভ্যস্ত। তাই রাতে কম খাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে বিশেষজ্ঞদের কথা যদি শোনেন, তাহলে রাতে পেট ভরে খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। কেন, তাতে কী হবে? রাতে একটু বেশি খাওয়া হয়ে গেলে হজমের সমস্য়া দেখ দিতে পারে, যে কারণে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা থাকে। এক্ষেত্রে আরও একটা নিয়মও মেনে চলতে হবে। কী নিয়ম? ডিনারে হলকা কিছু খাবার খাওয়ার পরে কয়েক গ্লাস জল খেতে ভুলবেন না যেন! কারণ, রাতে তেষ্টা পেলে যে ঘুম ভেঙে যাবে!
ঘুম না পেলে শুয়ে থাকবেন না
শোয়ার মিনিটকুড়ি বাদেও যদি ঘুম না আছে, তাহলে আকরণ শুয়ে থাকবেন না। তাতে করে ঘুম তো আসবেই না। উল্টে আরও অস্বস্তি বাড়বে। তাহলে কী করণীয়? বিছানা থেকে উঠে ঘরের মধ্যেই একটু হাঁটাহাঁটি করতে পারেন, নয়তো বই পড়লেও মন্দ হয় না। তবে এসব করতে যদি ইচ্ছা না করে তাহলে গানও শুনতে পারেন, তাতে অনেক সময় ঘুম এসে যায়। এক্ষেত্রে আরও একটা বিষয়ও মাথায় রাখতে হবে। বেডরুম হিসেবে যে ঘরটা বেছে নিয়েছেন, সেটা যেন রাস্তার ধারে না হয়। কারণ, শোরগোলে ঘুমে ব্য়াঘাত ঘটবে!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আমাদের এক্কেবারে নতুন POPxo Zodiac Collection মিস করবেন না যেন! এতে আছে নতুন সব নোটবুক, ফোন কভার এবং কফি মাগ, যেগুলো দারুণ ঝকঝকে তো বটেই, আর একেবারে আপনার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। হুমম…আরও একটা এক্সাইটিং ব্যাপার হল, এখন আপনি পাবেন ২০% বাড়তি ছাড়ও। দেরি কীসের, এখনই POPxo.com/shopzodiac-এ যান আর আপনার এই বছরটা POPup করে ফেলুন!