সেলফি, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের দখলে যখন আমাদের জীবন, তখন প্রতিনিয়ত নিজেকে সুন্দর ভাবে পরিবেশন করার দৌড়ে সবাই যে এগিয়ে থাকতে চাইবে, তাতে আর সন্দেহ কী! কিন্তু সমস্যাটা হল নিজেকে রূপসী করে তুলতে যেসব মেকআপের (makeup) উপকরণ ব্যবহার করা হয়, তা একদিকে যেমন স্কিনের মারাত্মক ক্ষতি করে দেয় (harmful effects of cosmetics), তেমনি আরও হরেক রকমের শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও যায় বেড়ে (side effects of cosmetics)। যেমন ধরো…
১. মাথা যন্ত্রণা হতে পারে:
নানাবিধ কসমেটিক্সে উপস্থিত ডায়াজোলিডিনায়েল ইউরিয়া (Diazolidinyl urea) এবং ডিএমডিএম হাইডেনশন (DMDM Hydantoin) নামক কেমিকেল ত্বকের ভিতরে বারে বারে প্রবেশ করতে করতে একদিকে যেমন বারে বারে মাথা যন্ত্রণা হওয়ার মতো সমস্যার পথকে প্রশস্ত করে, তেমনি চোখের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে (harmful effects of chemicals in cosmetics)। সেই সঙ্গে চোখের সংক্রমণের মতো রোগও হতে পারে (effects of cosmetics on health)। তাই কথায় কথায় মেকআপ করার প্রবণতা না ছাড়লে কিন্তু বিপদ!
২. চুলের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়:
চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে অনেকেই নিয়মিত হেয়ার জেল, হেয়ার সিরাম, কন্ডিশনার এবং নানা রকমের শ্যাম্পু ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু জানা আছে কি এই সব প্রসাধনীতে অনেক ক্ষেত্রেই এমন কিছু কেমিকাল উপস্থিত থাকে, যা অল্প কিছু সময়ের জন্য চুলের সৌন্দর্য বাড়ালেও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের কারণে চুলের এত মাত্রায় ক্ষতি হয়ে যায় যে হেয়ার ফলের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে লেজুড় হয় খুশকি এবং চুলকানিও। তাই এবার সিদ্ধান্ত তোমার, চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে গিয়ে চুলেরই ক্ষতি করতে চাও, নাকি…!
৩. বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে:
একেবারে ঠিক শুনেছো! বাস্তবিকই ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যার সঙ্গে মেকআপের এক গভীর যোগ রয়েছে। আসলে যখন মেকআপ করা হয়, তখন তাতে উপস্থিত প্রতিটি কেমিকেল শরীরের ভিতরে প্রবেশ করার সুযোগ পয়ে যায়। আর এক স্টাডিতে দেখা গেছে বেশ কিছু কসমেটিক্সে উপস্থিত বিউটিল প্যারাবেন (butyl paraben) নামক উপাদান, শরীরে প্রবেশ করা মাত্র দেহের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন করতে শুরু করে দেয় যে তার প্রভাবে বন্ধাত্যের মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যায় বেড়ে। তাই এই বিষয়টি মাথায় রাখা একান্ত প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, যে কোনও প্রসাধনী কেনার আগে দেখে নেওয়া উচিত তাতে এমন কোনও উপাদান নেই তো, যা শরীরের ক্ষতি করতে পারে।
৪. এলার্জির প্রকোপ বাড়তে পারে:
কসমেটিক্সে যাতে ব্য়াকটেরিয়াল গ্রোথ হতে না হয়, তা সুনিশ্চিত করতে অনেক ক্ষেত্রেই ইথাইল-প্যারাবেন (ethyl-paraben), বিউটিল-প্যারাবেন (butyl-paraben) এবং আইসোপ্রপিল-প্যারাবেন (isopropyl-paraben) নামক বেশ কিছু কেমিকাল ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যা থেকে যে কোনও সময়ে মারাত্মক অ্যালার্জি হতে পারে। সেই সঙ্গে লেজুড় হতে পারে স্কিন ইরিটেশন এবং ফোসকা পড়ার মতো সমস্যাও। তবে এখানেই শেষ নয়, বহু প্রসাধনীতেই সেলিকাইলেট (Salicylate) নামক একটি উপাদানও থাকে, যা থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে। তাই বেশি মাত্রায় মেকআপ করার ভুল কাজটি করো না যেন!
৫. অসময়েই ত্বক বড়িয়ে যাবে:
একথা একদম ঠিক যে যত বেশি মেকআপ করবে, তত তাড়াতাড়ি ত্বক বুড়িয়ে যাবে। কারণ দীর্ঘ সময় ধরে কেমিকেল ভর্তি কসমেটিক্স ব্যবহার করার কারণে স্বাভাবিক ভাবেই ত্বকের এত মাত্রায় ক্ষতি হয় যে বলিরেখা প্রকাশ পেতে শুরু করে, সেই সঙ্গে ত্বকের ইলাস্টিসিটি কমে যাওয়ার কারণে অসময়েই ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা যায় বেড়ে। তাই তো বলি, যদি প্রকৃত অর্থে সুন্দরী হয়ে উঠতে চাও, তাহলে চুল এবং ত্বকের পরচর্যায় কসমেটিক্সের পরিবর্তে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা শুরু করো, দেখবে উপকার মিলবে একেবারে হাতে-নাতে!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!