ইদানিং সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা চ্যালেঞ্জ শুরু হয়েছে। একজন হয়ত কোনও একটি ট্রেন্ড চালু করলেন, তার পরেই দেখাদেখি বাকিরাও তা ফলো করতে শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে তা বেশ হ্যাশ-ট্যাগ দিয়ে একটি ‘চ্যালেঞ্জে’ রূপান্তরিত হয়। অমুক চ্যালেঞ্জ তমুক চ্যালেঞ্জ! সেরকমই একটি ‘চ্যালেঞ্জ’ দেখা যাচ্ছে ইদানিং, ‘শাড়িতে নারী’! আপনিও যদি ওই চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহন করতে চান, অবশ্যই করুন! কিন্তু তার আগে আমাদেরই বাংলার কয়েকটি প্রায় হারিয়ে যাওয়া শাড়ি (know about these 5 traditional Bengali sarees) সম্পর্কে একটু জেনে নিন, যাতে কেউ কোনও প্রশ্ন করলে পটাপট উত্তর দিয়ে দিতে পারেন!
১। বেগমপুরি শাড়ি
হুগলি জেলার ছোট্ট একটি শহর বেগমপুরে তৈরি হয় এই শাড়ি। বেগমপুরী শাড়ি কিন্তু অন্যান্য অনেক শাড়ির চেয়ে অনেকটাই স্বতন্ত্র। পাড়ের আকার ও পাড়ি-জমির কনট্রাস্ট রংয়ের খেলা এই শাড়িকে আলাদা করে চিনিয়ে দেবে ভিড়ের মধ্যেও। বেগমপুরী শাড়ির (know about these 5 traditional Bengali sarees) আরও একটু বৈশিষ্ট্য হল এর চুড়ি ডিজাইন, মানে, সারা শাড়িতে ডুরে থাকবে এবং এই ডুরেগুলির ডিজাইন ভিন্ন-ভিন্ন হবে। এখন অবশ্য নানা ধরনের মোটিফও ডিজাইন করা হচ্ছে বেগমপুরী শাড়িতে। সুতির তো বটেই, এখন লিনেন সুতোতেও তৈরি হচ্ছে বেগমপুরী মহাপাড় শাড়ি।
২। গরদ শাড়ি
দুধসাদা সিল্ক, চওড়া লাল পাড়, অল্প জরির ছোঁওয়া তাতে, আঁচলে জরি ও লালের কয়েকটা স্ট্রাইপ আর এক রাশ স্নিগ্ধতা, এভাবেই বর্ণনা করতে পারেন গরদকে! আদতে মুর্শিদাবাদে তৈরি হত এই শাড়ি (know about these 5 traditional Bengali sarees) এবং বোনা হত এতটাই সূক্ষ্মভাবে, যাতে শাড়িটি দেখে টিসু পেপারের কথা মনে পড়ে যেত! এই শাড়িই বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন ডিজাইন, যাকে কেন্দ্র করেই বাঙালির লাল পাড়-সাদা শাড়ির চল! আগেকার দিনে মা-ঠাকুরমারা এই শাড়ি তুলে রেখে দিতেন পুজোতে পরার জন্য। কোনও-কোনও পরিবারে তো গরদ উত্তরাধিকার সূত্রে পায় বাড়ির মেয়েরা! সেই শাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে থাকে মায়ের স্নেহচ্ছায়া আর পুজোর সুবাস!
৩। কড়িয়াল শাড়ি
ইনি গরদেরই জাত-ভাই। একই সিল্কে বোনা, জমিও একইরকম দুধসাদা বা অল্প অফ হোয়াইট, কিন্তু কড়িয়াল শাড়ির পাড় হতে পারে নানা রংয়ের। পাড়ে ও জমিতে ফুলের বা কলকার নকশা থাকবে এবং শাড়ির (know about these 5 traditional Bengali sarees) জমিতেও থাকতে পারে ছোট বুটি। যাঁরা গরদের সাদামাটা ধরন অতটা পছন্দ করেন না, তাঁদের জন্য আদর্শ গরদধর্মী এই কড়িয়াল শাড়ি।
৪। মসলিন শাড়ি
এই বিশ্ববিখ্যাত শাড়িটি সুতির সুতোয় বোনা হত, কিন্তু চমক-ঠমক এতটাই যে, দেখে বোঝার উপায় নেই তা সাদামাটা সুতির সুতোয় বোনা! ঢাকার ব্রহ্মপুত্র নদের আশপাশের অঞ্চলের তুলো দিয়েই একমাত্র তৈরি হয় মসলিনের সূক্ষ্ম সুতো এবং মুষ্টিমেয় কিছু কারিগরই তৈরি করতে পারেন এই মহার্ঘ্য শাড়ি। মসলিনেরও নানা প্রকারভেদ আছে। মলমল খাস, যেটি এতটাই সূক্ষ্ম যে একটি আংটির মধ্যে দিয়ে চলে যায় পুরো শাড়িটি (know about these 5 traditional Bengali sarees), আব্রাওয়ান মসলিন, শবনম, সিরকার আলি ও টুনজেব। মসলিনে নকশা জামদানি স্টাইলেই বোনা হয়।
৫। বাটিক প্রিন্টের শাড়ি
এটি শান্তিনিকেতনেরই অবদান। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পর কবিগুরু দেশের নানা প্রান্তের প্রায় লুপ্ত হতে বসা শিল্পকে পরম সমাদরে এখানে আবার প্রোথিত করেন! বাটিক তেমনই একটি শিল্প। বাটিক হল আসলে শাড়ি রং করার একটি প্রক্রিয়া মাত্র, যাতে রংয়ের পাশাপাশি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল মোম! কাপড়ে (তা সে যে-কোনও প্রাকৃতিক তন্তুর তৈরি হতে পারে) প্রথমে মোম মাখিয়ে, সেই মোম মাখানো কাপড় রংয়ে চুবিয়ে, মোম ক্র্যাক করে কাপড়ে রং ঢুকে গিয়ে তৈরি হয় এই অপূর্ব ডিজাইন! পরে শাড়ি থেকে মোম তোলা ও তা শুকানো এই কাজের শেষ পর্যায়। বাটিক প্রিন্টের শাড়ি (know about these 5 traditional Bengali sarees) সুতিরও হতে পারে, আবার সিল্কেরও হতে পারে। আজকাল লিনেন, তসর ইত্যাদি মেটেরিয়ালের উপরেও বাটিকের কাজ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
মূল ছবি সৌজন্য – ইনস্টাগ্রাম ও টিফটি
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!