রাতে ঠিক করে ঘুম আসে? আসবে না, সে তো জানা কথা! এত দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে ঘুরে বেরালে নিশ্চিন্তির ঘুম আসবে কীভাবে বলুন? প্রতিদিন অফিসে যেখানে সমস্যার ভয় থাকে, সেখানে স্ট্রেস যে সহজে পিছু ছাড়বে না সে তো জানা কথা। তাই তো বলি, চিন্তায়-চিন্তায় চুল না ছিড়ে একটু প্রকৃতির উপর ভরসা রাখুন। দেখবেন, নিমেষে স্ট্রেস-অ্যাংজাইটি দূরে পালাবে। প্রকৃতি মানে, কার উপর ভরসা রাখতে হবে? নয়নতারা (Nayantara Flower) ফুলের নাম শুনেছেন? না চিনলে গুগল করুন। চিনে ফেলুন ঝটপট। কারণ, আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, এই ফুলের পাপড়ি দিয়ে তৈরি চা পান করলে দুশ্চিন্তা দূর হয়। কমে অ্যাংজাইটিও। এমনকী, মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির ক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে, বাঘা-বাঘা সব রোগ-ব্যাধি দূরে থাকতে বাধ্য হয়। ক্যান্সারের মতো মারণ রোগও ধারেকাছে ঘেঁষতে পারে না। তাই সুস্থভাবে যদি বাঁচতে হয়, তা হলে বাড়িতে একটা নয়নতারা গাছ না লাগালেই নয়। জানতে চান, এই ফুলটি (Nayantara Flower Benefits In Bengali) আরও কী-কী ভাবে শরীরের উপকারে লাগে? জেনে নিন আমাদের কাছ থেকে।
আরও পড়ুনঃ এই গাছগুলি বাড়িতে লাগালে সৌভাগ্য নিশ্চিত
এই ফুলটি দেশি নাকি বিদেশি? (What Is Nayantara Flower?)
ইতিহাস বলছে, এই ফুলটির জন্ম ফ্রান্সে। ১৮ শতকে প্রথম ফুলটির দেখা মেলে। নানা ওষুধ তৈরির কারণেই সে সময় ফরাসিরা এর চাষ শুরু করেছিল। পরবর্তী সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং দক্ষিণ আমেরিকার নানা দেশে এই ফুলটির দেখা মিলতে শুরু করে। সেখানেও মূলত চিকিৎসার কাজেই লাগানো হত নয়নতারা ফুল কে। এভাবে নানা দেশ ঘুরতে-ঘুরতে ফুলটি (Nayantara Flower) একদিন এদেশে এসে পৌঁছয়। আসামাত্রই এর গুণ সম্পর্কে জানতে পারি আমরা। সেই থেকেই আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এর উল্লেখ পাওয়া যায়। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আধুনিক চিকিৎসার রমরমা বাড়ার পর থেকে নয়নতারা ফুলের কথা আর কেউ মনে রাখেনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বেশ কিছু ইতিহাসবিদদের মতে, ১৮ শতকের অনেক আগে থেকেই চিকিৎসার কাজে নয়নতারা ফুল কে ব্যবহার (Nayantara Flower Uses) করা হত। মূলত মাদাগাস্কার এবং আফ্রিকার নানা দেশেই নাকি প্রথম এই ফুলটির দেখা মেলে। তাই তো নয়নতারা ফুলকে আজও অনেকেই Madagascar Periwinkle নামে ডেকে থাকে। তবে এই বক্তব্যের সপক্ষে সেভাবে কোনও নথির সন্ধান মেলেনি। তাই এর জন্ম কোথায়, সেই নিয়ে বিতর্ক চলছেই!
গাছটি দেখতে কেমন? (What Does A Nayantara Plant Look Like?)
এটি গুল্ম জাতীয় গাছ। উচ্চতায় কম-বেশি ১-২ ফুট। যে-কোনও পরিবেশেই এই গাছটি বেড়ে ওঠে। এমনকী, সারা বছর ধরেই ফুল হয়। নয়নতারা ফুলের (Periwinkle Flower) মূলত তিনটি রং। সাদা, বেগুনি এবং গোলাপি। তবে রং যাই হোক না কেন, প্রতিটি ফুলেরই গুণ কিন্তু এক। আর সবচেয়ে মজার বিষয় হল বুনো, জংলি এই গাছটি (Periwinkle Plant) অনাদরে, অবহেলাতে থাকলেও সহজে মরে না। বুঝতেই পারছেন, গাছটির পিছনে আপনাকে একটুও ঘাম ঝরাতে হবে না। কিন্ত উপকার পাবেন ষোলো আনা!
নয়নতারা ফুলের নানা উপকারিতা (Nayantara Flower Benefits)
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ফলটিতে মজুত রয়েছে প্রায় ৭০টির মতো Alkaloids, যা একাধিক রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা (Nayantara Flower Uses) পালন করে থাকে। এ ছাড়াও এতে রয়েছে অ্যান্টি-ক্যান্সার এবং অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ উপাদান। এই উপাদানগুলি শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। সঙ্গে আরও নানাভাবে শরীরের দেখভাল করে। যেমন ধরুন…
১| ডায়াবেটিসের মতো রোগকে দূরে রাখে (Helps To Control Diabetes)
গত কয়েক বছরে আমাদের দেশে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্তের সংখ্যাটা লাফিয়ে-লাফিয়ে বেড়েছে। এমনকী, বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে আমাদের দেশ বিশ্বের ডায়াবেটিস ক্যাপিটালে পরিণত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে ভারতের কুড়ি থেকে সত্তর বছর বয়সি নাগরিকদের মধ্যে প্রায় ৮.৭ শতাংশ এই মারণ রোগের শিকার। শুধু তাই নয়, এই সংখ্যাটা যে ক্রমশ বাড়ছে সে কথা মেনে নিয়েছেন চিকিৎসকেরাও। অন্যদিকে Diabetes.co.uk-এর রিপোর্ট অনুসারে আমাদের দেশে কম-বেশি প্রায় ৩০ মিলিয়ান মানুষ এই রোগের শিকার। এমন পরিস্থিতিতে আট থেকে আশি, সবারই যে নয়নতারা ফুলের পাপড়ি থেকে তৈরি চা খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কারণ, এই ফুলে (Nayantara Flower Benefits) এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা ইনসুলির ক্ষরণ যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকে নজর রাখে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না।
২| নিমেষে রক্তক্ষরণ কমায় (Controls Bleeding and Acts As A First Aid)
কোথাও কেটে গেলে সেখানে নয়নতারা ফুলের রস বা ফুলটা (Nayantara Flower Benefits) থেঁতো করে যদি মলমের মতো লাগানো যায়, তা হলে রক্তক্ষরণ কমতে সময় লাগে না। যাঁরা পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা যদি নিয়মিত মলদ্বারে এই ফুল থেঁতো করে লাগাতে পারেন, তা হলে উপকার মিলবে হাতে-নাতে। এক্ষেত্রে যন্ত্রণা তো কমবেই। সঙ্গে রোগের প্রকোপ কমতেও সময় লাগবে না। আর একভাবেও ক্ষতের চিকিৎসায় নয়নতারা গাছকে (Nayantara Plant) কাজে লাগানো যেতে পারে। কীভাবে? চার-পাঁচটা নয়নতারা গাছের পাতার (Nayantara Leaf Benefits) সঙ্গে ২ চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এবার সেই পেস্টটা দিনে বারতিনেক ক্ষতের উপরে লাগালেই হবে!
আরও পড়ুন: ত্বক ও চুলের সমস্যা থেকে শুরু করে অসুস্থতা – সব সমস্যার একটাই দাওয়াই জবা ফুল
৩| ব্রেনের ক্ষমতা বাড়ে (Boosts Your Brain)
নিয়মিত নয়নতারা ফুলের পাপড়ি থেকে তৈরি চা (Nayantara Flower Benefits) পানের পাশাপাশি যদি এই গাছের পাতা খাওয়া য়ায়, তা হলে দেহে Vincamine নামে একটি উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যে কারণে ব্রেনে রক্তের প্রবাহ এতটাই বেড়ে যায় যে, Cognitive Function-এর উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। আর মস্তিষ্কের ক্ষমতা যখন বাড়ে, তখন তাল মিলিয়ে বৃদ্ধি পায় স্মৃতিশক্তিও। এমনকী, মনোযোগ ক্ষমতারও উন্নতি ঘটে।
৪| ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ দূরে থাকে (Prevents Cancer Naturally)
গত ২৬ বছরে আমাদের দেশে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ICMR-এর রিপোর্টের দিকে নজর ফেরালেই ছবিটা আরও স্পষ্ট হয়ে যায়। এমনকী, বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংস্থার তথ্যও একই কথা বলছে। এই সংস্থার এক রিপোর্ট অনুসারে ২০১৮ সালে সারা বিশ্বে প্রায় ৯.৬ মিলিয়ন মানুষ এই রোগের কারণে মারা গিয়েছিলেন, যার মধ্যে প্রায় ৮.১৭ শতাংশেরই বাস আমাদের দেশে। শুধু তাই নয়, ওই একই বছরে আমাদের দেশে প্রায় ১.১৬ মিলিয়ন মানুষ নতুন করে এই মারণ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই হলেন মহিলা। বুঝতেই পারছেন, হাতে সময় থাকতে থাকতে যদি সাবধান না হন, তা হলে বিপদ! ভাবছেন, সাবধান হবেন কীভাবে? প্রতিদিন এই ফুলর পাপড়ি ভিজিয়ে তৈরি চা পান শুরু করেন। দেখবেন, ফল মিলবে হাতে-নাতে। কারণ, নয়নতারা ফুলে (Nayantara Flower) রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ক্যান্সার উপাদান, যা ক্যান্সার কোষেদের মেরে ফলে। ফলে এমন রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা আর থাকে না। এতে উপস্থিত Leurosidine এবং Leurosine নামক উপাদান Hodgkin’s disease-এর মতো রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৫| স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটির প্রকোপ কমে (Reduces Stress and Anxiety)
এই ফুলে (Nayantara Flower) এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা রক্তে মেশামাত্র শরীরের ভিতরে কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে, যে কারণে স্ট্রেস লেভেল কমতে সময় লাগে না। এমনকী, অ্যাংজাইটির প্রকোপও কমে। দূরে পালায় মানসিক অবসাদের মতো সমস্যাও। এ প্রসঙ্গে জেনে রাখা ভাল যে, একটি বেসরকারি সংস্থার করা সমীক্ষা অনুসারে ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮৯ শতাংশ নাকি স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটির মতো সমস্যার শিকার। আর একথা ভুলে গেলেও চলবে না যে, স্ট্রেসের কারণে কিন্তু নানা ধরনের রোগ ঘাড়ে চেপে বসতে পারে। তাই সাবধান হওয়াটা জরুরি।
৬| দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায় (Improves Your Vision)
নয়নতারা ফুলে (Nayantara Flower) উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান চোখের প্রদাহ কমায়। ফলে অসময়ে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার মতো সমস্যার খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনই নানা ধরনের চোখের রোগও (Nayantara Plant) দূরে থাকতে বাধ্য হয়।
৭| সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায় (Increases Blood Flow and Circulation)
দেহের প্রতিটা কোণায় যখন অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে যায়, তখন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে ছোট-বড় কোনও রোগের পক্ষেই ধারেকাছে ঘেঁষা সম্ভব হয় না। এমনকী, কথায়-কথায় ক্লান্ত হয়ে পড়ার মতো সমস্যাও দূরে পালায়।
৮| অ্যালঝাইমার্স এবং ডিমেনশিয়ার মতো রোগকে দূরে রাখে (Prevents Alzheimer’s and Dementia)
নয়নতারা গাছের পাতায় Vinpocetine নামে একটি কেমিক্যালের সন্ধান মেলে, যা রক্তে মেশামাত্র ব্রেন সেলের ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। সেই সঙ্গে ব্রেন সেল যাতে বয়সের সঙ্গে-সঙ্গে শুকিয়ে না যায়, সেদিকেও নজর রাখে। ফলে ব্রেনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। ফলে অসময়ে স্মৃতিলোপ পাওয়ার মতো ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনই অ্যালঝাইমার্স বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগও দূরে থাকতে বাধ্য হয়। তাই তো যাঁদের পরিবারে এমন রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাঁরা যদি নিয়মিত নয়নতারা গাছের (Periwinkle Plant) পাতা খেতে পারেন, তা হলে ফল পাবেন একেবারে হাতে-নাতে!
৯| হার্টের ক্ষমতা বাড়ে (Improves Heart Health)
এই ফুলে (Nayantara Flower) উপস্থিত Reserpine নামক একটি উপাদানে হার্টের যাতে কোনও ধরনের ক্ষতি না হয়, সেদিকে নজর রাখে। এমনকী হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক অথবা স্ট্রোকের মতো রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কাও আর থাকে না।
১০| ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকে (Controls Blood Pressure)
নয়নতারা গাছের (Nayantara Plant) পাঁচ-দশটা পাতা নিয়ে ভাল করে বেটে নিন। তাতে যে রস পাবেন, তা নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে অথবা রাতে শুতে যাওয়ার আগে যদি খেতে পারেন, তা হলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকবে না। হার্টের ক্ষমতাও বাড়বে।
আরও বেশ কিছু রোগের চিকিৎসায় নয়নতারা ফুল কাজে লাগানো যেতে পারে (Some Health Benefits Of Nayantara Flower)
এই গাছের পাতা এবং ফুলে (Flower) এত রকমের উপকারী উপাদান রয়েছে যে, সেগুলি একাধিক রোগের প্রকোপ কমাতে (Periwinkle Uses) কাজে আসে। যেমন ধরুন…
১| হাঁপানি এবং ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসায় যেমন নয়নতারা ফুলকে কাজে লাগানো যেতে পারে, তেমনই কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ম্যালেরিয়ার মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও এই প্রাকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে।
২| নয়নতারা গাছের উপকারিতাও প্রচুর। এর মূল এবং ফুলে রয়েছে Ajmalicine নামক একটি উপাদান, যা ব্রেনে ঠিক মতো রক্ত পৌঁছাচ্ছে কিনা, সেদিকে নজর রাখে।
৩| নয়নতারা পাতার উপকারিতা (Nayantara Leaf Benefits) এতটাই বেশি, যে নিয়মিত নয়নতারা গাছের পাতা খেলে শরীরে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে নিমেষে কমে জয়েন্টের ব্যথা।
৪| নয়নতারা ফুলের পাপড়ি থেকে তৈরি চা খেলে অনিদ্রার সমস্যা দূরে পালাতে সময় লাগে না।
নয়নতারা ফুল থেকে চা তৈরির প্রণালী (How To Prepare Tea From Nayantara Flower)
নয়নতারা ফুলের উপকারিতা অনেক। এক মুঠো নয়নতারা ফুলের (Nayantara Flower) পাপড়ি নিয়ে শুকিয়ে নিন। এবার তা থেকে চামচ তিনেক নিয়ে এক কাপ গরম জলে মিশিয়ে জলটা মিনিটদুয়েক ফুটিয়ে নিন। এবার পানীয়টা মিনিটদশেক রেখে দেওয়ার পর ছেঁকে নিয়ে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। প্রতিদিন ব্রেকফাস্টের আগে খালি পেটে যদি এই পানীয় খেতে পারেন, তা হলে দ্রুত উপকার পাবেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পাপড়ির সঙ্গে নয়নতারা গাছের (Nayantara Flower Benefits) শুকিয়ে যাওয়া পাতা মিশিয়ে তা থেকে যদি চা তৈরি করা যায়, তা হলে আরও বেশি উপকার মেলে। এক্ষেত্রে এক কাপ জলে দু’চামচ করে শুকিয়ে যাওয়া পাতা এবং পাপড়ি মিশিয়ে চা তৈরি করতে হবে।
নয়নতার ফুলের কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া (Side Effects of Nayantara Flower)
এই চা বেশি পরিমাণে বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। যেমন ধরুন…
১| পেট খারাপ বা নানা Gastrointestinal Problem-এ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় বেড়ে।
২| যাঁদের লিভার, কিডনি বা ফুসফুসের রোগ রয়েছে, তাঁদের এই চা খাওয়া উচিত নয়। এমনকী যাঁরা লো ব্লাড প্রেশারের রোগী, তাঁদেরও এই পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে।
৩| সবে যারা মা হয়েছেন, তাঁদেরও এই চা খেতে বারণ করেন বিশেষজ্ঞরা।
৪| সামনে কি কোনও অপারেশন আছে? তা হলে এই চা পান করা চলবে না। এমনকী অপারেশনের পরের কয়েক মাসও এই পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে।
৫| এই চা দিনে চার কাপের বেশি খাওয়া চলবে না। এর বেশি হলেই লো ব্লাড প্রেশার, মাথা যন্ত্রণা, খিদে কমে যাওয়া, মাথা ঘোরা এবং Irregular Heartbeat-এর মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
নয়নতারা ফুলের উপকারিতা নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্নের উত্তর (FAQs)
১| এই চা খেলে নাকি দাঁতের ব্যথা কমে?
একেবারেই! নিয়মিত এই পানীয় দিয়ে মুখ কুলকুচি করলে দাঁতের ব্যথা তো কমেই, সঙ্গে সংক্রমণের প্রকোপ কমতেও সময় লাগে না।
২| ত্বকের যত্নেও নাকি এই প্রাকৃতিক উপাদানটি নানাভাবে কাজে আসে?
দু’চামচ করে নয়নতারা গাছের পাতা, নিম পাতা এবং হলুদ নিয়ে ভাল করে বেটে একটা পেস্ট (Nayantara Patar Upokarita) তৈরি করে ফেলতে হবে। এবার সেই মিশ্রণটি সারা মুখে লাগিয়ে মিনিট দশের অপেক্ষা করে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে বার তিনেক এই পেস্ট মুখে লাগালে ব্রণর প্রকোপ তো কমবেই, সঙ্গে দাগ-ছোপও দূর হবে। বাড়বে ত্বকের জেল্লাও।
আরও পড়ুন: রূপচর্চায় ফুলের থেরাপি
৩| পোকা কামড়ালে সেখানেও নয়নতারা গাছের পাতা লাগালে কি উপকার মেলে?
এক্ষেত্রে কয়েকটা পাতা নিয়ে ভাল করে বেটে একটা পেস্ট তৈরি করে ফেলতে হবে। এবার সেই পেস্টটা যেখানে পোকা কামড়েছে, সেখানে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলেই জ্বালা-যন্ত্রণা কমে যাবে।
Picture Courtesy: Wikipedia
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এগুলোও আপনি পড়তে পারেন
বাথরুম সাজানোর জন্য এই গাছগুলো রাখতে পারেন
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!